প্রবাদটি একেবারে মুখে মুখে ফেরে যুগ যুগ ধরে: ‘রোজ একটি আপেল খেলে ডাক্তার থাকে দূরে’। নিজেদের রুজিরোজগারের সঙ্গে পুরো ব্যাপারটি সাংঘর্ষিক হলেও খোদ চিকিৎসকেরাই বিশ্বব্যাপী আপেলের স্বাস্থ্যগুণের বৃত্তান্ত দিয়ে আসছেন। আসলে সেভাবে ডাক্তারবাড়ি ছোটার সঙ্গে আপেলের সরাসরি সম্পর্ক না থাকলেও স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এই ফল খুবই কার্যকর।
কলার পরই বিশ্বের সর্বজনীন ও সুপরিচিত ফল আপেলের স্থান। প্রতিদিন আপেল খাওয়ার অভ্যাস থাকলে পাওয়া যাবে অনেক উপকারিতা। একটি মাঝারি আপেলে আছে ৯৫ ক্যালরি। এর মধ্যে শর্করা ২৫ গ্রাম, খাদ্য আঁশ ৪.৫ গ্রাম। ভিটামিন সি’র প্রাত্যহিক চাহিদার ৯ শতাংশ আসতে পারে একটি আপেল থেকে। আর দৈনিক চাহিদার ৫ শতাংশ কপার, ৪ শতাংশ পটাশিয়াম, ৩ শতাংশ ভিটামিন কে মেলে এ থেকে। ভিটামিন সি’র রোগ প্রতিরোধে কার্যকারিতার অনেক প্রমাণ রয়েছে। কোয়ের্সেটিন, ক্যাফেইক অ্যাসিড আর এপিক্যাটেচিনের মতো অপেক্ষাকৃত নব্য-আবিষ্কৃত অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের ভালো উৎস আপেল।
গবেষণায় দেখা গেছে, হৃদ্যন্ত্র ভালো রাখে আপেল। স্ট্রোকের প্রবণতা কমাতে নিয়মিত আপেল খাওয়ার ভূমিকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ধরা হয়, আপেলে উপস্থিত ফ্ল্যাভেনয়েডই প্রদাহ কমিয়ে হৃদ্রোগ প্রতিরোধে কাজ করতে পারে। যথেষ্ট পরিমাণে দ্রবণীয় খাদ্য আঁশ আছে বলে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও কোলেস্টেরলও কমায় আপেল।
বিভিন্ন গবেষণার ফলাফল দেখে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, ক্যানসার প্রতিরোধে আপেল নিয়মিত খাওয়ার বিষয়টি বেশ কার্যকর হতে পারে। বিভিন্ন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ফ্ল্যাভেনয়েড এখানে ভূমিকা রাখে। বিশেষত ফুসফুস ও কলোরেক্টাল ক্যানসারে এ ধরনের গবেষণার ফলাফল খুবই আশাব্যঞ্জক।
ফাইবার আর জলীয় অংশ থাকায় ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে আপেল সহায়ক। আপেল খেলে পেট ভরে অথচ ক্যালোরি গ্রহণ কম হয়। মিষ্টি খাবারের ক্রেভিং হলে ফলটি খাওয়া যেতে পারে তাই। ক্যালসিয়াম আছে বলে হাড়ের যত্নেও আপেল উপকারী। গবেষণার ফলাফল বলে, নিয়মিত আপেল খেলে স্ট্রেস কমে, মানসিক স্বাস্থ্য থাকে ভালো। দেহ-মনে তারুণ্য ধরে রাখতেও আপেলের জুড়ি নেই।
সূত্র: হেলথলাইন