বাবাকে দিন চমকে দেওয়া উপহার
শেয়ার করুন
ফলো করুন

বাবার জন্য বাবা দিবসে উপহার কিনতে গিয়ে সেই একই পাঞ্জাবি, শার্ট, বাবা লেখা মগের আবর্তে ঘুরছি আমরা। অথচ একটু বুদ্ধি খাটিয়ে আর বাবার পছন্দ-অপছন্দগুলো পর্যবেক্ষণ করে একেবারে অন্য রকম কিছু পরিকল্পনা করা যায় বাবা দিবস উপলক্ষে। তেমনই কিছু উপহারের দিকে চোখ ফেরানো যাক এবার।

আমরা সবাই চাই নিজেকে সুন্দর ও পরিপাটি করে রাখতে। বাবার জন্য তাই একটি ট্রিমার উপহার হিসেবে কিনে দিলে বাবারা নিজেরাই নিজেদের মতো করে স্টাইল করতে পারবেন দাড়ি। ছেঁটে-কেটে গুছিয়ে রাখা পরিচ্ছন্ন চুল-দাড়িতে তাঁর মনটাও থাকবে ফুরফুরে। আবার ঝড়–বাদল আর রাস্তার ভিড় ঠেলে রোজ হাঁটতে যেতে কতই–না কষ্ট হয় বাবার। এদিকে হয়তো চিকিৎসকের কড়া আদেশ হাঁটার। একটি ট্রেডমিল হলে হাঁটাহাঁটির ব্যাপারটি অত্যন্ত সুবিধাজনক হবে তাঁর জন্য।

বিজ্ঞাপন

বাবারা মুখ ফুটে না বললেও তাঁদের অনেকেরই আছে বিভিন্ন শখের বিষয়। হতে পারে তা ফটোগ্রাফি, ছবি আঁকা, গান শোনা, বাগান করা—এমনকি রান্নাও। একটু খেয়াল করলে হয়তো জানা যাবে, বাবার নিজের খুব শখ থাকলেও একটা ভালো ক্যামেরা কেনা হয়নি সংসার সামলে। ভালো ক্যামেরা তো বটেই, আজকাল অনেক স্মার্টফোন বিশেষভাবে ছবি তোলার জন্য অত্যন্ত উপযোগী করে তৈরি করা। বাবার জন্য কেনা যেতে পারে এমন একটি ক্যামেরা বা ফোন। অনেক ফোনে গান শোনার দারুণ ব্যবস্থা আছে। এমন একটি স্মার্টফোন নেওয়া যেতে পারে গানের শৌখিন বাবার জন্য। ভিনাইল রেকর্ড বাজানোর আধুনিক টার্ন টেবলও একটি চমকপ্রদ উপহার হতে পারে। পড়ার অভ্যাস থাকলে তাঁর জন্য কেনা যায় কিন্ডলজাতীয় কোনো ই-রিডার।

লেখালেখি করতে ভালোবাসেন অনেকেই। অবসরজীবনে অনেকেই লেখালেখি করে সময় কাটান, আবার কোনো বাবার কাছে তা অত্যন্ত প্রিয় শখ। চমৎকার সব ফাউন্টেন পেন এমনকি ফেদার পেন, কুইল পেন ও ডিপ পেন কিনে দেওয়া যায় বাবাকে। ক্যালিগ্রাফির উপযোগী সব সেটও আছে বাজারে। সঙ্গে থাকুক খুব সুন্দর মলাটে বাঁধাই করা নোটবুক ও খাতা। বাবার আঁকার শখ থাকলে কিনে দেওয়া যেতে পারে আঁকার যাবতীয় সরঞ্জাম।

বিজ্ঞাপন

বাবা দিবসের উপহার যে সব সময় মোড়কে মোড়ানো জিনিসই হবে, তা কিন্তু নয়। কোনো সারপ্রাইজ আনন্দ-আড্ডার পরিকল্পনা করা যায় বহুদিন দেখা নেই বাবার এমন সব বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে। মা-বাবার জন্য তাঁদের পছন্দের রেস্তোরাঁয় একান্ত নৈশভোজের ব্যবস্থা, মুভি টিকিট, থিয়েটারের টিকিট—এমনকি কোনো ট্রিপও প্ল্যান করা যায় উপহার হিসেবে। আবার ফিটনেস-প্রীতি থাকলে ইয়োগা সেন্টার, সুইমিং পুল বা জিমে যাওয়ার বাৎসরিক মেম্বারশিপও হতে পারে খুব উপযোগী উপহার।

প্রচলিত বিশ্বাসের বিপরীতে হাঁটলেও অনেক বাবাই রান্নায় যেমন উৎসাহী, তেমন সিদ্ধহস্ত। তাঁদের পছন্দের খাদ্য উপকরণগুলো ঝুড়িতে সুন্দর করে সাজিয়ে একটি ব্যতিক্রমী উপহার দেওয়া যায়। এ ছাড়া কিচেন নাইফ সেট, গরম পানির কেটলি বা টোস্টারের মতো কিচেন গ্যাজেট কেনা যায়। বাবা যদি কফির ব্যাপারে শৌখিন হন, তবে রোস্টেড কফি বিন আর কফিমেকার দিলেও দারুণ হবে।

এভাবে গতানুগতিক উপহার না দিয়ে বিভিন্ন সুচিন্তিত পরিকল্পনা করা যায় বাবা দিবস উপলক্ষে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হচ্ছে, বাবার জন্য সবচেয়ে বড় উপহার তাঁর সন্তানের সঙ্গে কাটানো সুন্দর সময়। তাই ঘরোয়া পরিবেশে পরিবারের সবার প্রিয় খাবার আয়োজন করে, গান-গল্প-আড্ডায়, পারিবারিক ছবির অ্যালবাম খুলে অথবা লুডু-ক্যারমের হইচই আসর বসিয়েও বাবা দিবসটি স্মরণীয় করে রাখা যায় অনায়াসে। পৃথিবীর সব বাবা ভালো থাকুক।

ছবি: পেকজেলসডটকম

প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২২, ০৮: ৫৬
বিজ্ঞাপন