মানুষ সঠিক উপায়ে ও সঠিক পরিমাপে পানি পান না করলে অনেকগুলো সমস্যা শরীরে দেখা দেবে। সেই সঙ্গে বোনাস, ফ্রি হয়েও কয়েকটি সমস্যা চলে আসবে। দেহে পানির অভাব দেখা দিলে নানা শারীরিক সমস্যা হয়। শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না গেলে পানিশূন্যতার আশঙ্কা থাকে। এতে মানবদেহের শারীরবৃত্তীয় কার্যকলাপ ব্যাহত হতে পারে। শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, বিশেষ করে ত্বক, চুল—সব ক্ষেত্রেই পানির ভূমিকা অপরিসীম।
• মূত্রের পরিমাণ কমে যাওয়া, মূত্রের রং গাঢ় হলুদ হওয়া ও মূত্রত্যাগের সময় জ্বালা ভাব অনুভূত হওয়া। দীর্ঘদিন এভাবে চললে মূত্রে সংক্রমণ হবে।
• ত্বকের উজ্জ্বলতা হ্রাস পাবে, ত্বকের ঔজ্জ্বল্য হারিয়ে যাবে, ব্রণ হতে শুরু করবে।
• পানির ঘাটতির জন্য মাথা ধরা, ক্লান্তিভাব দেখা দেবে। এ ছাড়া মনঃসংযোগের অভাব ও বিরক্তিবোধও দেখা দেবে।
• মুখে দুর্গন্ধ হয়, মুখের ভেতরের ব্যাকটেরিয়ার মাত্রা অনেকটাই বেড়ে যায়।
• পেটের সমস্যা হবে।
• লিভার পানির সাহায্যে গ্লাইকোজেন তৈরি করে, যা শরীরে এনার্জি জোগায়, কিন্তু আমাদের শরীরে পানির অভাব দেখা দিলে লিভার ঠিকমতো কাজ করে না।
• পানি কম পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দিতে পারে। কোলন পানি শোষণ করে এবং এখানেই শরীরের কঠিন বর্জ্য জমা থাকে। শরীর মল থেকে পানি শোষণ করে নেয়, ফলে মল কঠিন হয়ে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়।
• পানি কম পান করলে শরীর থেকে ওই বিষাক্ত পদার্থগুলো বেরোতে পারে না। ফলে রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও দুর্বল হতে শুরু করে, তাই ঘন ঘন অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা অনেকটাই বেড়ে যায়।
মানুষের চাহিদা অনুযায়ী পানি পান করতে হবে। আমাদের জলবায়ু অনুযায়ী সাধারণত একজন স্বাভাবিক মানুষের আড়াই লিটার পানির চাহিদা থাকে। কায়িক পরিশ্রম থাকলে একটু বেশি পান করার প্রয়োজন হয়।
• আপনি সকালে ঘুম থেকে উঠে কমপক্ষে ৬০০ মিলি বা তিন গ্লাস পানি পান করবেন একবারে। এরপর এক ঘণ্টার মধ্যে কোনো কিছু না খাওয়া উত্তম।
• সারা দিন বাকি পানি পান করতে হবে। তবে এক গ্লাস পানি ঢক ঢক করে পান না করে ধীরে ধীরে পান করলে শরীরে পানিশূন্যতা থাকবে না।
• খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পানি পান করবেন না। বরং খাওয়ার আধা ঘণ্টা পর পানি পান করবেন। তাতে হজম ভালো হবে।
• চা পান করলে আগে একটু পানি পান করে নিন। চা আমাদের শরীর থেকে পানি বের করে দেয়।
• রাতে পানি কম পান করবেন, তাতে মূত্রনালি ও কিডনি ভালো থাকবে।
• অনেকেই অতিরিক্ত পানি পান করেন, অথচ সেটাও ক্ষতিকর।
লেখক: খাদ্য, পথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ