ফ্লুতে কাবু হতে না চাইলে যা করতে হবে
শেয়ার করুন
ফলো করুন

এই সময়ে বর্ষার শেষে আমাদের এখানে ফ্লু হওয়া সাধারণ বিষয়। পৃথিবীর সব জাতিতেই এমন ঋতুর কারণে ফ্লু হয়ে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর বিশ্বের জনসংখ্যার শতকরা প্রায় ৯ ভাগ মানুষ ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এতে বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ১০০ কোটি মানুষ সংক্রমণের শিকার হয়, যাদের মধ্যে ৩০ থেকে ৫০ লাখ মানুষের সংক্রমণের মাত্রা তীব্র হয়ে থাকে। আর ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে প্রতিবছর সারা বিশ্বে তিন থেকে পাঁচ লাখ মানুষ মারা যায়। আমাদের ষড়্‌ঋতুর দেশে ছয়টি ফ্লু আক্রমণ হয়, বর্ষা ও শীত—এই দুই ঋতু শেষে এটা তীব্র হয়।

আমাদের দেশে এই সময়ে ফ্লু হয়ে থাকে
আমাদের দেশে এই সময়ে ফ্লু হয়ে থাকে

ফ্লু হলো ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট একটি অত্যন্ত সংক্রামক অসুখ; এতে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ হয়। ফ্লুর লক্ষণগুলো সাধারণত প্রায় এক সপ্তাহ স্থায়ী হয়ে থাকে। তবে সবচেয়ে গুরুতর লক্ষণগুলো কেবল দুই থেকে তিন দিনের জন্য দেখা যায় যেমন জ্বর, কাশি, গলাব্যথা ও গায়ে ব্যথা।

বিজ্ঞাপন

ফ্লু হলে আমরা যা করতে পারি

গরমপানি লবণ দিয়ে গার্গল করলে উপকার হবে
গরমপানি লবণ দিয়ে গার্গল করলে উপকার হবে

যাঁদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ভালো, তাঁরা সাধারণ ফ্লুতে আক্রান্ত হন না; কিন্তু বাচ্চাদের আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বেশি হয়ে থাকে। ফ্লু দ্রুত কাটিয়ে ওঠার সর্বোত্তম উপায় হলো বিশ্রাম নেওয়া এবং হাইড্রেটেড থাকা। কিছু অতিরিক্ত পরিচর্যা রয়েছে, যা অনুসরণ করে আপনি নিজেকে আরও ভালো রাখার চেষ্টা করতে পারেন। ফ্লু ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আপনার শরীরের সময় ও শক্তি প্রয়োজন, যার অর্থ হলো আপনার দৈনন্দিন রুটিন রাখা উচিত। যেমন প্রতিদিন সকালে বাইরে যাওয়ার আগে গরমপানি লবণ দিয়ে গার্গল করা, ঠিক তেমনি বাসায় ফিরে আবার গার্গল করা।

যদি ফ্লুতে আক্রান্ত হয়েই যান, তাহলে প্রথমে শরীরটাকে হাইড্রেটেড রাখা। ফ্লুর একটি উপসর্গ হলো উচ্চ জ্বর, যা ঘাম হতে পারে। বমি বা ডায়রিয়া হতে পারে; তাই আপনার শরীরের হারানো তরল প্রতিস্থাপনের জন্য প্রচুর পরিমাণে তরল প্রয়োজন এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্যই শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা আবশ্যক।

বিজ্ঞাপন

 এতে কুসুম গরমপানি সবচেয়ে ভালো, তবে আপনি মধু দিয়ে গ্রিন টি পান করতে পারেন। আপনাকে হাইড্রেটেড রাখার সময় এগুলো আপনার উপসর্গগুলোতে প্রশান্তিদায়ক প্রভাব ফেলতে পারে। আর দুটি জিনিস আপনার সব সময় এড়ানো উচিত—প্যাকেটজাত ও বাইরের কেনা খাবার, দুধজাতীয় সব খাবার, সঙ্গে দুধ চা–ও।

 মধু দিয়ে গ্রিন টি পান করা যেতে পারে
মধু দিয়ে গ্রিন টি পান করা যেতে পারে

ফ্লুর বিরুদ্ধে লড়াই করার সময় আপনার শরীরের জন্য ঘুম হলো সেরা ওষুধ। খাটে কুঁকড়ে বসে টিভি দেখা কোনো খারাপ কিছু নয়, তবে সারা রাত ধরে আপনার জেগে কিছু দেখা বা প্রিয় কেনা শোটি দেখা উচিত নয়।

বন্ধ নাক ও কাশি থাকার কারণে ঘুমানো কঠিন হতে পারে। সহজে শ্বাস নিতে এবং রাতে ভালো ঘুম পেতে এই পরামর্শ মেনে চলতে পারেন।

ফ্লু হলে এই সিরাপ বানান

 ১ টেবিল চামচ আদার রস,
 ১ টেবিল চামচ পেঁয়াজের রস
 ১ টেবিল চামচ লেবুর রস
 ১ টেবিল চামচ হলুদের গুঁড়া (তবে বাজারের হলুদগুঁড়া হলে হবে না)
 ২ টেবিল চামচ মধু ও
 ৫/৬টি গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে একটা সিরাপ তৈরি করুন।

সেই সিরাপ থেকে এক চা–চামচ এক কাপ কুসুম গরমপানিতে মিশিয়ে চায়ের মতো পান করুন, দিনে তিন বেলা গরম পানি মিশিয়ে খাবেন। এতে কফ বের হবে, গলাব্যথা কমে যাবে, কাশি কমে যাবে, বুকে জড়তা কমে যাবে, নাক পরিষ্কার হয়ে যাবে, ঘুম ভালো হবে। এটা তিন দিন করুন, প্রতিদিন তৈরি করতে হবে এই সিরাপ। খাওয়ার পরে যদি থেকে যায়, তা ফেলে দিন। পরের দিন নতুন করে তৈরি করুন।

ফ্লুতে তাজা ফল খাওয়া উচিৎ
ফ্লুতে তাজা ফল খাওয়া উচিৎ

ফ্লুর সময় তাজা ফল আনারস, আমড়া, লটকন, পেয়ারা খুব ভালো এবং সবজি সেদ্ধ বা স্যুপ গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট সরবরাহ করে, যা আপনার রোগ প্রতিরোধ সিস্টেমকে শক্তিশালী করে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এই সময় আপনার খুব বেশি ক্ষুধা না–ও থাকতে পারে, তবে আপনার শক্তি বজায় রাখতে নিয়মিত খাবার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

ছবি: পেকজেলসডটকম

প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৩, ১৬: ০০
বিজ্ঞাপন