দিনের পর দিন ভাত-রুটি একেবারে বাদ দিলে যেসব মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে
শেয়ার করুন
ফলো করুন

বলা হয় স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। কথাটি আমরা সবাই জানি; কিন্তু মানি কয়জন? আমাদের স্বার্থকে সুরক্ষিত রাখতে প্রতিদিনই প্রয়োজন সুষম ও পরিমিত খাবারের সমন্বয়।আজকাল অনেকেই ওজন কমানো বা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য অতিরিক্ত কম কার্বোহাইড্রেটযুক্ত ডায়েটের দিকে ঝুঁকছেন। এই ডায়েট প্ল্যানগুলোতে সাধারণত ভাত-রুটি আর অন্যান্য শর্করাজাতীয় খাবার একেবারে বাদ দেওয়া হয় বা নামমাত্র গ্রহণ করা হয়।

এমন ডায়েটে শুধুই উচ্চমাত্রার প্রোটিন আর ফল-সবজি ইত্যাদি খাওয়া হয়
এমন ডায়েটে শুধুই উচ্চমাত্রার প্রোটিন আর ফল-সবজি ইত্যাদি খাওয়া হয়

নো-কার্ব ডায়েটে বলতে গেলে শুধুই উচ্চমাত্রার প্রোটিন আর ফল-সবজি ইত্যাদি খাওয়া হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে যোগ করা হয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ফ্যাট। এ ধরনের ডায়েট অনুসরণ করে আপাতদৃষ্টিতে কিছু সুফল মেলে। তবে তা নির্ভর করে একেক জনের একেরকম মেটাবলিজম না বিপাকীয় বৈশিষ্ট্যের ওপরে। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না যে এই ডায়েট বছরের পর বছর অনুসরণ করলে তা আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর কী ধরনের মারাত্মক ও দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

বিজ্ঞাপন

প্রায় ২৫ হাজার মানুষ নিয়ে করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা অতিরিক্ত কম কার্বোহাইড্রেট খাচ্ছেন বা খাচ্ছেনই না, তাঁদের হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি ৫২ শতাংশ বেড়ে যায়। একইভাবে স্ট্রোকের কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি ৫০ শতাংশ বেড়ে যায় এবং খাদ্যনালিতে ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা ৩৫ শতাংশ বেড়ে যায়। এই তথ্যগুলো আমাদের অনেকেরই অজানা। আমরা শুধু জানি যে কার্বোহাইড্রেট কম খেলে ডায়াবেটিস ও ওজন কমে, কিন্তু এর দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা নিয়ে আলোচনা খুব কমই হয়।

আমরা শুধু জানি যে কার্বোহাইড্রেট কম খেলে ডায়াবেটিস ও ওজন কমে
আমরা শুধু জানি যে কার্বোহাইড্রেট কম খেলে ডায়াবেটিস ও ওজন কমে

স্বল্পমেয়াদি লাভ বনাম দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি

আমরা অনেক সময় স্বল্পমেয়াদি লাভের জন্য এই ধরনের ডায়েটে প্রলুব্ধ হই। কিন্তু এই ডায়েটের কারণে কিডনি নষ্ট হওয়া, প্যানক্রিয়েটাইটিস, অ্যাকিউট কিডনি ইনজুরি এবং ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার মতো গুরুতর সমস্যা হতে পারে।অনেকেই কিটোসিসে ভুগছেন, যা মূলত কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ কমানোর ফলে শরীরে কিটোনের মাত্রা বেড়ে যায়। এটি একটি বিপজ্জনক অবস্থা, যা অনেক সময় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

বিজ্ঞাপন

কিটোসিসে ভুগলে নিম্নোক্ত লক্ষণগুলো দেখা যায়:

১. মাথাব্যথা।

২. ব্লাড সুগারের পরিমাণ কমে যাওয়া।

৩. পানিশূন্যতা।

৪. অতিরিক্ত ক্লান্তি ভাব হওয়া।

৫. অপর্যাপ্ত ঘুম।

নো কার্ব ডায়েটের সম্ভাব্য দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ সচেতন হওয়া জরুরি
নো কার্ব ডায়েটের সম্ভাব্য দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ সচেতন হওয়া জরুরি

অতএব, কম কার্বোহাইড্রেট ডায়েট শুরু করার আগে এর সম্ভাব্য দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ সচেতন হওয়া জরুরি। স্বল্পমেয়াদি ওজন কমানোর চেয়ে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনা করে আমাদের খাবারের পরিকল্পনা করা উচিত। স্বাস্থ্যকর ও সুষম খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে আমরা আমাদের শরীরকে দীর্ঘমেয়াদি সুস্থ রাখতে পারি। স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো পরিমিত পরিমাণে সব ধরনের পুষ্টি গ্রহণ করা।

ছবি: পেকজেলসডটকম

প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৪, ০৬: ০০
বিজ্ঞাপন