ডিটক্স ওয়াটার নিয়ে এখন সবার আগ্রহের শেষ নেই। দিনে পর্যাপ্ত পানি পান তো করতেই হবে। ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে পানি পান করারও রয়েছে অনেক উপকারিতা। কিন্তু এই পানির গ্লাসটিকে শক্তি আর সুস্বাস্থ্যের উৎসে পরিণত করতে চাইলে ডিটক্স ওয়াটার এক অনন্য সমাধান হতে পারে।
দিনের যেকোনো সময়েই পান করা যায় ডিটক্স ওয়াটার। তবে ঘুম থেকে উঠেই খালি পেটে কিছু ডিটক্স পানীয় পান করলে তা থেকে বিশেষভাবে কিছু উপকারী গুণ মেলে। সাতসকালে শরীরে প্রথমে এই পানীয়গুলো প্রবেশ করলে তা বিষাক্ত পদার্থ নিষ্কাশন করে শরীরকে ভেতর থেকে পরিষ্কার রাখে আর সেই সঙ্গে দিনের প্রথমেই মেটাবলিজম বাড়িয়ে দেয়।
বেশির ভাগ ডিটক্স ওয়াটারে কোনো ক্যালরি না থাকায় সকালের নাশতার আগে তা পান করলে ওজন নিয়ন্ত্রণে সুবিধা হয়। মধু, লেবু বা দারুচিনির মতো স্বাস্থ্যগুণসম্পন্ন উপকরণ দিয়ে নানা রকমের ডিটক্স পানীয় বানানো যায়।
১. জিরাপানি
একটি পানীয় থেকেই যদি বিভিন্ন উপকারিতা মেলে তবে এর চেয়ে ভালো আর কী হতে পারে! জিরাপানির স্বাস্থ্যগুণ একবার যাঁদের কাজে লেগেছে, তাঁরা সারা জীবন এর প্রতি বিশ্বস্ত থাকেন। জিরাপানি তৈরি করতে সারা রাত জিরা ভিজিয়ে রেখে সেই পানি সকালে ফুটিয়ে নিতে হবে। ফুটতে শুরু করলেই জিরা ছেঁকে নিয়ে সেই পানি পান করতে হবে ঠান্ডা অবস্থায়। এতে অনায়াসে একটু লেবু দিয়ে নেওয়া যায়।
২. আমলকী ডিটক্স ওয়াটার
আমলকী যে ভিটামিন সির খনি তা তো আমরা সবাই জানি। আমলকী হজমে সহায়ক বলে দিনের শুরুতেই এটি গ্রহণ করলে তা শরীরের জন্য খুব উপকারী হয়। কুসুমগরম পানিতে ২ চা–চামচ আমলকীর রস দিতে হবে। এরপর এতে ২ চামচ অ্যালোভেরা জুস, আর ১ চামচ আপেল সাইডার ভিনেগার দিতে হবে। সকালে পান করার জন্য এটি একটি আদর্শ পানীয়।
৩. মেথি ভেজানো পানি
এ বছরের শুরুর দিক থেকে এই মেথির পানি ডিটক্স হিসেবে খুবই সমাদৃত হচ্ছে বিশ্বব্যাপী। এর কারণও আছে অবশ্য। মেথির উপকারী গুণের কথা বলে শেষ করা যাবে না। ঔষধি গুণসম্পন্ন এই মসলা শরীরকে সামগ্রিকভাবেই সুস্থ রাখে যদি তা নিয়মিত গ্রহণ করা হয়। এ জন্য সারা রাত সুগন্ধি মেথির বীজ পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। সকালে উঠে পানি ছেঁকে নিয়ে পান করতে হবে, তা অত্যন্ত কার্যকর ডিটক্স ওয়াটার হিসেবে।
৪. লেবু–মধু মেশানো পানি
লেবু আর মধু মেশানো পানি মনে হয় সবচেয়ে জনপ্রিয় ডিটক্স ওয়াটার। এ জন্য এর অত্যন্ত সুস্বাদু ফ্লেভার আর সুগন্ধ প্রভাবক হিসেবে কাজ করে নিশ্চিতভাবে। সারা বিশ্বেই সর্দি–জ্বর থেকে শুরু করে ওজন হ্রাস—সবকিছুতেই সকালে উঠে লেবু ও মধু মেশানো পানি পান করতে বলা হয়। তবে পানি বেশি গরম যে না হয়। এতে লেবুর ভিটামিন সি নষ্ট হয়ে যায়।
৫. দারুচিনি ফ্লেভারের পানি
দারুচিনির সুবাস এমনিতেও স্ট্রেস কমায়, শরীরে চনমনে ভাব জাগায়। তাই ভোরে উঠে প্রথমেই এই দারুচিনি ফ্লেভারের ডিটক্স ওয়াটার পান করলে দিনটা ভালো যাবে। দারুচিনি ওজন কমানো ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে খুবই কার্যকর। ২ কাপ পানিতে দারুচিনির দুটি ১ ইঞ্চি মাপের অংশ ফুটিয়ে নিতে হবে খুব ভালো করে। ছেঁকে নিয়ে একটু লেবু দিয়ে পান করা যায় দারুচিনির পানি।
তথ্যসূত্র: ভেরি ওয়েল ফিট
ছবি: পেকজেলস ডট কম