উপমহাদেশে চা খাওয়ার চল শুরু হয় ব্রিটিশদের হাত ধরে আঠারো শতকে। চায়ের সঙ্গে দুধ মিশিয়ে দুধ চা বানানোর কৃতিত্বও কিন্তু ব্রিটিশদেরই। আর এই চা-ই এখন হয়ে উঠেছে আমাদের নিত্যদিনের সবচেয়ে প্রিয় পানীয়। একসময় চা বলতে শুধু দুধ চা–কেই বুঝত এ দেশিরা। তবে সময়ের সঙ্গে আরও বিভিন্ন চা জায়গা করে নিয়েছে আমাদের খাদ্যাভ্যাসে, যার মধ্যে অন্যতম হলো গ্রিন টি। মানবদেহে এর উপকারিতা ও ঔষধি গুণাগুণের জন্য দারুণ জনপ্রিয় সবুজরঙা এই চা।
প্রায় চার হাজার বছর আগে মাথাব্যথার ওষুধ হিসেবে চীনে গ্রিন টির ব্যবহার শুরু হয়েছিল। এরপর ধীরে ধীরে এই পানীয় ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। এই চায়ে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন এ, বি, ডি, ই, সি, ই, এইচ ক্রোমিয়াম, জিংক, ক্যাফেইন ও ম্যাঙ্গানিজ, ক্যালসিয়ামসহ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য উপকারী হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। এ ছাড়া রূপচর্চাতেও দেখা যায় গ্রিন টির ব্যবহার।
সাধারনত গ্রিন টিকে আমরা ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য কার্যকর পানীয় হিসেবেই চিনি। কিন্তু এছাড়াও গ্রিন টির রয়েছে বেশ কিছু উপকারিতা। এবারে এগুলো একনজরে দেখে নেওয়া যাক।
১. ঘুম থেকে উঠে আমাদের অনেকের চোখে ফোলা ভাব দেখা যায়, আবার বিভিন্ন কারণে চোখের নিচে পড়ে ডার্ক সার্কেল। গ্রিন টির ব্যাগ কিছুক্ষণ ফ্রিজে রেখে তা ১০ থেকে ১৫ মিনিট চোখ বন্ধ করে চোখে ব্যবহার করলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন সহজেই।
২. গ্রিন টি খুব ভালো টোনার হিসেবে কাজ করে, যা ত্বকের সতেজতা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। গরম পানিতে গ্রিন টি পাঁচ মিনিট ফুটিয়ে ঠান্ডা করলেই তৈরি হয়ে যাবে এই টোনার। এরপর টোনারটি সংরক্ষণ করতে পারেন স্প্রে বোতলে।
৩. ওজন কমানোর গুণের জন্য জনপ্রিয় গ্রিন টি। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, এই চা মেটাবলিজম বাড়িয়ে ফ্যাট বার্নে সহায়তা করে, যা ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই ওজন কমাতে নিয়মিত পান করুন গ্রিন টি।
৪. গ্রিন টিতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ত্বকে পড়া বার্ধক্যের ছাপ কমাতে সাহায্য করে।
৫. গ্রিন টি-কে ব্যবহার করা যায় স্ক্রাব হিসেবেও। গ্রিন টি ও মধু একটি বাটিতে মিশিয়ে তা ত্বকে স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এটি ত্বকের মৃত কোষ দূর করে উজ্জ্বলতা ফেরাতে সাহায্য করবে।
৬. ফ্রিজের দুর্গন্ধ দূর করতেও ব্যবহার করা যায় গ্রিন টি। গ্রিন টির কিছু ব্যাগ একটি পাতলা কাপড়ে বেঁধে ফ্রিজের এক কোনায় রেখে দিলে মুক্তি পাবেন ফ্রিজের গন্ধ থেকে।
৭. এক গবেষণায় দেখা যায়, নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমে ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৮. নিয়মিত গ্রিন টি পান মুখের দুর্গন্ধ দূর করে। এটি ওরাল ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে কার্যকর।
৯. গ্রিন টি পানে দূর হয় ব্রণের সমস্যা।
১০. এতে থাকা ভিটামিন সি সর্দিকাশি প্রতিরোধে সাহায্য করে।
তথ্যসূত্রঃ ভেরি ওয়েল ফিট
ছবিঃ পেকজেলস ডট কম
হিরো ইমেজঃ নাজমুন নাহার