ওয়েট লস বা ওজন কমানোর প্রক্রিয়ায় মাঝেমধ্যে হতাশাজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়। দেখা যায়, ওজন কমা একপর্যায়ে এসে থেমে গেছে আর কমছে না। এ সময় হতাশ হয়ে অনেকে ডায়েট অনুসরণ করা ছেড়ে দেন এবং আগের জায়গায় ফেরত চলে যান।
ওজন কমা বন্ধ হয়ে যাওয়া বা একটা জায়গায় আটকে যাওয়াকে ডায়েটের ভাষায় বলা হয় ‘ওয়েট প্লাট্যু’। এর ফলে ওজন দীর্ঘদিন এক জায়গায় আটকে থাকে। কমে না।
কেন হয় এই ওয়েট প্লাট্যু?
১) মেটাবলিজম ধীরগতির হয়ে গেলে এমন হতে পারে। হয়তো আপনি ওজন কমাতে গিয়ে ফ্যাটের বদলে পেশি ক্ষয় করে ফেলেছেন। ফলে হিতে বিপরীত হয়।
২) হরমোনের পরিবর্তন হলে এমন হতে পারে।
৩) কখনো শরীর পানি ধরে রাখতে শুরু করে। এ অবস্থাকে ওয়াটার রিটেনশন বলা হয়।
৪) ভালো ও পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ওজন কমে না অনেক সময়।
৫) এ ছাড়া প্রতিদিনের ক্যালরি গ্রহণ ও ক্যালরি ক্ষয় করার পরিমাণ এক হলে এ রকম হয়।
কীভাবে আবার ওজন কমাবেন
১) খাবারে শর্করার পরিমাণ কমিয়ে আনুন। মডারেট কার্ব বা লো কার্ব ডায়েট মেনে চলুন।
২) ব্যায়াম ও শারীরিক কসরতের মাত্রা ও পরিমাণ বাড়িয়ে দিন।
৩) আপনি যা যা খাচ্ছেন, চেষ্টা করুন তার হিসাব রাখার।
৪) শর্করার পরিমাণ কমিয়ে খাবারে প্রোটিনের পরিমাণ বৃদ্ধি করুন। 'প্লাট্যু'তে প্রোটিন গ্রহণ করলে তা ওজন কমার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে।
৫) চেষ্টা করুন স্ট্রেসমুক্ত থাকতে।
৬) ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং ট্রাই করুন। আগে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করে থাকলে চেষ্টা করুন ফাস্টিংয়ের সময় বাড়াতে। ১৬ ঘণ্টা থেকে ২০ ঘণ্টায় নিয়ে যান।
৭) ফাইবারজাতীয় খাবারের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন। চিয়া সিডস, ইসবগুলের ভুসি, তোকমা এ ক্ষেত্রে ভালো হতে পারে।
৮) প্রতিদিন অন্তত সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
৯) দিনে ২.৫-৩ লিটার পানি পান করার চেষ্টা করুন।
১০) চেষ্টা করুন যাতে যতটুকু সম্ভব সচল থাকা যায়।
এরপরও ওজন এক জায়গায় স্থির হয়ে থাকলে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিন।
লেখক: পুষ্টিবিদ, স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী, পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।