ইচ্ছা না করলেও যেভাবে নিজেকে ব্যায়াম করতে বাধ্য করবেন
শেয়ার করুন
ফলো করুন

মারুফা আকতার

ব্যায়াম আর ওজন নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কমবেশি সবার মধ্যেই একধরনের দ্বিমুখী চিন্তা কাজ করে। আমরা একদিকে ইচ্ছেমতো খাই, ব্যায়াম করি না। আবার সেই সঙ্গে আমরা ফিট থাকতেও চাই! আবার আমাদের মধ্যে আরেক দল আছেন, যাঁরা অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে, বিভিন্ন সরঞ্জাম আর গিয়ার কিনে বা জিমে জয়েন করে ব্যায়াম শুরু করলেও আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন অল্প সময়ের মধ্যেই। আর আমাদের অধিকাংশেরই কাজের ধরনের জন্য হাঁটাহাঁটি হয় না বললেই চলে। এদিকে ইচ্ছাই করে না ব্যায়াম করতে। আজ নয় কাল, কাল নয় পরশু করতে করতে সময় বয়ে যায়, বছর গড়িয়ে যায়। এমন অনিচ্ছা সত্ত্বেও কীভাবে নিজেকে ব্যায়ামের জন্য উদ্বুদ্ধ করবেন জেনে নিন এবার।

প্রতিদিন মাত্র ৫ মিনিট দিয়ে শুরু করুন

কখনো কখনো নিজের সঙ্গে কৌশলী হতে হবে। নিজেকে বলুন, আপনি মাত্র ৫ মিনিট ওয়ার্কআউট করবেন। আপনি হাঁটবেন, জগিং করবেন, সাইকেল চালাবেন, ওজন তুলবেন শুধু ৫ মিনিটের জন্য। তারপর ছেড়ে দেবেন। এভাবে ৫ মিনিট একসময় জ্যামিতিক হারে বাড়তে থাকবে, অথচ আপনি টেরই পাবেন না।

বিজ্ঞাপন

আপনার প্রিয় মিউজিক চালু করুন

ব্যায়ামকে উপভোগ্য করে তোলার জন্য পছন্দের মিউজিক শুনুন যা আপনাকে ব্যায়ামের মুডে নিয়ে যায়। এতে মনোযোগ বৃদ্ধি পায় এবং প্রতিদিন এভাবে করতে থাকলে তা অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়।

ব্যায়ামের রুটিনে পরিবর্তন আনুন

ব্যায়ামে নিয়মিত না হওয়ার অন্যতম কারণ হল আপনার ব্যায়ামের রুটিন বিরক্তিকর হয়ে উঠেছে। আপনি হয়ত প্রতিদিন ট্রেডমিলে হাঁটছেন। সপ্তাহে একদিন বাইরে হাঁটুন কিংবা সময় না পেলে একদিন কর্মস্থল থেকে হেঁটে ফিরুন। এ ধরণের পরিবর্তন একঘেয়েমি দূর করবে।

বিজ্ঞাপন

আপনার ওয়ার্কআউটের সময় পরিবর্তন করুন

আপনি হয়তো প্রতিদিন সকালের সময়টিকে বেছে নিয়েছেন ব্যায়ামের জন্য। টানা ১৫ দিন সকালে ওঠার পর হয়তো আপনার আর উঠতে ইচ্ছা হয় না বা অন্যান্য কাজের চাপ থাকায় ঘুম ভালো হচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে আপনি সময়টি পরিবর্তন করতেই পারেন। বরং আপনি সন্ধ্যায় ব্যায়াম করুন। এ সময় খালি রাস্তায় হাঁটুন অথবা সারা দিনের কাজ শেষে ৫-১০ মিনিট ওয়ার্কআউট করে গোসল সেরে নিন। আরামদায়ক ঘুম ও একটি সতেজ সকালের জন্য এটাই যথেষ্ট।

সম্ভব হলে দল বেঁধে ব্যায়াম করুন

দল বেঁধে একাধিক মানুষ একসঙ্গে ব্যায়াম করলে যে সুবিধা হয় তা হলো, ব্যায়াম মিস হওয়ার কোনো সুযোগ থাকে না। একধরনের সূক্ষ্ম প্রতিযোগিতাও চলে সবার মধ্যে। একে অপরকে দেখে উৎসাহিত হন এবং এতে ব্যায়ামে নিয়মিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়।

ভাবুন, ব্যায়াম কোনো কঠিন কাজ নয়

আপনি যখন ব্যায়াম করার কল্পনা করেন, তখন আপনি কী মনে করেন? আপনার পেশিতে ব্যথা কিংবা ক্লান্তির কথা চিন্তা করেন? যদি তাই হয়, তাহলে এই নেতিবাচক চিন্তাই আপনাকে ব্যায়াম করতে চাওয়া থেকে বিরত রাখছে। ১৫ মিনিট হাঁটা খুব বেশি কিছু না। আপনি প্রতিদিন হয়তো এর চেয়ে বেশিই পরিশ্রম করেন। তাহলে ব্যায়াম করা কঠিন কেন মনে হবে? নিজেকে নিজেই উৎসাহ দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই।


নিজেকে পুরস্কৃত করুন

প্রতিদিন একটি চ্যালেঞ্জ নিন এবং সেটা পূরণ হলে নিজেকে পুরস্কৃত করুন, তাহলেই আপনার উৎসাহ আর স্ট্যামিনা—কোনোটাই কমবে না।

লক্ষ্য নিয়ে ব্যায়াম করুন

হয়তো আপনার ওজন প্রয়োজনের চেয়ে বেশি কিংবা এখন ওজন ঠিক আছে কিন্তু আপনি চাইছেন না এটা বৃদ্ধি পাক। আর এ উদ্দেশ্যেই আপনি ব্যায়াম করার পরিকল্পনা করেছেন। এই বিষয়টিকে ভুলে গেলে চলবে না। যখন শুরু করবেন, তখন থেকে একটি নির্দিষ্ট চ্যালেঞ্জ নিন এবং নিজেকে সময় ধরে দিন। অবশ্যই নিয়মিত ফলোআপ করুন এবং নিজের পরিবর্তন খেয়াল রাখুন। এটাই আপনাকে উদ্দীপনা জোগাবে।

আরামদায়ক পোশাক পরুন

ব্যায়াম করার উপযোগী জুতা ও আউটফিট ব্যবহার করুন। তাহলে আপনার কষ্ট যেমন কম হবে, তেমনি ইনজুরি হওয়ার সম্ভাবনা কমবে।
নিজেকে সুস্থ রাখার দায়িত্ব আপনারই। তাই অন্যরা হাজার বার বলেও যে কাজ হবে না, আপনি নিজে থেকে উদ্যোগ নিলেই সেটা সম্ভব। ব্যায়ামে নিয়মিত হওয়ার জন্য মনকে স্থির ও ফোকাসে রাখুন। তাহলেই আর কোনো বাধা থাকবে না। এতে সুস্থ ও ভালো থাকা নিশ্চিত হবে সবার।

তথ্যসূত্র: ভেরি ওয়েল ফিট

ছবি: পেকজেলসডট কম

প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২৪, ০১: ৩২
বিজ্ঞাপন