প্রতিদিনের স্বাস্থ্যকর অভ্যাস
শেয়ার করুন
ফলো করুন

সুস্থ থাকতে চাই জীবনের সব ক্ষেত্রের সঠিক সমন্বয়। এর মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক জীবনে বিভিন্ন সু–অভ্যাস গড়ে তোলা। প্রতিদিনের আট ঘণ্টার কর্মক্ষেত্র, সপ্তাহজুড়ে নানা ব্যস্ততায় কমে যায় শারীরিক ও মানসিক শক্তি। এর সঙ্গে যুক্ত হয় প্রতিদিনের অভ্যাসের কারণে করা কিছু ছোট ছোট ভুল। সুস্থ ও সুশৃঙ্খল জীবন পেতে প্রথমেই এই ভুল অভ্যাসগুলো চিহ্নিত করা প্রয়োজন। আর সে সঙ্গে প্রতিদিনের সু–অভ্যাস চর্চার মাধ্যমে নিজেকে চাপমুক্ত রাখলেই শুধু জীবনের মূল উদ্দেশ্যগুলো অর্জন করা সম্ভব। এমন কিছু ভালো অভ্যাসের দিকে নজর দেওয়া যাক এবার।

ধীরে ধীরে খাওয়া

খাওয়ার সময়ে তাড়াহুড়ো একেবারেই চলবে না। ধীরে ধীরে খাবার খাওয়ার আছে বহু স্বাস্থ্যগত সুফল। এতে মস্তিষ্কের কাছে প্রয়োজনীয় সংকেত পৌঁছানোর সুযোগ থাকে। আমরা কী খাবার খাচ্ছি, কতটুকু খাবার খাচ্ছি এবং তা আমাদের জন্য যথেষ্ট কি না, তা বুঝতে ধীরে খাবার খাওয়া প্রয়োজন। এ ছাড়া অতিরিক্ত খাওয়া কমাতেও এই অভ্যাস আমরা গড়ে তুলতে পারি।

বিজ্ঞাপন

সোশালাইজ করা

সোশালাইজিং মানেই কিন্তু নিছক কিছু মানুষের সঙ্গে প্রতিদিন দেখা করা বা সময় কাটানো নয়। এখানে যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো অন্যের সঙ্গে প্রকৃত সংযোগ থাকা। এর ফলে আমাদের আত্মিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে, একাকিত্ব বা অসহায়ত্বজনিত অনুভূতি কমে আসবে। আমাদের মধ্যে মানসিক চাপ কমবে, মন থাকবে প্রফুল্ল। এ ছাড়া জটিল সব মানসিক স্বাস্থ্যগত সমস্যার ঝুঁকি কমাতেও কার্যকর সোশালাইজেশনের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে।

ফলের রসের বদলে আস্ত ফল

প্রতিদিনের ফলের চাহিদা অনেকেই ফলের রস দিয়ে পূরণ করার কথা ভাবেন। কিন্তু পুষ্টিবিদ শওকত আরা সাঈদা বলেন, বিশুদ্ধ ফলের রসেও ফলের থেকে কম পুষ্টিগুণ থাকে। এ ছাড়া ফলের রসে চিনির মাত্রা অনেকটাই বেড়ে যায়। তাজা ফলে ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, আঁশ ও ফলিক অ্যাসিড—সব পাওয়া যায় বেশি। এ ছাড়া ফ্যাট, সোডিয়াম ও ক্যালরি সবই থাকে স্বল্পপরিমাণে, যা স্বাস্থ্যের জন্য বেশি উপকারী।

সময়মতো ছুটি নেওয়া

পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে প্রতিদিন সময় কাটানো শারীরিক ও মানসিক চাপ উভয় কমায়। কাছের মানুষের সঙ্গে সময় কাটালে হৃদ্‌রোগের সম্ভাবনাও কিন্তু কমে অনেকাংশে। তাই ভ্যাকেশন বা ব্রেক নেওয়া এখন আর বিলাসিতা নয়। তবে তা হতে হবে পরিমিত ও যুক্তিসংগত সময়কালজুড়ে।

বিজ্ঞাপন

রোদে থাকা

প্রতিদিনের অভ্যাসের মধ্যে রোদে যাওয়া ও বাইরে সময় কাটানোর মতো কাজগুলো যোগ করতে হবে। ভিটামিন ডির চাহিদা পূরণে রোদের বিকল্প নেই। শরীরের কোষ, হার্ট ও মন ভালো রাখতে দরকার পরিমিত দিনের আলো। এতে মনও ভালো হয়।

খাবারে সবুজ রাখা

প্রতি বেলাতেই চেষ্টা করতে হবে খাবারে সবুজ কিছু রাখা। যতটুকু সম্ভব লাল মাংস কম খাওয়া ও সবুজ সবজির সালাদ বা তরকারি খেতে হবে। এতে হৃদ্‌রোগ, ডায়বেটিস, উচ্চরক্তচাপসহ বহু রোগ কার্যকরভাবে প্রতিরোধ করা যায়।

হাঁটাচলা করা

দিনের পুরো সময় এক জায়গায় বসে অফিসের কাজ করা খুবই অস্বাস্থ্যকর। কাজের ফাঁকেই বাড়াতে হবে চলাচল। শরীরের ক্যালরি পোড়াতে হাঁটাচলার বিকল্প নেই। কাজে কিছুটা সময় বিরতি নিয়ে বাইরে থেকে হেঁটে আসা ভালো অভ্যাস। মুক্ত বাতাসে হাঁটলে মনও প্রফুল্ল হয়, স্ট্রেস কমে।

চিনি কম, লবণ কম

প্রতিদিনের খাবারে কম করে রাখতে হবে চিনি আর লবণ। সম্ভব হলে চিনি একেবারেই খাওয়া যাবে না। আর রান্নার সময়ে ব্যবহৃত লবণ ছাড়া বাড়তি লবণ থেকেও থাকতে হবে একেবারে দূরে। প্রক্রিয়াজাত খাবার,  কোমল পানীয় ও ফাস্টফুডে প্রচুর আলগা লবণ-চিনি থাকে। তাই এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।

পাঁচ মিনিটের বিরতি

যে কাজের মধ্যেই থাকুন না কেন, সময়মতো নিতে হবে পাঁচ মিনিটের বিরতি। মানসিক চাপ কমাতে ও মনের স্বস্তির জন্য মাত্র পাঁচ মিনিট ব্রেকও অনেক সাহায্য করে। আরামদায়ক স্থানে বসা, লম্বা করে শ্বাস নেওয়া, চোখ বন্ধ করে রাখা বা প্রকৃতি দেখা—এসবই মেডিটেশনের কাজ করে। কমায় মানসিক ও শারীরিক ক্লান্তি।

প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০২৩, ১৬: ৪০
বিজ্ঞাপন