টিভির সামনে বসলে, বন্ধুদের আড্ডায় গেলে, এমনকি মাঝরাতের স্ন্যাকস হিসেবেও অত্যন্ত প্রচলিত ও জনপ্রিয় বিভিন্ন রকমের প্যাকেটজাত চিপস। সঙ্গে থাকে বোতলজাত কোমল পানীয়। বাজার, পাড়ার দোকান, অনলাইন কিংবা সুপারশপ—সব জায়গায় খুব সহজেই পাওয়া যায় প্রক্রিয়াজাত এসব খাবার। অন্যদিকে এগুলোর ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে সব সময়ই চলে আলোচনা। কিন্তু সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, স্মৃতিশক্তিকেও মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে পারে এসব অস্বাস্থ্যকর খাবার ও পানীয়।
নিউরোলজি জার্নালে প্রকাশিত একটি নতুন গবেষণা অনুসারে, চিপস, নোনতা স্ন্যাকস, কোল্ড ড্রিংকসের মতো উচ্চপ্রক্রিয়াজাত খাবার আমাদের মনে একধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। প্রক্রিয়াজাত এই খাবারগুলো স্মৃতিশক্তির ওপরও খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকি অধিক প্রক্রিয়াজাত এসব খাবার ঘন ঘন খেলে ও পান করলে বয়সকালে স্মৃতিশক্তি কমে গিয়ে ডিমেনশিয়া হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
গবেষণা কী বলে
চীনের তিয়ানজিন মেডিকেল ইউনিভার্সিটির গবেষক হুইপিং লি বলেন, ‘আমাদের এই গবেষণা শুধু ডিমেনশিয়ার ঝুঁকিসংক্রান্ত নয়। এখানে বরং কীভাবে এটি হ্রাস করা যায়, সে উদ্দেশ্যে কাজ করা হয়েছে।’ এই গবেষণার জন্য যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী ৫ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য তথ্যসংবলিত ডেটাবেজ থেকে ৫৫ ও তার বেশি বয়সের ৭২ হাজার ৮৩ জনকে চিহ্নিত করা হয়। গবেষণার শুরুতে তাঁদের ডিমেনশিয়া ছিল না। টানা ১০ বছর ধরে তাঁদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকা অনুসরণ করে এ গবেষণার জন্য তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
উল্লেখ্য অতিপ্রক্রিয়াজাত খাবারে চিনি, চর্বি ও লবণ বেশি থাকে; প্রোটিন ও ফাইবার থাকে খুব কম। এসব ক্ষতিকর খাবারের মধ্যে রয়েছে চিপস, কোমল পানীয়, লবণাক্ত ও চিনিযুক্ত স্ন্যাকস, আইসক্রিম, সসেজ, ডিপ ফ্রায়েড চিকেন, ফ্লেভার দেওয়া দই, টিনজাত বেকড বিনস ইত্যাদি।
গবেষণার ফলাফল
১০ বছর পর দেখা যায়, ৫১৮ জনের মধ্যে ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশ দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন কত গ্রাম অতিপ্রক্রিয়াজাত খাবার তাঁরা খেয়েছেন, সে হিসাবের সঙ্গে ডিমেনশিয়া হবার গভীর যোগসূত্র পেয়েছেন গবেষকেরা। সবচেয়ে বেশি, অর্থাৎ দিনে প্রায় ২৮ শতাংশ খাবারই যাঁদের চিপসের মতো উচ্চপর্যায়ের প্রক্রিয়াজাত, তাঁরাই ১০ বছর শেষে স্মৃতিভ্রংশের স্বীকার হয়েছেন সবচেয়ে বেশি।
ছবি: পেকজেলসডটকম