অল্প মাত্রার জ্বর সাধারণভাবে কোনো ক্ষতি করে না; বরং উপকারী। সে কারণে এ ধরনের অল্প মাত্রার জ্বর কমাতে ওষুধ সেবনের প্রয়োজন নেই। মনে রাখতে হবে, জ্বরে আক্রান্ত হওয়া মানবদেহের বিকাশের একটি প্রাকৃতিক অংশ, কারণ এটি যতবার হয়; শরীরের প্রতিরোধক্ষমতা তত শক্তিশালী হয়। জ্বর কোনো গুরুতর স্বাস্থ্যগত সমস্যার তাৎক্ষণিক লক্ষণ নয়, তবে যখন তাপমাত্রা খুব বেশি বেড়ে যায় বা অন্য লক্ষণগুলোর সঙ্গে আসে, তখন তা হতে পারে দুশ্চিন্তার বিষয়।
জ্বর কমানোর প্রধান উদ্দেশ্য শরীরকে স্বস্তি দেওয়া। তাপমাত্রা সম্পূর্ণভাবে স্বাভাবিক করে আনা প্রধান লক্ষ্য নয়। তবে জ্বর সহনীয় মাত্রার মধ্যে আনা গেলে তা যেমন স্বস্তি দেয়, তেমনি কিছুটা দুশ্চিন্তামুক্তও থাকা যায়।
১. ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ: আলো-বাতাসপূর্ণ ঘরে থাকতে হবে। ঘরে তাপমাত্রা ২১-২২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখা উচিত। যথাসম্ভব পাতলা কাপড়চোপড় পরিধান করতে হবে। সেই সঙ্গে শরীর আলতোভাবে ম্যাসাজ করা হলে তাপমাত্রা নেমে আসে।
২. শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ: জ্বর হলে শরীরে জলীয় পদার্থের প্রয়োজন বেড়ে যায়। জ্বরের মাত্রা ৩৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা থার্মমিটারের হিসেবে ৯৮.৯ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি থাকলে প্রতি ডিগ্রি জ্বর বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ৭ মিলিগ্রাম পানি শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। সে কারণে জ্বরের রোগীকে বেশি পরিমাণে পানি পান করানো ও তরল খাবার বারবার খাওয়ানো উচিত। বলা হয়, প্রতি ডিগ্রি তাপমাত্রা বাড়ার জন্য ১২ শতাংশ হারে জ্বলীয় পদার্থ শরীরে জোগানো উচিত।
৩. স্পঞ্জিং: অতিরিক্ত জ্বর কমিয়ে আনতে ঈষদুষ্ণ পানিতে মাথা থেকে পা পর্যন্ত শরীর মুছে দিতে হবে। ১৫ থেকে ২০ মিনিট এভাবে স্পঞ্জ করা হলে তাপমাত্রা কমে আসে।
৪. শর্ষের তেল ও রসুনের মালিশ: শর্ষের তেল ও রসুন একসঙ্গে মিশিয়ে মালিশ করলে উপকার পাওয়া যাবে। মালিশের মিশ্রণটি প্রস্তুত করতে দুই টেবিল চামচ শর্ষের তেল নিন এবং মাইক্রোওয়েভ ওভেন বা চুলায় ৩০ সেকেন্ড ধরে গরম করুন। এর সঙ্গে এক চা-চামচ রসুনের পেস্ট যোগ করুন এবং ভালোভাবে মেশান। উত্তাপ মূলত তেলের সঙ্গে পেস্টটিকে মিশ্রিত করতে সহায়তা করে। এবার মিশ্রণটি প্রায় দুই মিনিট রেখে দিন যতক্ষণ না সেটি ঘরের তাপমাত্রায় ফিরে আসে। এখন এই মিশ্রণ দিয়ে বুক, পিঠ, ঘাড়, হাতের তালু ও পায়ের তালুতে মালিশ করলে উপকার পাওয়া যাবে।
কখন চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে: শরীরের তাপমাত্রা যদি ১০২.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট অথবা তার চেয়ে বেশি হয়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ছবি: পেকজেলসডটকম