এমনিতে স্বাস্থ্যসম্মত ডায়েট মেনে চললেও ভ্রমণে বেরিয়ে আমরা প্রায়ই এর রাশ আলগা করে ফেলি। এ সময় সঠিক খাদ্য গ্রহণ না করে উল্টাপাল্টা খেলে অসুস্থতা দেখা দিতে পারে, ঘুরতে-ফিরতে গেলে আসতে পারে ক্লান্তি।
যেকোনো পর্যটনস্থানে চা, কফি বা কোল্ড ড্রিংকসের মতো পানীয় পাওয়া সুবিধাজনক হয়। তবে উচ্চ ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলাই ভালো। এতে ডিহাইড্রেশন হতে পারে। এটি শরীরের সিস্টেমের ভারসাম্য নষ্ট করে অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। একই সঙ্গে কেক, পেস্ট্রি বা কুকির মতো অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার আর পানীয় এড়িয়ে চলাই ভালো। এতে অতিরিক্ত ক্যালরি বাড়ার সম্ভাবনা থাকে।
ভ্রমণে যখনই বমিভাব কিংবা ভ্রমণজনিত অস্বস্তি হবে, তখনই অল্প কিছু মৌরি মুখে পুরে দিলে মুশকিল আসান হবে। অনেকেই খাবারের পরে পরিপাকে সহায়ক হিসেবে মৌরি খেয়ে থাকেন। তাই ভ্রমণের সময় অবশ্যই সঙ্গে একটি ছোট কৌটায় মৌরি নিলে ভালো।
ভ্রমণে অনেকেই চিপস বা জাংক ফুড সঙ্গে রাখেন। যেকোনো ধরনের প্রক্রিয়াজাত খাবারই শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। আর ভ্রমণে তো একেবারেই এসব খাওয়া যাবে না। এ জাতীয় খাবারের পুষ্টিগুণ শূন্যের কোঠায় থাকে। এগুলোর অস্বাস্থ্যকর চর্বিযুক্ত উপাদান পেট এবং অন্যান্য সমস্যার কারণ হতে পারে। তাই স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস সঙ্গে নিতে হবে। ফাইবার ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার বেছে নিলে ভালো। এ ক্ষেত্রে ভ্রমণে নানা ধরনের বাদাম রাখা যায়।
প্রাত্যহিক দিনের মতো ভ্রমণের দিনগুলোতেও সকালের নাশতা বাদ দেওয়া যাবে না। ক্ষুধা শুধু আমাদের ক্লান্তই করে না, বিরক্তিও জাগায়। সকালের খাবার সারা দিনের শক্তির অন্যতম জোগানদাতা। ঘোরাঘুরির ব্যস্ততায় অনেকেই খাবার না খেয়েই বেরিয়ে পরেন। ক্ষুধা পেটে কোনো কিছুই ভালো লাগে না। সকালের নাশতা পুষ্টির পাশাপাশি ভ্রমণকে উপভোগ করার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি দেবে।
এই গরমে শরীর সবচেয়ে বেশি পানিশূন্যতায় ভোগে। আর এ সময় ভ্রমণে বের হলে এমনিতেই প্রচুর ঘাম হয়। তাই সঙ্গে পানির বোতল রাখা ভালো। ভ্রমণের সময় আমাদের দৈনন্দিন রুটিন ব্যাহত হয়। তাই খেয়াল করতে হবে, শরীর তার মৌলিক চাহিদাগুলো পাচ্ছে কি না। পানি ছাড়াও ডাবের পানি ও লেবুপানির (কম চিনি দিয়ে) মতো প্রাকৃতিক পানীয় সঙ্গে রাখলে উপকার হবে। আর যদি কোনো ঠান্ডা জায়গায় ভ্রমণ করতে যাওয়া হয়, তাহলে যেকোনো ভেষজ চা সঙ্গে নেওয়া যায়।
ভ্রমণের স্থানে যাওয়ার আগে সেই স্থান সম্পর্কে ধারণা নিয়ে রাখা ভালো। সেভাবে করতে হবে পরিকল্পনা। সেখানে পৌঁছে আর ভ্রমণের দিনগুলোতে কোথায়, কখন, কী খাওয়া যায়, সেটার একটা প্ল্যান করে ফেললে ভালো। বিকল্প কিছুর পরিকল্পনাও রাখতে হবে। বাড়ি থেকে যেসব খাবারগুলো নেওয়া হয়েছে, সেটার একটা তালিকা তৈরি করলে নিজের জন্যই ভালো হবে। এতে ভ্রমণে গিয়ে সময় অনেকটা বেঁচে যাবে।
ছবি: হাল ফ্যাশন ও পেকজেলসডটকম