যে ৫ কায়দায় চিয়া সিডস খেলে ৭ দিনেই আপনি ফিটনেস ফিরে পাবেন
শেয়ার করুন
ফলো করুন

চিয়া সিডস নিয়ে স্বাস্থ্যপ্রেমীদের আগ্রহ বেশ আগে থেকেই। বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত সুপার ফুড চিয়া সিডস। ওজন নিয়ন্ত্রণ আর খাবারে প্রয়োজনীয় আঁশ যোগ করতে এর জুড়ি নেই বলে স্বাস্থ্যসচেতন সকলেই গ্রহণ করছেন চিয়া সিডস। আর কিছু নিয়ম মেনে এভাবে চিয়া সিডস গ্রহন করলে দ্রুত কমবে ওজন।

চিয়া সিডস দিয়ে ডাবের পানি

চিয়া সিডস ও ডাবের পানি আলাদা আলাদাভাবেই সুপার ফুড। দুইয়ের সমন্বয়ে তা হয় আরও বেশি কার্যকর। চিয়া সিডসমৃদ্ধ ডাবের পানিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ইলেকট্রোলাইট ও পর্যাপ্ত ফাইবার, যা আমদের শরীরকে আর্দ্র রেখে পানিশূন্যতা রোধ করে ও  হজমশক্তি বৃদ্ধি করে। এদের সমন্বয়ে যে পানীয়, তার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন সি, খুবই উপকারী মিনারেল, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে।

ডাবের পানিতে চিয়া সিডস দিলে দ্বিগুণ উপকার মেলে
ডাবের পানিতে চিয়া সিডস দিলে দ্বিগুণ উপকার মেলে

সারাদিন রোজা রাখবার পর ইফতারে পানীয় হিসেবে গ্রহণ করুন ডাবের পানি সহযোগে চিয়া সিডস। এটি  সারাদিন রোজা রাখার পর  দেহের আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণে রাখে । ডাবের পানিতে থাকা ইলেকট্রোলাইট সারাদিন রোজা রাখার পর দেহের পানিশূন্যতা প্রতিরোধে দারুণ কাজ করে।

বিজ্ঞাপন

চিয়া ডিটক্স ওয়াটার

ইফতারে আমরা সাধারণত আমরা শরবত , ফলের রস পান করি। এক্ষেত্রে চিয়া সিডস ডিটক্স ওয়াটার দারুণ কাজ করে। সেজন্য এক গ্লাস পানিতে এক চা চামচ চিয়া সিডস ও একটি লেবুর রস মিশিয়ে নিয়ে  রেখে দিন ঘন্টাখানেক। এতে শসাও দেওয়া যায়। রোজা খুলতে প্রথম পানীয় হিসেবে এই ডিটক্স ওয়াটার পান করুন। চিয়া সিডস ফাইবারযুক্ত হওয়ায় দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে।

চিয়া ডিটক্স ওয়াটার খুবই কার্যকর
চিয়া ডিটক্স ওয়াটার খুবই কার্যকর

এতে মেটাবোলিজম বেড়ে যায়, ফলে আপনি ইফতারে যা কিছু গ্রহণ করবেন তা হজম হবে দ্রুত। তবে সেক্ষেত্রে সহজপাচ্য খাবার গ্রহণ করুন, তেলে ভাজা খাবার এড়িয়ে চলুন। চিয়া সিডস দীর্ঘ সময় পর্যন্ত পেট ভরা রাখার ফলে ক্ষুধা কম লাগে। এতে অযাচিত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়, যা ওজন কমাতে সহায়তা করে। খালি পেটে এটি দারুণ কাজ করে।

চিয়া পুডিং

রোজা খোলার পর দেখা যায়, আমরা জিলাপি খাই বা চিনিযুক্ত শরবত পান করি। ইফতারে আপনি যখন ফল খাচ্ছেন সেখানে প্রাকৃতিক চিনি অর্থাৎ সুক্রোজ রয়েছে। এর সঙ্গে যদি আপনি জিলাপি বা চিনিযুক্ত শরবত গ্রহণ করেন তবে সুগার ওভারলোড হয়ে যায়। ছোট এক পিস জিলাপিতে থাকে ১৫০ ক্যালরি, চিনিযুক্ত শরবতে থাকে ১২০ ক্যালরি। এভাবে হিসেব করলে দেখবেন আপনি কেবল ইফতারেই ১০০০ ক্যালরি খেয়ে ফেলছেন। দ্রুত ওজন কমাতে চাইলে আপনাকে ক্যালরি ডেফিসিট ডায়েট করতে হবে। অর্থাৎ যত ক্যালরি খরচ হচ্ছে তার চেয়ে কম গ্রহণ করতে হবে। রমজান সবচেয়ে ভালো সময় সেটার জন্য। সে কারণে ইফতার থেকে সাহরি পর্যন্ত পরিমিতভাবে দিনের খাবার ভাগ করে খেতে পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা।

মিষ্টি কিছু খেতে হলে চিয়া পুডিং খান
মিষ্টি কিছু খেতে হলে চিয়া পুডিং খান

সারাদিন রোজা রাখার পর মিষ্টি কিছু খাওয়ার জন্য মস্তিষ্ক আপনাকে প্রলুব্ধ করে। সেক্ষেত্রে চিয়া পুডিং দারুণ স্বাস্থ্যকর ও সুস্বাদু একটি সমাধান। একটি বাটিতে এক গ্লাস দুধ নিয়ে তাতে এক চামচ চিয়া সিডস ও সামান্য মধু দিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। দুই ঘন্টা পর বের করে কলা, খেজুর, আপেল বা আঙুরের মতো যেকোনো ফলের সঙ্গে মিশিয়ে খান। খেতে যেমন দারুণ, তেমনই পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এই পুডিং। সাহরি বা ডিনারে এটি খেতে পারেন।

বিজ্ঞাপন

লেবু-পানিতে চিয়া সিডস

সাহরির সময় ঘুম থেকে উঠে প্রথমে এই পানীয় পান করে তারপর ওয়াশরুমের কাজ শেষ করে সাহরি খান। এতে পেট যেমন পরিষ্কার হবে। ডিনার ও ইফতারে খাওয়া খাবার হজম হয়ে যাবে।

কুসুম গরম পানিতে চিয়া সিডস ও সামান্য লেবুর রস মিশিয়ে ছোট বোতলে রেখে দিন
কুসুম গরম পানিতে চিয়া সিডস ও সামান্য লেবুর রস মিশিয়ে ছোট বোতলে রেখে দিন

রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে হাতের কাছে কুসুম গরম পানিতে চিয়া সিডস ও সামান্য লেবুর রস মিশিয়ে ছোট বোতলে রেখে দিন। সাহরির  সময় উঠে প্রথমেই সেটা পান করুন। সাতদিন পর আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন এর জাদুকরী ফল।

টক দই দিয়ে চিয়া সিডসের সালাদ

রোজার সময় রাতের খাবার, ইফতার ও সাহরিসহ যেকোনো সময় পছন্দের ফল ও সবজি দিয়ে টকদই ও চিয়া সিডসের সালাদ খাদ্য তালিকায় রাখার চেষ্টা করুন।

সালাদে চিয়া সিডস মেশান
সালাদে চিয়া সিডস মেশান

প্রথমে আধা কাপ টকদইয়ে এক চামচ চিয়া সিডস দিয়ে আধা ঘণ্টা রাখুন। এবার পছন্দের ফল ও সবজি, বাদাম দিয়ে খান। রোজা শেষে ওজন মেপে দেখুন। পাবেন দারুণ ফল।

সব কিছুর সঙ্গে অবশ্যই পরিমিত ঘুম, প্রতিদিন ভাগ করে আট থেকে দশ গ্লাস পানি পান করুন। ইফতারের আগে কিংবা পরে অন্তত ৪০-৪৫ মিনিট হালকা ব্যায়াম বা জোরে হাঁটার চেষ্টা করুন। মন প্রসন্ন রাখুন, মানসিক অবসাদ থেকে দূরে থাকুন।  এতে আপনার ওজন যেমন কমবে, তেমনি সাতদিনেই মানসিকভাবে আপনি হয়ে উঠবেন অনেক বেশি ইতিবাচক মনোভাবের অধিকারী।

ছবি: ইন্সটাগ্রাম

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৫: ০২
বিজ্ঞাপন