ডায়েট করার এখনই সময়
শেয়ার করুন
ফলো করুন

বছরের এ সময়টা ডায়েট করার জন্য সবচেয়ে উপযোগী। কারণ, রোজা শেষ, ঈদ শেষ, বিয়ে বা দাওয়াত নেই। আবার এখন পিকনিক বা ভ্রমণেরও সময় নয়। যাঁরা ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য ডায়েট করতে চান, তাঁদের জন্য বছরের এ সময়টা হতে পারে সবচেয়ে কার্যকর। তাই ওজন কমাতে চাইলে আজ থেকে শুরু করে দিন। আদর্শ ওজন নির্ভর করে দেহের উচ্চতা, বয়স ও লিঙ্গের ওপর। এ ছাড়া পেশা ও শারীরিক সমস্যাগুলো বিবেচনা করতে হবে। তাই আদর্শ ওজন কত এবং কী গতিতে ওজন কমাতে হবে, তা প্রত্যেকের জন্য আলাদা। তবে ডায়েট করার কিছু সাধারণ নিয়ম আছে, যা সবার জন্য প্রযোজ্য। এখানে শুধু ওজন কমানোর জন্য ডায়েট করার নিয়মগুলো বলছি।

সবার আগে প্রয়োজন মানসিক প্রস্তুতি। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার মানসিক বল থাকতে হবে। যেকোনো পরিস্থিতিতে নিজের যত্ন নিতে হবে ও স্বাস্থ্যকর খাদ্য নির্বাচন করতে হবে। ডায়েট কিছুদিন করে ছেড়ে দিলে হবে না। আদর্শ ওজনে না পৌঁছানো পর্যন্ত ধরে রাখতে হবে। নিয়মিত সুষম ও বৈচিত্র্যপূর্ণ খাদ্য গ্রহণ করা প্রয়োজন।

বিজ্ঞাপন

এরপর প্রয়োজন সময়মতো খাদ্য গ্রহণ। সারা দিনের খাবারকে সুবিধা অনুযায়ী চার ভাগ বা তার বেশি ভাগে ভাগ করে নেওয়া। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। প্রতিদিন একই সময়ে, একই পরিমাণে, একই রকম খাবার খাওয়ার অভ্যাস করা প্রয়োজন। অতি ভোজন ও অনাহার বর্জনীয়।

এবার নির্ধারণ করুন কখন কী খাবেন। দিনে ২–৩ বার প্রধান খাবার খাবেন, বাকি সময়গুলো হালকা খাবার। প্রধান খাবার হলো বিভিন্ন রকম শস্যজাতীয় খাবার; যেমন ভাত, রুটি, চিড়া, মুড়ি, ওটস ইত্যাদি। সঙ্গে প্রোটিনজাতীয় খাবার; যেমন মাছ, মাংস, ডিম বা ডাল ও অবশ্যই মৌসুমি শাকসবজি। হালকা খাবারে থাকতে পারে ননিবিহীন দুধ বা টক দই, বিভিন্ন রকম বাদাম, মৌসুমি ফল, চিনি ছাড়া চা বা কফি ইত্যাদি।

বিজ্ঞাপন

এখন ঠিক করতে হবে, কোন খাবার কতটুকু বা খাবারের পরিমাণ নির্ধারণ। এ ক্ষেত্রে শস্যজাতীয় খাবার হবে প্লেটের অর্ধেক বা তার কম, শাকসবজি থাকবে সমপরিমাণ বা এর বেশি। মাঝারি আকারের এক টুকরা মাছ–মাংস বা একটি ডিম অথবা একটু ঘন ডাল। রান্নায় তেলের ব্যবহার যথাসম্ভব কম করতে হবে। যেমন ডিম সেদ্ধ, বেগুন বা পেঁপে ভর্তা, মাছ-মাংস কম তেলে রান্না বা ভর্তা করা যেতে পারে। প্রতিদিন কমপক্ষে দুটি মৌসুমি ফল, একটু শাক, দুই কাপ সবজি গ্রহণ করুন।

সবশেষ হলো পর্যাপ্ত পানি পান করা, নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করা ও ঘুমানো। প্রতিদিন ২ থেকে সাড়ে ৩ লিটার বিশুদ্ধ পানি পান করুন। কোমল পানীয়, কৃত্রিম জুস বা চা-কফির পরিবর্তে ডাবের পানি বা টাটকা ফলের রস পান করা পুষ্টিসম্মত।

দৈনিক কমপক্ষে ৩০-৪৫ মিনিট শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করা উচিত। সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য দৈনিক ৬-৮ ঘণ্টা সুনিদ্রার অভ্যাস করুন। তবে খাবার গ্রহণের পরপরই ঘুমানোর অভ্যাস পরিহার করুন।

যেসব খাবার সম্পূর্ণ নিষেধ

চিনি বা গুড় দিয়ে তৈরি করা সব রকম মিষ্টি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার, বেকারির খাবার, ডুবোতেলে ভাজা খাবার, গরু–খাসির চর্বি বা ঘি, মাখন, ডালডা, চিপস, বিস্কুট, কোমল পানীয় ইত্যাদি।

বিশেষ দ্রষ্টব্য

এই নির্দেশনা প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রযোজ্য। শিশু, বৃদ্ধ, গর্ভবতী, স্তন্য দানকারী মা বা কোনো রোগের (যেমন ডায়াবেটিস, কিডনি সমস্যা, হৃদ্‌রোগ ইত্যাদি) চিকিৎসাকালে প্রযোজ্য হবে না। তবে ডায়েট করার আগে অভিজ্ঞ ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

লেখক: প্রত্যয় মেডিকেল ক্লিনিক, বারিধারা।

ছবি: পেকজেলসডটকম

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৪, ০০: ৫৭
বিজ্ঞাপন