একদিনে পাহাড় আর ঝরনা দেখার জন্য ঢাকা থেকে চার ঘণ্টার দূরত্বে মিরসরাই রেঞ্জে রয়েছে দারুণ কিছু জায়গা। রোমাঞ্চপ্রিয় অনেকেই চলে যান এমন জায়গায় ছুটির দিনে। কিন্তু বৃষ্টির এই মৌসুমে তা কিন্তু বিপত্তি ঘটাতে পারে। গত সপ্তাহে যাওয়া হলো মিরসরাইয়ের বারৈয়াডালা জাতীয় উদ্যানের কমলদহ ট্রেইলে।
ভোর ৫টা ৩০ মিনিটে রওনা দিই। কুমিল্লা থেকেই শুরু হয় ঝুম বৃষ্টি। ফেনী হয়ে বড় দরগার হাট-বাজারে যখন পৌঁছাই, তখন মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে। এর মধ্যেই জানতে পারলাম, গত তিন দিনের বৃষ্টিতে পাহাড়ি ঢল নামায় ফ্লাশ ফ্লাড বা হরকা বান হচ্ছে, তাই যাওয়া বিপজ্জনক। তা-ও খানিকটা ঝুঁকি নিয়েই কাঁটা গাছে ভরা উঁচু টিলার জংলি পথেই রওনা দেওয়া হলো দল বেঁধে।
বাঁয়ের পথে মূল ট্রেইল আর একটা অফ ট্রেইল দিয়ে হাঁটা শুরু আঁকাবাঁকা পিচ্ছিল পথে অভিযান করেই আমরা পৌঁছে যাই আপার স্ট্রিমের ছাগলকান্দা ঝরনায়। এমনিতে বর্ষার মৌসুম ছাড়া আপাতদৃষ্টে এদিকের সব ট্রেইল সহজ ও সুন্দর। কিন্তু পাহাড়ি ফ্লাশ ফ্লাডে অন্য রূপ নেয় এই জায়গা, যেমন দেখতে পাচ্ছেন। সেখানে বসেই প্রকৃতির অফুরন্ত প্রাণশক্তিতে অবগাহন করে নেমে এলাম রূপসী ঝরনার দিকে, ফেরার পথে বুকসমান ঝিরিপথ পাড় হয়ে।
রীতিমতো স্রোতের তোড়ে ভেসেই যাচ্ছিলাম, তা-ও অবশেষে ফিরলাম রেললাইনের ধারে আমাদের গাড়ির কাছে। মিরসরাইয়ে ট্রেইলগুলোর বিশেষত্ব হলো, যাওয়ার পথেই পড়বে রেললাইন। সারা দিনের ট্রেকিংয়ের পর দুপুরের খাবার খেলাম মোবাশ্বেরা তাইব বিরিয়ানি হাউসে। এখানকার রান্না এত ভালো ছিল যে সেটা উল্লেখ করতেই হলো। যাক, এবার ফেরার পালা।
তার আগে বলে দিই, টানা বর্ষণে পার্বত্য চট্টগ্রামে বন্যাপরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে অনেক এলাকা। চট্টগ্রাম, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ির প্রতিটি ঝরনায় ফ্লাশ ফ্লাড হচ্ছে, তাই দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে ভ্রমণ সবার জন্যই ঝুঁকির।
এই মুহূর্তে বরং ছুটির দিনে প্রিয় মানুষকে নিয়ে ভালো কোনো মুভি দেখতে পারেন, শহরের কোনো ইভেন্টে যেতে পারেন, বা হাল ফ্যাশন থেকে কোনো একটা রেসিপি ট্রাই করা যেতেই পারে। ছুটির দিন কাটানোর দারুণ সব পরামর্শের জন্য চোখ রাখুন হাল ফ্যাশনে।