কেমন হয় যদি এমন কিছু শৌখিন কাজ পেয়ে যান, যা আপনার মন ও পরিবেশ দুটিকেই রাখবে ভালো। পাশাপাশি যদি এর জন্য কোনো অর্থ খরচের চিন্তাও না থাকে। জেনে অবাক হবেন, আসলে আমরা চাইলেই এমন কিছু কাজ করতে পারি, যা আমাদের মনকে ভালো রাখবে কিন্তু এগুলোর জন্য অনেক টাকার দরকার নেই। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই শৌখিন কাজগুলো সম্পর্কে, যা মানসিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি পরিবেশের জন্য ভালো। আর পরিবেশ বা সোজা কথায় পৃথিবীকে না বাঁচালে আমরা বাস করব কোথায়!
বিশ্বজুড়ে সাইকেল চালানোকে একটি জনপ্রিয় শখ হিসেবে গণনা করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দেখা যায় এর প্রতি মানুষের বেশ অনীহা রয়েছে। ইঞ্জিনচালিত যানবাহনের প্রতিই আমরা নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি, যা পরিবেশের জন্য তো ভালো নয়, সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। এটি আমাদের অলসতাকেও আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এসব কাটিয়ে উঠতে চাইলে শুরু করে দিতে পারেন সাইকেল চালানো। বন্ধুরা মিলে একসঙ্গে সাইকেল চালাতে বের হতে পারেন। কিংবা আপনার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও বের হতে পারেন, যা আপনাদের মধ্যে একধরনের আন্তরিকতার সৃষ্টি করবে। সেই সঙ্গে এটি আপনার মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যও রাখবে ভালো।
যাঁরা অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য ক্যাম্পিং হবে সবচেয়ে ভালো সুযোগ। বন্ধু কিংবা পরিবার নিয়ে এক থেকে দুই রাতের জন্য কোথাও গিয়ে তাঁবু টেনে সারা রাত কাটিয়ে দিতে পারেন। তাঁবুতে বসে প্রিয়জনদের সঙ্গে তারা দেখতে দেখতে রাত কাটিয়ে দেওয়ার মতো শৌখিন কাজ আর কী হতে পারে! এটি আপনাদের প্রকৃতির সঙ্গেও সুন্দর একটি বন্ধুত্বের সৃষ্টি করবে, যার ফলে প্রকৃতির প্রতি আপনার শ্রদ্ধাবোধ আরও বাড়বে। এ ছাড়া আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের ভালো বন্ধু প্রকৃতির চেয়ে আর কেউ হতেই পারে না। তাই মাঝেমধ্যে এভাবে প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটান।
আপনি যদি বাড়িতেই বেশির ভাগ সময় কাটাতে ভালোবাসেন, তবে সেলাই করে সময় কাটাতে পারেন। সেলাই স্ট্রেস কমাতে সহায়তা করে। সেই সঙ্গে আপনার সৃজনশীলতা বাড়াতেও সাহায্য করে। আপনি নিজের জন্য নিজের পছন্দমতো কাপড় সেলাই করতে পারেন। এ ছাড়া কারও বিশেষ দিনে নিজের বানানো কিছু উপহার হিসেবেও দিতে পারেন, যা একধরনের আন্তরিকতার ছোঁয়া দেয়। তবে অর্গানিক তুলা বা পুনর্ব্যবহারযোগ্য পলিয়েস্টারের মতো পরিবেশবান্ধব কাপড় ব্যবহার করে সেলাইকে টেকসই করতে পারেন।
আপনি চাইলে করতে পারেন আপনার শখের বাগান। যেখানে থাকবে আপনার পছন্দের ফুল কিংবা ফল। গাছের চর্চাও কিন্তু আপনার স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করতে পারে। এ ছাড়া আপনি সকালে ঘুম থেকে উঠেই যখন দেখবেন গাছে আপনার পছন্দের ফুল ফুটেছে, এটি আপনার মধ্যে একধরনের ইতিবাচক শক্তি সৃষ্টি করতে সহায়তা করবে।
আপনার শখের কাজগুলোর মধ্যে এটিকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। আপনার আশপাশের মানুষদের সহায়তা করতে পারেন। বলা হয়, প্রতিটি মানুষের প্রতিদিন একটি হলেও স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ করা উচিত। সারা দিনের ক্লান্তি শেষে মনে করলে যা আপনার মধ্যে একধরনের সন্তুষ্টির অনুভূতি দেবে। শুধু যে মানুষেরই উপকার করতে হবে, তা কিন্তু নয়। আপনি চাইলে কোথাও ময়লা পড়ে থাকলে সেটি সঠিক স্থানে রাখতে পারেন। আশপাশের মানুষদের এই ব্যাপারে সচেতন করতে পারেন। গাছ লাগাতে পারেন। পশুপাখিদের পানি কিংবা খাবারের ব্যবস্থা করতে পারেন। এই ধরনের কাজগুলো আপনার মনে একধরনের ভালো অনুভূতির সৃষ্টি করে, যা আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
তথ্যসূত্র: থট ক্যাটালগ
ছবি: পেকজেলসডটকম ও বিডি সাইকেলিস্ট