হেমন্তকাল মানেজানাই শীতের হাতছানি। সারা দিন কড়া রোদ থাকলেও রাতের দিকে ঠান্ডা বাতাস জানান দেয় শীতের উপস্থিতি। আর এই ঋতু পরিবর্তনের সময়ে ঠান্ডা লাগা যেন এড়ানো যায় না কোনোভাবেই। গলাব্যথা, সর্দি, কাশি, গলা খুসখুস ভাবের মতো বিরক্তি ধরানো অসুখগুলো জেঁকে ধরে আমাদের। ছোটখাটো হলেও এই অসুখগুলো কাবু করে ফেলে খুব দ্রুত। ভোগান্তিও কম হয় না।
তবে আমাদের রান্নাঘরেই রয়েছে এমন কিছু উপাদান, যা উপশম করতে পারে আপনার এই খুসখুসজাতীয় সমস্যাগুলো। চলুন জেনে নিন রান্নাঘরের সেই টোটকাগুলো।
১. আদা
আদায় রয়েছে শক্তিশালী ঔষধি গুণ। গলাব্যথা, কাশি, গলা খুসখুস ভাব—এসব দূর করতে আদা খুবই কার্যকর। একটি এক-দেড় ইঞ্চি আদার টুকরা নিন। একটু ছেঁচে, অল্প আঁচে এক গ্লাস পানিতে সেদ্ধ করুন। ৫-১০ মিনিট ফুটিয়ে নিন। গরম গরম চুমুক দিয়ে খান। চাইলে নামানোর আগে একটু চা–পাতা দিয়ে ছেঁকে নিতে পারেন। মধু মিশিয়ে বানিয়ে নিন আদা চা। এ চা খেতেও দারুণ উপাদেয়। আর নিমেষেই আরাম দেয় গলাব্যথা, গলা খুসখুস থেকে।
২. লবণ
গলাব্যথা, গলা বসে যাওয়ার মতো সমস্যায় লবণ-পানিতে গার্গলের মতো আরাম আর কিছুতে পাবেন না। এক গ্লাস পানি গরম করে তাতে আধা চামচ লবণ মেশান। তারপর এক চুমুক পানি মুখে নিন, আর গার্গল করুন অন্তত ১০ সেকেন্ড সময় ধরে। দিনে ২-৩ বার গার্গল করুন। দেখবেন দু-এক দিনের মধ্যেই গলা খুসখুস কমে গেছে।
৩.মধু ও গোলমরিচ
গোলমরিচ আর মধুর মিশ্রণ হলো শতাব্দীপ্রাচীন এক টোটকা। আমাদের দাদি-নানিদের সময় থেকেই ঠান্ডা লাগার এক কার্যকরী ঘরোয়া চিকিৎসা এটি। ঠান্ডা লাগা, কাশি, গলা বসে যাওয়া, গলা খুসখুসের মতো সমস্যায় মধু-গোলমরিচের মিশ্রণ খুব ভালো কাজ করে। আবার এই দুই উপাদান সম্মিলিতভাবে কাজ করে বিভিন্ন সংক্রমণেরও বিরুদ্ধে।
৪.হলুদ
হলুদে রয়েছে কারকিউমিন নামের একটি পদার্থ। এটি আশ্চর্যজনকভাবে ক্ষত, ব্যথা সারিয়ে তুলতে পারে। হলুদ-দুধ তাই এক কার্যকরী ঘরোয়া টোটকা। একটি পাত্রে এক কাপ দুধ নিন। ১/৪ চামচ হলুদগুঁড়া যোগ করুন। ফুটিয়ে গরম গরম পান করুন। হলুদের কার্যকারিতা আরও ভালোভাবে পেতে কাঁচা হলুদ ফুটিয়ে নিন দুধে। একটু মিষ্টি স্বাদ আনতে মধু বা গুঁড় মিশিয়ে পান করুন।
৫. লেবু
লেবুতে রয়েছে উচ্চ মাত্রার ভিটামিন সি, যা রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস ও মধু মেশান। চুমুক দিয়ে ধীরে ধীরে খান এই পানীয়। গলা খুসখুসে আরাম পাবেন।
৬.লবঙ্গ
লবঙ্গে রয়েছে প্রদাহ দূর করার শক্তি। তাই গলাব্যথা, কাশির মতো সমস্যায় লবঙ্গ চিবিয়ে খেলে ব্যথা কমে। তবে চিবিয়ে খেতে না চাইলে গরম পানিতে ফুটিয়ে নিন ৫-১০ মিনিট। তারপর গরম গরম পান করুন।
৭.দারুচিনি
দারুচিনিতে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের সঙ্গে মোকাবিলার গুণ রয়েছে। একটি দারুচিনির টুকরা এক কাপ পানিতে সেদ্ধ করুন। তারপর আরও কিছুক্ষণ এটি পাত্রেই ঠান্ডা হতে দিন। উষ্ণ অবস্থায় পান করুন।
৮.আপেল সিডার ভিনেগার
আপেল সিডার ভিনেগার বেশির ভাগ মানুষ ওজন কমাতে গ্রহণ করে থাকেন। তবে ঠান্ডার সমস্যার সমাধানেও এর ভূমিকা রয়েছে। এক গ্লাস গরম পানিতে ২ চামচ আপেল সিডার মেশান। খালি পেটে উষ্ণ অবস্থায় চুমুক দিয়ে খান। গলা খুসখুস থেকে আরাম মিলবে।
তথ্যসূত্র: ভেরি ওয়েল ফিট
ছবি: পেকজেলস ডট কম ও আনস্প্ল্যাশ ডট কম