শরীর হালকা করতে ডিটক্স ওয়াটার
শেয়ার করুন
ফলো করুন

শরীর থেকে টক্সিন বের করার একটি দুর্দান্ত উপায় হচ্ছে ডিটক্স ওয়াটার। দূষণকারী ও দূষিত পদার্থ থেকে মুক্তি দিয়ে শরীরকে হালকা করতে সাহায্য করে ডিটক্স ওয়াটার। এ জন্য এ পানীয়কে ‘মাস্টার ক্লেনস’ বলা হয়ে থাকে। ডিটক্স ওয়াটার অনেক ধরনের হয়ে থাকে। সবচেয়ে জনপ্রিয় পদ্ধতিগুলোর মধ্যে একটি হলো লেবুর রস ও পানি মিশিয়ে দিনে বেশ কয়েকবার পান করে উপবাস করা। এই ডিটক্স ওয়াটার শরীরের অঙ্গ ও অভ্যন্তরীণ সিস্টেমগুলোকে ‘পরিষ্কার’ করবে কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই।

বিজ্ঞাপন

কেন ডিটক্স করবেন?

আমাদের খাদ্যাভাস ও নানা ধরনের ভুল খাদ্যগ্রহণ, অধিক তেল, অধিক মসলা ও অধিক লবণ-চিনি খাওয়ার কারণে শরীর কষা হয়ে ওঠে, তাই কোষ্ঠকাঠিন্যসহ পেটে সৃষ্টি হয় নানা ধরনের সমস্যা। সেই সঙ্গে শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ে; রাতে ঘুমাতে যেমন কষ্ট হয়, তেমনি সকালে ঘুম থেকে উঠতেও কষ্ট হয়। খাওয়ার পর পেট ফুলে যায়, ক্ষুধামান্দ্য দেখা দেয়। রুচি নষ্ট হয়। সারা দিন ঝিমুনি লাগে। পেট পরিষ্কার হয় না। একাধিক বার টয়েলেটে যেতে হয়। এসব কারণে ওজন বেড়ে যায়, চেহারায় কালো ছাপ পরতে থাকে, ঘুম থেকে উঠলে মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হয়। এমন সমস্যা যাদের আছে, তারা ডিটক্স করে ফল পাবেন।

বিজ্ঞাপন

ডিটক্স ওয়াটারের উপকরণ

১টি মাঝারি সাইজের লেবু
এক চা-চামচ মধু
১০-১২টি পুদিনাপাতা

প্রণালি

অনেকভাবে ডিটক্স ওয়াটার বানানো যায়। এর মধ্যে সহজ পদ্ধতি হলো লেবু, কুসুম গরম পানি, মধু ও পুদিনাপাতা দিয়ে তৈরি করা। একগ্লাস কুসুম গরম পানিতে একটি মাঝারি সাইজের লেবুর রস, এক চা-চামচ মধু ও ১০ থেকে ১২টি পুদিনাপাতাকুচি মিশিয়ে নিতে হবে। আর সকালে ঘুম থেকে উঠে এক ঘণ্টা পরপর এই ডিটক্স ওয়াটার বানিয়ে পান করতে হবে। প্রতিবার খাওয়ার আগে বানাতে হবে। একবারে বানিয়ে রাখা যাবে না।

ডিটক্স ওয়াটার খাওয়ার নিয়ম

শরীর ডিটক্স করার অনেকগুলো নিয়ম আছে, তার মধ্যে ডে ফাস্টিং অনেক জনপ্রিয়। সারা দিন কোনো সলিড খাবার না খেয়ে শুধু এ ডিটক্স ওয়াটার দুই ঘণ্টা পরপর রাত আটটা পর্যন্ত পান করে থাকা; আর সেদিন অন্য কোনো কিছু না খেয়ে রাতে ঘুমিয়ে পড়া। পরের দিন সকালে অনুভব করা যাবে শরীর হালকা হয়ে গেছে। পেটের সমস্যা কমে গেছে, ব্যথা কমে গেছে। এ উপায়ে সপ্তাহে একদিন করে ৬ সপ্তাহ ডিটক্স করা যেতে পারে।

ডিটক্স ওয়াটারের নেপথ্য বিজ্ঞান

শরীরে ডিটক্সিফিকেশনের মধ্যে প্রস্রাব, ঘাম ও মল দিয়ে রক্ত আর অঙ্গগুলো থেকে ক্ষতিকারক পদার্থ অপসারণ করার বিষয় জড়িত। দেহের মধ্যে থাকা ক্ষতিকারক পদার্থ টক্সিন, অ্যালকোহল ও মাদকদ্রব্য থেকে গ্রহণ করা টক্সিন দূর করতেও সাহায্য করে। পানিতে নানা রাসায়নিক উপাদান থাকে; আমাদের দেহ সেগুলো আমাদের কোষে শোষণ করে; যা ঘাম, প্রস্রাব ও মলের মাধ্যমে প্রাকৃতিক নির্মূল প্রক্রিয়ায় অপসারিত হয়ে থাকে। ডিটক্স ওয়াটার শরীরকে বিষাক্ত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে; এর কিছু বৈজ্ঞানিক প্রমাণ আছে। ফলে ডিটক্স ওয়াটার হলো আপনার শরীর পরিষ্কার করার এবং ত্বকের স্বাস্থ্য ফেরানোর একটি দুর্দান্ত উপায়।

এ ছাড়া এটি ওজন কমানোর অনেক বেশি জনপ্রিয় রেসিপি। সুস্থতা থাকতেও সহায়তা করে। এ ছাড়া এতে লেবু থাকায় প্রচুর ভিটামিন সি শরীরে প্রবেশ করে, যা পাচনতন্ত্রকে বিষাক্ততা থেকে মুক্তি দেয় এবং শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখে। ডিটক্স ওয়াটার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতির পাশাপাশি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় ও চেহারায় কালো দাগ ও ছোপ দূর করতে সাহায্য করে। আবার অন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য পুদিনা বেশ কার্যকর।

আর পানিকে ডিটক্সিফাই করার সবচেয়ে ভালো দিক হলো এর জন্য কোনো বিশেষ সরঞ্জামের প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন ফিল্টার করা পানি, লেবুর রস, মধু ও পুদিনাপাতা—সবই প্রাকৃতিক উপাদান।

ছবি: সাইফুল ইসলাম

প্রকাশ: ০৯ মার্চ ২০২৩, ০৯: ০৯
বিজ্ঞাপন