৬ ধাপে সাজান বই পড়ুয়াদের মনের মতো রিডিং কর্নার
শেয়ার করুন
ফলো করুন

সব ব‌ই পড়ুয়ার‌ই স্বপ্ন থাকে, বাড়িতে একটা একান্ত জায়গা থাকুক, যেখানে আরাম করে বই পড়া যায়। কিন্তু এখনকার বাসাবাড়িতে প্রয়োজনের বাড়তি একটু জায়গাও থাকে না। তাই বলে কি বই পড়ুয়াদের নিজের ব‌ই পড়ার জায়গার শখ পূরণ হবে না? এখন ইন্টেরিয়র ডিজাইন নিয়ে বিস্তর গবেষণা হয় আর তার বেশির ভাগই সীমিত জায়গার কার্যকর ও বহুমুখী ব্যবহার নিয়ে। তাই বাসা ছোট হলেও চিন্তা নেই। যেকোনো ঘরের কোণে অল্প একটু জায়গা নিয়েই তৈরি করা সম্ভব মনের মতো রিডিং কর্নার। এতে বইপোকাদের একটা নিজস্ব পড়ার জায়গা যেমন হবে, তেমনি ঘরও দেখাবে সুন্দর।

চলুন জেনে নেওয়া যাক ৬টি ধাপে কীভাবে তৈরি করবেন এই রিডিং কর্নার।

১. সঠিক জায়গা নির্বাচন করুন

প্রথমে আপনাকে রিডিং কর্নার বানানোর জন্য একটা জায়গা নির্বাচন করতে হবে। সেটা হতে পারে আপনার লিভিং রুম, বেড রুম বা দুই ঘরের মাঝে কোনো অব্যবহৃত জায়গা। এমন একটি জায়গা নির্বাচন করুন, যেখানে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস চলাচল করে। এ জন্য জানালার কাছের কোনো স্থান হলে সবচেয়ে বেশি ভালো হয়। এতে দিনের বেলা বই পড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রাকৃতিক আলো-বাতাস উপভোগ করতে পারবেন।

বিজ্ঞাপন

২. বই রাখার অনুষঙ্গ নির্বাচন

ব‌ই রাখার জন্য ছোট কোনো বুকশেলফ বেছে নিন। একটু আধুনিকত্ব আনতে চাইলে নিজের মতো করে দেয়ালে ঝোলানো তাক বা বসার জন্য যে আসবাব আছে, তাতে তাক যোগ করে বানিয়ে নিতে পারেন মাল্টি পারপাস ফার্নিচার। এ ছাড়া ব‌ই রাখার জন্য বেত বা পাটের তৈরি ঝুড়ি (বড় ও মাঝারি মাপের), এমনকি পুরোনো দিনের সিন্দুক বা ট্রাংকও ব্যবহার করতে পারেন। বই রাখার তাক, ঝুড়ি বা বাক্স নিজের রুচি অনুযায়ী রং করে নিলে তা দেখাবে আরও সুন্দর। আবার ট্রাংকে বই রাখলে এর উপরিতলকে টেবিল বা বসার জায়গা হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। এতে ঘরের জায়গাও বাঁচবে।

৩. আরামদায়ক বসার জায়গা বেছে নিন

বুক কর্নার তৈরির ক্ষেত্রে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এমন কোনো চেয়ার, সোফা বা ডিভান বেছে নিন, যেটায় বসার জায়গা পর্যাপ্ত এবং তা নরম ও আরামদায়ক। তবে সোফা বা চেয়ারটি যেন সিঙ্গেল সিটের হয়। কারণ, বইপোকাদের বই পড়ার সময়টুকু তাঁর একান্ত নিজের। আপনি চাইলে ছোট ম্যাট্রেসও ব্যবহার করতে পারেন। বসার জায়গা আরেকটু আরামদায়ক করতে সেখানে নরম বালিশ, চাদর বা নকশা করা কাঁথা যোগ করতে পারেন। চেয়ারের পরিবর্তে নতুনত্ব আনতে চাইলে ঝুলন্ত দোলনা, ঘরে ঝোলানোর হ্যামক বা সুইং চেয়ারও ব্যবহার করতে পারেন।

বিজ্ঞাপন

৪. কফি পানের ব্যবস্থা

দীর্ঘক্ষণ বই পড়লে আমাদের অনেকেরই একটু চা-কফি পান করতে মন চায়। তাই চেয়ারের পাশে একটি ছোট্ট স্ট্যান্ডে চা-কফি তৈরি করার ব্যবস্থা রাখতে পারেন। যেমন ইলেকট্রিক কেটলি, ইনস্ট্যান্ট কফির প্যাকেট, টি–ব্যাগ, পানির বোতল বা জগ, ছোট বয়ামে চিনি, গুঁড়া দুধ। আপনার পছন্দের কাপ বা মগের সংগ্রহ থাকলে তা প্রদর্শনের সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান এই কফি স্টেশন।

৫. ল্যাম্পশেড ব্যবহার করুন

রাতে নিরিবিলি বই পড়ার জন্য একটি স্ট্যান্ডযুক্ত ল্যাম্পশেড ব্যবহার করতে পারেন। এটি চেয়ারের পাশে এমন ভাবে রাখবেন, যাতে শুধু বইয়ের ওপর আলো পড়ে। এ জন্য নরম আলো নির্বাচন করুন। রাতের বেলা ব‌ই পড়ার জন্য তীব্র কোনো আলোর উৎস নির্বাচন না করাই ভালো, যা চোখে অস্বস্তি সৃষ্টি করে। এ ছাড়া রিডিং কর্নার সাজানোর জন্য ফেইরি লাইট ও রেডিয়াম ডিসপ্লে ব্যবহার করতে পারেন।

৬. পছন্দের অনুষঙ্গ যোগ করুন

রিডিং কর্নারটিকে আরেকটু প্রাণবন্ত ও সতেজ দেখাতে কিছু হাউস প্ল্যান্ট যোগ করতে পারেন। এগুলো বুকশেলফে, কফি স্টেশনে বা বসার জায়গার একপাশে রাখতে পারেন। তবে এমনভাবে রাখতে হবে, যাতে চলাচল করতে বা বসতে অসুবিধা না হয়। দেয়ালে পেইন্টিং, পছন্দের ফটো, ড্রিম ক্যাচার, পোস্টার ইত্যাদি লাগাতে পারেন। বড় জানালা থাকলে তাতে বিভিন্ন রঙের পর্দা লাগাতে পারেন। নরম ফ্লোর ম্যাট বা রঙিন শতরঞ্জিও হতে পারে রিডিং কর্নারের জন্য দারুন অনুষঙ্গ।

আপনি রিডিং কর্নার যেভাবেই সাজান না কেন, এমন একটি আরামদায়ক বই পড়ার জায়গা ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি আপনার মনে এক অন্য রকম আনন্দ এনে দেবে। সারা দিনের কাজের ক্লান্তির পর বা অলস ছুটির দিনে একটি ভালো বই উপভোগ করতে হলে এ সপ্তাহেই তাড়াতাড়ি রিডিং কর্নারটি তৈরি করে ফেলুন!

তথ্যসূত্র: গুড হাউসকিপিং

ছবি: পেকজেলসডটকম

প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১: ২৬
বিজ্ঞাপন