হাল ফ্যাশন ডেস্ক
জ্যাক মা, ইলন মাস্ক বা বিল গেটস কি আদৌ ঘুমান? সাফল্যের প্রতীক এই তিন বিখ্যাত বিজনেস টাইকুনের ব্যাপারে এমন প্রশ্ন জাগতে পারে স্বাভাবিকভাবেই। আলিবাবা, স্পেসএক্স, টেসলা আর মাইক্রোসফটের মতো বিশাল কোম্পানি সামলাতে তাঁদেরকে অভাবনীয় পরিশ্রম করতে হয়, সে কথা বলাই বাহুল্য। কিন্তু লক্ষ্যণীয় ব্যাপার হলো এ তিনজনই তাঁদের দৈনন্দিন রুটিনে রাতের ঘুমকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে থাকেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়।
আলিবাবা নামের ই-কমার্স সাইটটি একেবারে বিপ্লব এনে দিয়েছে অনলাইন কেনাবেচার জগতে। এই বিশাল কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ও সর্বেসর্বা জ্যাক মা কিন্তু দৈনন্দিন ঝুটঝামেলা আর দুশ্চিন্তাকে রাতের সুখনিদ্রায় ব্যাঘাত ঘটাতে দেন না। তিনি এমনও বলেন, কোনো কিছুই তাঁকে রাত জাগাতে পারে না। জ্যাক আসলে জানেন, ব্যবসায় চ্যালেঞ্জ থাকবেই, আর তা অতিক্রম করার জন্য প্রচেষ্টাও হতে হবে সর্বাত্মক। কিন্তু তা কখনোই পর্যাপ্ত ঘুমের দামে কেনা যাবে না। তিনি ২০১৯ সালের ইকোনমিক ফোরামে বলেছিলেন, ‘আমি জানি যে নির্ঘুম রাত কাটালেও সমস্যা নিজের জায়গায়ই থেকে যাবে। কিন্তু রাতে ভালো ঘুম হলে আমি সর্বশক্তি দিয়ে কাল তা সমাধানের চেষ্টা করতে পারব।’
ইলন মাস্ক সব সময়ই আলোচনায় আছেন। বহুমুখী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো তিনি দক্ষ হাতে চালিয়ে আসছেন সাফল্যের সঙ্গ। এক্স, স্পেস এক্স, টেসলা, নিউরালিংক ও দ্য বোরিং কোম্পানি—রীতিমতো জাগলিং করতে হয় ইলন মাস্ককে এই সবকিছু দেখে রাখতে। কিন্তু ইলন মাস্ক একটি ব্যাপারে একেবারেই আপসহীন। সেটা হলো রাতের ছয় ঘণ্টা ঘুম। কর্মজীবনের একপর্যায়ে তিনি ঘুম কমিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে তাঁর সামগ্রিক কার্যকারিতা কমে যাচ্ছিল। একটি টিভি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘৬ ঘণ্টা ঘুমই পারফেক্ট আমার জন্য। এর চেয়ে বেশি ঘুমাই না আমি।’
বিল গেটসের ধনরাশি আর দুনিয়াজোড়া দাপুটে প্রভাব নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা এই টেক জায়ান্ট কিন্তু ঘুমের গুরুত্বের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও জানেন ভালোমতোই। স্বাস্থ্য আর সৃজনশীল মনের যত্নে পর্যাপ্ত ঘুমের বিকল্প নেই।
তাঁর সর্বজনবিদিত ব্লগেই তিনি লিখেছেন, ‘মাইক্রোসফটের প্রথম দিককার দিনগুলোতে প্রায়ই আমি সারা রাত জেগে কাজ করতাম। ক্যাফিন আর অ্যাড্রিনালিনের ওপরে ভরসা করে কাটানো সেই সময়ে আমি ভাবতাম, ঘুমানো অলসদের কাজ।’
পরবর্তী সময়ে বিখ্যাত স্নায়ুতন্ত্র বিশেষজ্ঞ ম্যাথিউ ওয়াকারের ‘হোয়াই উই স্লিপ’ পড়ার পর থেকেই নিজের ঘুমের রুটিন আমূল বদলে ফেলেন বিল। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. থমাস রথের বরাত দিয়ে বিল তাঁর ব্লগে লিখেছেন, পাঁচ ঘণ্টার কম ঘুমিয়ে ভালো থাকতে পারে, এমন কেউ নেই দুনিয়াতে।
বর্তমান অস্থির সময়ে হাজারো ব্যস্ততা সামলে নিদ্রাভ্যাসের উন্নতি ঘটানোর জন্য কিছু বুদ্ধিও বাতলেছেন সত্যিকারের সফল মানুষটি। তিনি বলেন, ঘরে আলো কমিয়ে ফেলা, দুপুরে ছোট একটি ন্যাপ নেওয়া আর ঘরের তাপমাত্রা কিছুটা শীতল রাখা খুবই কার্যকর ভালো ঘুমের জন্য।
তথ্যসূত্র: দ্য সিইও ম্যাগাজিন
ছবি: রয়টার্স ও উইকিপিডিয়া