এক দিকে লোডশেডিংয়ের দৈনিক দৌরাত্ম্য, আরেক দিকে মাস শেষে বিলের বোঝা। দেশে এখন বিদ্যুৎ সাশ্রয় নিয়ে ঘরে-বাইরে নানা পরিকল্পনা চলছে। এ জন্য বাসার পাওয়ার হাউস ও ব্যস্ততম স্থান রান্নাঘর থেকেই বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের ব্যাপারে বিরাট পরিবর্তনের সূচনা হতে পারে। রান্নাঘরের কাজ করতে রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজার অপরিহার্য। আর ফ্রিজের স্মার্ট ব্যবহারের মাধ্যমেই কিন্তু বিদ্যুৎ বিল অনেকটাই বাঁচানো যায়। ফ্রিজের কার্যকর ব্যবহারের টিপস এবার দেখে নেওয়া যেতে পারে।
ফ্রিজে খাবার রাখার সময় প্রতিটি খাদ্যবস্তু ৫-৮ সেন্টিমিটার দূরত্বে রাখা উচিত, যাতে ফ্রিজের ভেতর বাতাস চলাচল সুষ্ঠুভাবে হতে পারে। গাদাগাদি করে খাবার রাখলে ফ্রিজের ভেতরের বাতাস সঠিক উপায়ে চলাচল করতে পারে না। এতে ফ্রিজের কম্প্রেসরের ওপর চাপ পড়ে এবং বিদ্যুৎ বেশি খরচ হয়। আবার কম পরিমাণ খাবার রেখে ফ্রিজের দরজা খুললেই ঠান্ডা বাতাস বের হয়ে যাওয়ায় রেফ্রিজারেটরকে পুনরায় বাতাস ঠান্ডা করার কাজটি করতে হয়। ফ্রিজে খাবার রাখার আদর্শ নিয়ম হলো ২৫ ভাগ খালি থাকবে এবং ৭৫ ভাগ ভরা থাকবে।
ফ্রিজের দরজার সিল ঠিক থাকলে ভেতরের তাপমাত্রাও ঠিক থাকে। তাই দরজা সঠিকভাবে আটকায় কি না তা লক্ষ রাখা দরকার। রেফ্রিজারেটরের দরজার মধ্যে একটি কাগজ রেখে দরজা লাগালে যদি কাগজটি পড়ে যায়, তাহলে বুঝতে হবে সিল সঠিকভাবে কাজ করছে না। তাই হয়তো খাবারও সহজে ঠান্ডা হচ্ছে না। এমন হলে ফ্রিজারে বরফ জমতে থাকে বেশি বেশি।
ফ্রিজের টেম্পারেচার রেগুলেটর মাসে একবার পর্যবেক্ষণ করা উচিত। মাঝে মাঝে কয়েল পরিষ্কার করানো উচিত।
রেফ্রিজারেটর থেকে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের আরেকটি উপায় হলো, ফ্রিজ থেকে কী কী নামাতে হবে এবং ফ্রিজে কী কী রাখতে হবে, তা আগেই নির্ধারণ করে রাখা। এতে ফ্রিজের দরজা বেশিক্ষণ খোলা রাখতে হবে না। ঠান্ডা বাতাসও বের হয়ে যাবে না। প্রয়োজনে বাক্স ও প্যাকেটের গায়ে লেবেল দিয়ে ভেতরে কী আছে লিখে রাখা যায়। এতে দরকারি জিনিস সহজেই খুঁজে পাওয়া যাবে।
আধুনিক প্রযুক্তির রেফ্রিজারেটরে এনার্জি সেভিং মোড এবং লম্বা ছুটিতে কোথাও গেলে সে জন্য ভ্যাকেশন মোড থাকে। এগুলো তুলনামূলক বিদ্যুৎ বাঁচায় ও খরচ কমায়।
অনেক সময় দেখা যায়, আমরা ডিম, দুধ বা সহজে নষ্ট হয়ে যায়, এমন খাবার ফ্রিজের দরজার তাকে রাখি। এটা না করাই ভালো; কারণ, দরজা বারবার খোলা হলে এই খাবারগুলোর তাপমাত্রা বারবার পরিবর্তন হয়। ফলে জিনিসগুলো নির্দিষ্ট সময়ের আগেই নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই এ জায়গায় তাড়াতাড়ি নষ্ট হয় না এমন বা প্রিজারভেটিভযুক্ত খাবার যেমন আচার, সস ইত্যাদি রাখা যায়।
সূত্র: অ্যাপার্টমেন্ট থেরাপি, গুড হাউসকিপিং
ছবি: পেকজেলসডটকম