২০ পেরোলেই যেভাবে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও লাইফস্টাইল গড়ে তুলবেন
শেয়ার করুন
ফলো করুন

পৃথিবীতে উচ্ছল তরুণ প্রজন্মের সুস্থতা নিশ্চিত করতে লাইফস্টাইল বা রোজকার জীবনযাপন হতে হবে স্বাস্থ্যকর ও বিজ্ঞানসম্মত। রোজকার খাদ্যতালিকায় থাকতে হবে পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ খাবার এবং ফিটনেস ধরে রাখার জন্য চাই সঠিক ব্যায়াম। তবে এ জন্য সবার আগে নির্ণয় করতে হবে বিএমআই বা বডি মাস ইনডেক্স।

বিএমআইয়ের জন্য কিলোগ্রামে শরীরের ওজন ও মিটারে শরীরের উচ্চতা নিয়ে, ওজনকে উচ্চতা দিয়ে ভাগ করতে হয়। অনেকে মনে করেন এটা নিছক একটি অঙ্ক। অনেকে ভাবেন এত জটিল কেন হিসাবটা? বলে রাখা দরকার, বিএমআই হলো একটি অনুপাত, যা আপনাকে ধারণা দেবে আপনি মোটা, স্বাভাবিক নাকি রোগা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সূত্র অনুযায়ী, আপনি যদি আপনার ওজনকে উচ্চতার বর্গ দিয়ে ভাগ করেন, তাহলে প্রাপ্ত ভাগফলটি আপনার বিএমআই। এশিয়ার জনসংখ্যার জন্য বিএমআই ২৬ থেকে ২৯-এর মধ্যে থাকাটা সুস্বাস্থ্য হিসেবে বিবেচিত হয়। যাঁদের বিএমআই ৩০-এর ওপরে, তাঁদের স্থূল বা মোটা বলা যায় এবং তাঁরা নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকির ভেতরে রয়েছেন। যাঁদের বিএমআই ২২-এর নিচে, তাঁরা আজ থেকেই ভালো ভালো খাবার খেতে শুরু করুন, কারণ আপনার স্বাস্থ্যহীনতা আপনার জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।

বিজ্ঞাপন

বিএমআই মেপে রোজকার খাদ্যাভ্যাস এবং ফিটনেসের প্রতি সজাগ হলে তরুণ প্রজন্ম থাকতে পারে সুস্থ, সবল ও নিরোগ।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, স্বাস্থ্যগত নানা জটিলতার সঙ্গে ওজনাধিক্যের রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। যাঁদের ওজন বেশি, অর্থাৎ যাঁরা ওজনাধিক্য কিংবা স্থূলতায় ভুগছেন তাঁদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্‌রোগ, অস্টিওপোরেসিসসহ নানা অসুখ হওয়ার আশঙ্কা থাকে, যা নারীদের জন্য আরও প্রকট আকার ধারণ করে। পক্ষান্তরে কারও ওজন যদি খুব কম থাকে, তবে সে সব সময় দুর্বল ও ক্লান্তবোধ করে, তার রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও কম থাকে।

এসব বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে প্রত্যেক মানুষের সুস্থ, স্বাভাবিক ও কর্মক্ষম জীবনলাভের জন্য একটি সঠিক ওজন জরুর। প্রত্যেক মানুষ বিএমআই মেপে রোজকার খাদ্যাভ্যাস করলে তা অত্যন্ত সুফল দিতে পারে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত শর্করাজাতীয় খাদ্য যেমন ভাত, রুটি, পোলাও, নুডলস, বিরিয়ানির মতো খাবারগুলো একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি হওয়া উচিত নয়। কখনো বেশি খাওয়া হয়ে গেলে সেটা কায়িক পরিশ্রম এবং ব্যায়ামের মাধ্যমে ঝরিয়ে ফেলতে হবে।

বিজ্ঞাপন

রোজকার খাদ্যতালিকায় যোগ করতে হবে সুষম খাবার। খাদ্যের প্রধান ছয়টি উপাদানই যেন শরীর পায়, সেটা খেয়াল রাখা খুব জরুরি।

রঙিন শাকসবজি, ফলমূলে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি উপাদান এবং আঁশ, যা কিনা শরীরকে সুস্থ রাখে এবং পেট মন দুটোই ভরায়। রোজ পান করতে হবে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পরিষ্কার নিরাপদ পানি। পানিজাতীয় ফলমূল যেমন তরমুজ, বাঙ্গি, আনারস ইত্যাদি খেলে একই সঙ্গে পুষ্টি ও পানির চাহিদা দুটোই মেটে।

তরুণেরা প্রায়ই আড্ডায়, বন্ধুদের সঙ্গে মিলনমেলায় একত্র হয়ে প্রচুর খাওয়াদাওয়া করেন। কিন্তু ওই সময়ে তাঁরা যদি একটু সচেতন হয়ে নিজের প্রয়োজনীয় খাদ্য গ্রহণ করেন এবং অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার অভ্যাস গড়ে তোলেন, তাহলে খুব চমৎকার ব্যাপার হবে। সব ধরনের খাবারই খাওয়া হোক, তবে সেটা পরিমাণ বুঝে। বাইরের খাবারের চেয়ে ঘরে তৈরি খাবার খাওয়ার বিষয়ে আগ্রহ তৈরি করতে হবে। প্রতিটি খাদ্য উপাদান যেন শরীর ঠিক ঠাক পায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

ইদানীং তরুণদের মধ্যেও বাড়ছে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের মাত্রাসহ আরও নানান রকম জটিল সব অসুখ। এসবের জন্য রোজকার খাদ্যাভ্যাস এবং অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন অনেকখানি দায়ী।
আজকের তরুণ প্রজন্মই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ কান্ডারি। তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাবে দেশ। তাই একটি সুস্থ, সবল, নিরোগ, কর্মঠ, উজ্জ্বল তরুণ প্রজন্ম তৈরি হওয়ার জন্য চাই সঠিক লাইফস্টাইল।

ছবি: সাইফুল ইসলাম ও পেকজেলসডটকম

প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২৩, ২২: ৩০
বিজ্ঞাপন