ব্লাডপ্রেশার লো হয়ে গেলে কী খাবেন
শেয়ার করুন
ফলো করুন

শরীরের সুস্থতার জন্য ব্লাডপ্রেশার বা রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখা অত্যন্ত জরুরি একটি বিষয়। কারণ, ব্লাডপ্রেশার বেড়ে বা কমে গেলে সেখান থেকে দেখা দিতে পারে নানা ধরনের অসুস্থতা। আমাদের শরীরের জন্য উচ্চ রক্তচাপ যেমন একটি আতঙ্কের বিষয়, তেমনি নিম্ন রক্তচাপ অর্থাৎ লো ব্লাডপ্রেশারও অত্যন্ত ক্ষতিকর ও ভয়ের কারণ হতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে ডেঙ্গু ও ভাইরাল জ্বরের প্রভাবে রক্তচাপ যাতে কমে না যায়, সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে বলছেন চিকিৎসকেরা।

সাধারণত দেহে সিস্টোলিক রক্তচাপ ৯০ মিলিমিটার পারদ ও ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ ৬০ মিলিমিটার পারদের নিচে হলে তাকে হাইপোটেনশন বা নিম্ন রক্তচাপ বলা হয়। দেহে রক্তশূন্যতা, পানিশূন্যতা, অতিরিক্ত পরিশ্রম, দুশ্চিন্তা, ভয় ও স্নায়বিক দুর্বলতা থেকে নিম্ন রক্তচাপ হতে পারে। রক্তচাপ যদি খুব বেশি নেমে যায়, তাহলে মস্তিষ্ক, কিডনি ও হৃৎপিণ্ডে সঠিকভাবে রক্ত প্রবাহিত হতে পারে না। ফলে অসুস্থতা দেখা দেয়। অবস্থা বেগতিক হলে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।

বিজ্ঞাপন

 নিম্ন রক্তচাপ বা হাইপোটেনশনের কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। লো ব্লাডপ্রেশারের উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে। জীবনধারার পরিবর্তন ও নিয়মিত সঠিক খাদ্যগ্রহণের ফলে নিম্ন রক্তচাপের সমস্যাকে একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রাখা সম্ভব। বেশ কিছু ধরনের খাবার আছে যেগুলো নিয়মিত গ্রহণ করলে নিম্ন রক্তচাপ বা লো ব্লাডপ্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

লো ব্লাডপ্রেশারের রোগীদের সঠিক সময়ে খাওয়াদাওয়া করা সবচেয়ে জরুরি। প্রতিনিয়ত ভারী খাবারের পাশাপাশি অন্যান্য খাবারও খেতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দিনে তিনবার ভারী খাবার খাওয়ার চেয়ে পাঁচবার অল্প অল্প করে খাওয়া বেশি উপকারী।

বিজ্ঞাপন

পানি ও তরলজাতীয় খাবার বেশি গ্রহণ করতে হবে

শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিলে বা দেহ থেকে অতিরিক্ত পানি বেরিয়ে গেলে রক্তচাপ নেমে যেতে পারে। এই সমস্যা দূর করতে নিয়ম করে প্রতি ঘণ্টায় পানি পান করে দেহকে হাইড্রেটেড রাখা আবশ্যক। এ ছাড়া প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল খাবার যেমন ফলের রস, স্যুপ, ডাল ও স্বাস্থ্যকর শরবত রাখতে হবে।

ভিটামিন বি-১২ সমৃদ্ধ খাবার বেশি খেতে হবে 

খাদ্যতালিকায় ভিটামিন বি-১২ সমৃদ্ধ খাবার কম থাকলে রক্তস্বল্পতার আশঙ্কা দেখা দেয়। তা থেকেও রক্তচাপ কমে যেতে পারে। এ সমস্যা এড়াতে ডিম, মুরগির মাংস, দই, গরুর কলিজা, স্যামন মাছ ইত্যাদি খাওয়া উপকারী। এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি-১২ রয়েছে। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এগুলো থেকে অন্তত যেকোনো একটি খাবার রাখার চেষ্টা করুন।

ফোলেটসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে

দেহে ফোলেট–সমৃদ্ধ খাবার অন্যান্য উপকারের পাশাপাশি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। লেবুজাতীয় ফল, শাক, মেটে আলু, মসুর ডাল এবং সেদ্ধ ডিম ফোলেট–সমৃদ্ধ খাবার। রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এই খাবারগুলো অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এ ছাড়া সোডিয়াম, আয়রন ও পটাশিয়াম–সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে হবে। লালশাক, পালংশাক, কচুশাক, মিষ্টিকুমড়ার বিচি এগুলোর ভালো উৎস।

লবণযুক্ত খাবার খান

 লবণসমৃদ্ধ খাবার রক্তচাপ স্বাভাবিক করতে সহায়তা করে। গবেষণা থেকে জানা যায়, খাদ্যে লবণের সঠিক ব্যবহার করলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি হার্ট ও রক্তনালির রোগের ঝুঁকিও কমে। মাঝে মাঝে সামুদ্রিক মাছ, কৌটাজাত স্যুপ, কটেজ চিজ, স্মোকড ফিশ ও আচার খাওয়ার চেষ্টা করুন। এগুলো বেশ ভালো লবণসমৃদ্ধ খাবার।

ক্যাফেইন গ্রহণ করুন

বিশেষজ্ঞদের মতে, হঠাৎ ব্লাডপ্রেশার কমে গেলে চা অথবা কফি পান করা এই সমস্যা দূর করার একটি কার্যকর উপায়। ক্যাফেইন আমাদের কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমকে উদ্দীপ্ত করে এবং হৃদ্‌স্পন্দন বৃদ্ধি করে, যা রক্তচাপ বাড়াতে  সাহায্য করে। নিয়মিত পরিমিত পরিমাণে চা-কফি পানের অভ্যাস নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা এড়াতে কার্যকর।

তথ্যসূত্র: হেলথলাইন

ছবি: পােকজেলসডটকম

প্রকাশ: ২৬ আগস্ট ২০২৩, ১৬: ০০
বিজ্ঞাপন