ভিটামিন সি-এর যত উপকারিতা
শেয়ার করুন
ফলো করুন

ভিটামিন সি-এর উপকারিতা

১. দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমানো

ভিটামিন সি হলো একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা আপনার শরীরের প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে পারে। আর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হচ্ছে একধরনের অণু, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এগুলো ফ্রি র‍্যাডিকেল-জাতীয় ক্ষতিকারক অণু থেকে কোষকে রক্ষা করে। যখন ফ্রি র‍্যাডিকেল জমা হয়, তখন অক্সিডেটিভ স্ট্রেস তৈরি হয়। এটি অনেক দীর্ঘস্থায়ী রোগের সঙ্গে সম্পর্কিত। গবেষণায় দেখা যায়, বেশি ভিটামিন সি গ্রহণ করলে আপনার রক্তে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের মাত্রা তা ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে। এটি শরীরের প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষাব্যবস্থাগুলোকে প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।

২. উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে

উচ্চ রক্তচাপ আপনাকে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকিতে রাখে। এটি বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। গবেষণায় দেখা গেছে যে ভিটামিন সি উচ্চ রক্তচাপ কমাতে পারে।

৩. গিঁটেবাত প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে

গিঁটেবাত হচ্ছে একধরনের বাত, যা অত্যন্ত কষ্টদায়ক। এর কারণে শরীরের জোড়গুলোয় প্রচণ্ড ব্যথা হয়, বিশেষ করে বুড়ো আঙুলগুলোয়। গিঁটেবাত বা গাউটে আক্রান্ত ব্যক্তিরা ফোলাভাব আর হঠাৎ তীব্র ব্যথা অনুভব করেন। রক্তে খুব বেশি ইউরিক অ্যাসিড থাকলে গাউটের লক্ষণ দেখা দেয়। ইউরিক অ্যাসিড হলো শরীর থেকে উৎপাদিত একটি বর্জ্য পণ্য। এটি ক্রিস্টাল গঠন করে এবং জোড় বা জয়েন্টগুলোতে জমা হতে পারে। ভিটামিন সি রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ কমায়। যার ফলে গাউটের ঝুঁকি কমে যায়।

বিজ্ঞাপন

৪. আয়রনের ঘাটতি রোধ করতে সাহায্য করে

আয়রন একটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান, যা শরীরে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে। লোহিত রক্তকণিকা তৈরি এবং সারা শরীরে অক্সিজেন পরিবহনের জন্য এটি অপরিহার্য। ভিটামিন সি সাপ্লিমেন্ট ট্যাবলেট বা পাউডার খাদ্য থেকে আয়রন শোষণ করতে সাহায্য করতে পারে। ভিটামিন সি শোষিত আয়রনকে কার্যকর অবস্থায় রূপান্তরিত হতে সাহায্য করে। শুধু ১০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি গ্রহণ করলে আয়রনের এই শোষণ ৬৭ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।

৫. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়

ভিটামিন সি-এর সবচেয়ে বেশি উপকারী দিক হলো, এটি আপনার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে অত্যন্ত কার্যকর। ভিটামিন সি পাউডার গ্রহণ করার একটি প্রধান কারণই হলো রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করা। প্রথমত, ভিটামিন সি লিম্ফোসাইট আর ফ্যাগোসাইট নামে পরিচিত শ্বেত রক্তকোষের উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে সাহায্য করে, যা শরীরকে সংক্রমণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করে। দ্বিতীয়ত, ভিটামিন সি এই শ্বেত রক্তকোষগুলোকে আরও কার্যকরভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। আর একই সঙ্গে তাদের সম্ভাব্য ক্ষতিকারক অণুগুলোর কুপ্রভাব থেকে রক্ষা করে, যেমন ফ্রি র‍্যাডিকেল। তৃতীয়ত, ভিটামিন সি ত্বকের প্রতিরক্ষাব্যবস্থার একটি অপরিহার্য অংশ। ত্বকের ক্ষেত্রেও এটি একটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করতে পারে এবং ত্বকের বাধাগুলোকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করতে পারে।

মডেল: সাফা; স্টাইলিং: নুসরাত শ্রাবনী; লোকেশন: ক্যানভাস স্টুডুও; ছবি: হাদী উদ্দীন
মডেল: সাফা; স্টাইলিং: নুসরাত শ্রাবনী; লোকেশন: ক্যানভাস স্টুডুও; ছবি: হাদী উদ্দীন

কীভাবে খাবেন

ভিটামিন সি পাউডার দিনে ৫০০ মিলিগ্রাম থেকে ৩ গ্রাম পর্যন্ত খাওয়া যেতে পারে। সাধারণভাবে ১ চামচ ভিটামিন সি পাউডার এক গ্লাস পানিতে গুলিয়ে খেয়ে নিলে হয়। বেশি টক অনুভূত হলে হালকা একটু পিংক সল্ট মিশিয়ে নেওয়া যায়।

লেখক: পুষ্টিবিদ, স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী, পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

বিজ্ঞাপন
প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৩, ২৩: ০০
বিজ্ঞাপন