যে ৪ লক্ষণ দেখলে অবশ্যই এই টেস্ট করা উচিত
শেয়ার করুন
ফলো করুন

আমাদের দেশে নারীর মাসিক, প্রজননস্বাস্থ্য আর গর্ভাবস্থা—সবই যেন সামাজিক ট্যাবু। তাই সংকোচ বা দ্বিধার কারণে নারীরা গর্ভধারণের সম্ভাবনা থাকলেও প্রেগন্যান্সি টেস্ট করতে অনেক দেরি করেন। এ সময়ের মাঝে অসাবধানতার কারণে হয়তো ঘটে যেতে পারে কোনো দুর্ঘটনা।

আবার নিশ্চিত না হওয়ায় মা ও গর্ভস্থ শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা আর যত্ন না নেওয়ায় তাদের দুজনেরই অপুষ্টি বা যেকোনো শারীরিক সমস্যা ঘটতে পারে। এখন সময় এগিয়ে গেছে অনেকটাই। এ জন্য নারীর নিজেরই নিজের শরীরের সব ধরনের যত্ন এবং এ ব্যাপারে দ্বিধাহীন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অত্যাধুনিক আর সুলভ প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট কিনে নিজেই পরীক্ষা করতে হবে দেরি না করে। আর গর্ভাবস্থা নারীর একার দায় নয় কোনোমতেই। তাই অনাগত সন্তানের বাবা অর্থাৎ সঙ্গীটিকেও এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

বিজ্ঞাপন

কখন টেস্ট করবেন

এখন অত্যাধুনিক কিটের মাধ্যমে পিরিয়ড মিস করার প্রথম দিনেই টেস্ট করে বলা যায় আপনি গর্ভবতী কি না। তবে সবচেয়ে নির্ভুল ফল পাবেন পিরিয়ড মিস করার ঠিক এক সপ্তাহ পর টেস্ট করলে। খুব আগে আগে এই টেস্ট করলে সঠিক ফলাফল পাওয়া যাবে না। কারণ, এখানে প্রস্রাবে উপস্থিত এইচসিজি হরমোনের লেভেল মেপেই রেজাল্ট দেওয়া হয়। এ হরমোন একমাত্র গর্ভাবস্থায় প্রস্রাবের সঙ্গে নির্গত হয়। নিষিক্ত ডিম্বাণু যখন জরায়ুর ভেতরে দেয়ালে আটকে যায়, তখনই এ হরমোনের নিঃসরণ ঘটে থাকে।

সাধারণত ইমপ্ল্যান্টেশন নামের এই প্রক্রিয়া মিলনের ১০ দিন পরে সংঘটিত হয়। আর এর পর থেকে ষষ্ঠ দিন থেকেই এইচসিজি হরমোন পাওয়া যায় প্রস্রাবে। কিন্তু তার পরিমাণ যৎসামান্য হলে টেস্টের রেজাল্ট সঠিক না–ও হতে পারে। তাই ইমপ্ল্যান্টেশনের ৭ থেকে ১০ দিন পর বা মিলনের মোটামুটি ১৭ থেকে ২০ দিন পর টেস্ট করলে আপনি ঠিকঠাক ফল পাবেন। আপনার মাসিক চক্র যদি অনিয়মিত হয়, আর আপনি যদি না জানেন যে কবে পিরিয়ড হবে, সে ক্ষেত্রে কোনো ব্যবস্থা ছাড়া মিলন হলে তার ২১ দিন পার হওয়ার পর প্রেগন্যান্সি টেস্ট করলে ভালো।

বিজ্ঞাপন

যে লক্ষণগুলো দেখলে অবশ্যই প্রেগন্যান্সি টেস্ট করতে হবে

গর্ভাবস্থার একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এগুলোর কোনোটি নিজের মধ্যে লক্ষ করলে অবশ্যই প্রেগন্যান্সি টেস্ট করতে হবে।

১. আপনি পিরিয়ডের তারিখ মিস করেছেন

এটিই আসলে গর্ভাবস্থার সবচেয়ে প্রাথমিক লক্ষণ, যা শরীরে প্রকাশ পায়। যদি আপনি প্রতি মাসে মাসিকের তারিখ খেয়াল না করেন, তবে অবশ্য আপনার জন্য কঠিন হবে বিষয়টি। তবে এক মাসের বেশি সময় চলে গেলে ভেবে দেখতে হবে। প্রেগন্যান্সি ছাড়াও স্ট্রেস আর বিভিন্ন ওষুধের প্রতিক্রিয়ায় মাসিকের অনিয়ম হতে পারে। আবার গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে হালকা রক্তস্রাব বা রক্তের ফোঁটা আসাও অস্বাভাবিক নয়।

২. আপনার তলপেটে মাসিকের মতোই ব্যথা হচ্ছে

মাসিকের সময়ের মতো ক্র্যাম্প অনুভূত হলে তা সম্ভাব্য গর্ভধারণের লক্ষণ হতে পারে। পিরিয়ড শুরু হবে এ রকম অস্বস্তিকর অনুভূতি বোধ করতে পারেন এ সময়।

৩. স্তনে ব্যথা করলে

গর্ভাবস্থায় যত দিন যায়, শরীর অ্যাস্ট্রোজেন আর প্রজেস্টেরন হরমোন উৎপন্ন করতে থাকে। এই হরমোনগুলো শরীরে নানা ধরনের পরিবর্তন আনে। আর সেই সঙ্গে এগুলোর প্রভাবে স্তনে ব্যথা হতে পারে।


৪. বিভিন্ন শারীরিক অস্বস্তি
রোজ সকালে উঠে বমি বা বমিভাব, ক্লান্তি, ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া ইত্যাদি হতে থাকলে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করে ফেলা ভালো। শরীরে এইচসিজি হরমোনের পরিমাণ একটি ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় না আসা পর্যন্ত এমন হতে পারে।

তথ্যসূত্র: হেলথলাইন

ছবি: পেকজেলস ডট কম

প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১: ১৫
বিজ্ঞাপন