রিফাইন করা আটা বা চাল যে ভালো নয়, তা এখন কম-বেশি সবাই জানি। তবে সম্প্রতি এক নির্ভরযোগ্য গবেষণায় এর ক্ষতিকর প্রভাবের আরেকটি দিক উঠে এসেছে, যা দুশ্চিন্তায় ফেলে দিচ্ছে সবাইকে। আগের দিনে গম বা যব ভাঙিয়ে সেই আটাই খেত মানুষ। ধান থেকে ঢেঁকিতে ছেঁটে পাওয়া চাল ছিল খাদ্যতালিকায়। এরপর আস্তে আস্তে রিফাইন করা আটা ও চাল ধবধবে সাদা হয়ে উঠতে লাগল আর আমরা সেগুলোই খাই এখন বিশ্বজুড়ে। বেশ কয়েক বছর ধরে স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞরা বলছেন সেই হোলগ্রেন আটা আর লাল চালের দিকে ফিরে যেতে।
অতি সম্প্রতি জার্নাল অব পারসোনালিটি অ্যান্ড ইন্ডিভিজ্যুয়াল ডিফারেন্সেসের এক নিবন্ধে ফরাসি গবেষকদের একটি টিম দেখিয়েছে, স্বাস্থ্যবান তরুণদের মধ্যে দীর্ঘদিন সাদা ও রিফাইন্ড শর্করা খাওয়ার ফলে আশঙ্কাজনক কুপ্রভাব পড়েছে তাঁদের মস্তিষ্কের কার্যকারিতায়। এখানে ফ্রান্সের মন্টপেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী ৯৫ জন ছাত্র স্বেচ্ছায় এই সমীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।
তাদের একটি দলকে রিফাইন করা শর্করাযুক্ত খাবার খেতে দেওয়া হয়েছে রোজ। আরেকটি দলের জন্য বরাদ্দ ছিল হোলগ্রেন জটিল শর্করা যেমন লাল আটা আর লাল চাল। ওয়েশলার্স ডিজিট সিম্বল সাবস্টিটিউশন কগনিটিভ টেস্ট নামের এক স্বীকৃত টেস্টের আওতায় কিছু প্রশ্ন করা হতো তাদের রোজ। এই টেস্ট মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ও বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষমতা সম্পর্কে ধারণা দেয়। এ রকম প্রতিটি মিল বা একবেলার খাবারের ক্যালরির মান রাখা হয়েছে ৫০০।
এ গবেষণার ফলাফল থেকে দেখা যায়, জটিল শর্করা গ্রহণকারী টিমটি বুদ্ধির খেলায় অনায়াসে হারিয়ে দিচ্ছে দিনের পর দিন রিফাইন করা সাদা শর্করাযুক্ত খাবার খেতে থাকা তরুণদের দলটিকে।
ধারণা করা হচ্ছে, রক্তে হঠাৎ চিনির পরিমাণ বেড়ে গেলে মস্তিষ্ক অলসতা দেখায়। আর সরল, সাদা শর্করা যেমন সাদা রুটি আর সাদা ভাতের গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স বলে, এসব থেকে খুব দ্রুত রক্তে গ্লুকোজ শোষিত হয়। তাই এই গবেষণা দীর্ঘদিন ধরে এসব খাবার রোজকার খাদ্যতালিকায় থাকলে তা বুদ্ধিনাশ করতে পারে বললে অত্যুক্তি হবে না।
ছবি: পিকজেলসডটকম