কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি আমরা। পড়াশোনা, খেলাধূলা, ঘোরাঘুরি, আড্ডা, ভ্রমণ, বন্ধুরা মিলে হ্যাং আউট বা প্রিয়জনের সঙ্গে একান্তে সময় কাটানোসহ সব কিছুই বন্ধ বলতে গেলে। এমন সময়ে জীবনের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কর্মস্পৃহা হারিয়ে ফেলে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছি আমরা। যা স্থায়ী মানসিক ক্ষতির কারণ হতে পারে। আপনার যদি ঠিক এমনই অনুভূত হয়, তাহলে এই স্থবির জীবনকে ‘না’ বলতে আজ থেকেই অনুসরণ করুন কিছু বিষয়।
১. ভার্চ্যুয়াল দুনিয়ার দুর্নিবার আকর্ষণে আমরা প্রতিনিয়তই খেই হারাচ্ছি। যেন সবাই আজ সোশ্যাল মিডিয়ার দাস। তাই প্রথমেই সোশ্যাল মিডিয়ায় অতিরিক্ত সময় অতিবাহিত করা থেকে বিরত থাকতে হবে। দিনের কতটুকু সময় সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করবেন, এটা নিয়ে আপনাকে একটি কঠোর নিয়ম তৈরি করতে হবে।
২. সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বিরত থাকলে সময় কাটাব কীভাবে? এমন প্রশ্ন অনেকের মনেই আসতে পারে। এ ক্ষেত্রে জীবনে নতুন কিছুকে স্বাগত জানান। এটি হতে পারে আপনার যেকোনো পছন্দের কাজ, নতুন কোনো স্কিল ডেভেলপমেন্ট অথবা ট্রাভেলিং। নতুন নতুন অভিজ্ঞতা আপনার জীবনকে প্রফুল্ল ও অর্থবহ করে তুলবে। মোটকথা, অভিজ্ঞতা অর্জনে ‘না’ বলা থেকে নিজেকে সরিয়ে আনুন।
৩. প্রতিদিন একই রুটিনে আবদ্ধ হওয়া থেকে বেরিয়ে আসুন। প্রতিটি নতুন দিন আপনার জন্য একেকটি নতুন সুযোগ। আমাদের অনেকেই আছেন, যাঁরা সারা রাত সোশ্যাল মিডিয়ায় আকটিভ থেকে ভোররাতে ঘুমাতে যান এবং দুপুরে ঘুম থেকে ওঠেন। এ অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে। সবকিছুর শুরুটা সুন্দর করতে পারলে শেষটাও সুন্দর হয়। তেমনি দিনের শুরুটাকে যদি আপনি সুন্দর করে শুরু করতে পারেন, তাহলে অন্যসব কাজকর্মে বাড়তি উদ্যম যোগ হবে।
৪. জীবনে ছন্দ ফিরিয়ে আনতে অতিরিক্ত ভাবনা ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত থাকতে হবে। দুশ্চিন্তা করা একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, কিন্তু কখন এ দুশ্চিন্তা অহেতুক ও অতিরিক্ত হয়ে যাচ্ছে, সেটা বুঝতে হবে। বারবার একই বিষয় নিয়ে চিন্তা করা, একই সিদ্ধান্তকে প্রশ্নবিদ্ধ করা—এগুলোই অহেতুক দুশ্চিন্তার লক্ষণ। জীবন থেকে একঘেয়েমি দূর করতে ইতিবাচক ও গঠনমূলক চিন্তাধারার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
৫. একঘেয়েমি কাটাতে নিজের যত্ন নিন। প্রতিদিন আট ঘণ্টা ঘুমানো, আট গ্লাস পানি পান করা, কাজের ফাঁকে ফাঁকে একটু করে হাঁটা, ঘুমানোর আগে চুলটা বেঁধে ঘুমানো, সকালের রোদে অন্তত ১০ মিনিট থাকা ইত্যাদির অভ্যাস গড়ে তুলুন। শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে প্রতিদিন ব্যায়াম ও মেডিটেশন করুন। প্রাত্যহিক রুটিনে সেলফ কেয়ারের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে সবার আগে।
৬. স্থবিরতা থেকে জীবনকে মুক্তি দিতে কঠোর পরিশ্রম করুন এবং নিজেকে উৎসাহ দিন। ‘আমি পরিশ্রম করেছি, তাই আমি পারব’ কিংবা ‘এত দিন হেলাফেলা করেছি, কিন্তু এখন থেকেই সর্বোচ্চ চেষ্টা করলে আমি সফল হব’—এ ধরনের কথা বলে নিজেকে উদ্বুদ্ধ করুন। সফল হলে নিজেকে বাহবা দিন আর ব্যর্থ হলে নিজেকে সান্ত্বনা দিন। ‘এবার হয়নি তো কী হয়েছে, এর পরেরবার হবে’—এভাবে উৎসাহ দিন নিজেকে। নিজের পিঠ চাপড়াতে শিখুন।
তথ্যসূত্র: হ্যাকস্পিরিট ডটকম