স্বাস্থ্য ও ফিটনেস কোচ থিও বার্গম্যান সম্প্রতি তাঁর ইনস্টাগ্রাম ভিডিওতে বলেছেন, ‘কফির সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো এর উচ্চ মাত্রার অ্যাসিডিটি।’ কফি বা যেকোনো ক্যাফেইনজাতীয় পানীয়, শরীরে অ্যাসিডের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। শরীর এই অতিরিক্ত অ্যাসিডকে কমাতে ক্যালসিয়ামের সাহায্য নেয়। কিন্তু বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ মানুষের শরীরে স্বাভাবিক ক্যালসিয়ামের ঘাটতি রয়েছে। ফলে, শরীর বাধ্য হয়ে হাড় এবং দাঁত থেকে ক্যালসিয়াম সংগ্রহ করতে শুরু করে। যার ফলাফল হতে পারে:
• হাড়ের ভঙ্গুরতা (অস্টিওপোরোসিস)
• দাঁতের ক্ষয়
• সময়ের আগেই দাঁত পড়ে যাওয়া
থিও আরও বলেন, ‘প্রতিদিন কফি খাওয়া মানে ধীরে ধীরে দাঁত হারানোর সম্ভাবনা তৈরি হওয়া।’
শুধু দাঁত বা হাড়ই নয়, থিওর মতে কফি অতিরিক্ত পরিমাণে শরীরকে ডিহাইড্রেট করে এবং ত্বকের বয়স বাড়িয়ে তোলে। পানি হারানোর কারণে শরীরের কোষগুলো দুর্বল হয়, ফলে ত্বক মলিন ও বলিরেখায় দেখা দিতে পারে।
থিওর দাবির সত্যতা পাওয়া যায় ২০১৮ সালের নেচার ডট কম নামের স্বাস্থ্য বিষয়ক এক জার্নালের গবেষণায়। গবেষণাটি করা হয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়ার প্রাপ্তবয়স্ক এক দল মানুষকে নিয়ে। যার ফলাফলে বলা হয়। দৈনিক কফি পান করার সঙ্গে দাঁত হারানোর সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে।
সুতরাং, শুধু থিওর ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণই নয়, বৈজ্ঞানিকভাবেও প্রমাণিত– অতিরিক্ত কফি আমাদের দাঁতের ক্ষতি করতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, একেবারে কফি ত্যাগ করার প্রয়োজন নেই, তবে কিছু সতর্কতা মেনে চলা উচিত:
• প্রতিদিন ১-২ কাপের বেশি না খাওয়া
• কফি খাওয়ার পর ভালোভাবে মুখ ধোয়া
• পর্যাপ্ত পানি পান করা, যাতে ডিহাইড্রেশন না হয়
• নিয়মিত দাঁতের যত্ন (ব্রাশিং, ফ্লসিং, ডেন্টাল চেকআপ) বজায় রাখা
• ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া (যেমন শাক-সবজি, বাদাম, মাছ ইত্যাদি)
কফি আমাদের অনেকের প্রিয় সঙ্গী, তবে এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরি। অতিরিক্ত কফি একদিকে যেমন দাঁতের ক্ষয় এবং দাঁত হারানোর ঝুঁকি বাড়ায়, অন্যদিকে ত্বক ও হাড়ের বার্ধক্য প্রক্রিয়াকেও ত্বরান্বিত করে। তাই স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
সূত্র: নেচার ডট কম, ফিটনেস কোচ থিও বার্গম্যানের ইনস্টাগ্রাম
ছবি: পেকজেলসডটকম