রান্নাঘরের বর্জ্য দিয়েই গাছের যত্ন
শেয়ার করুন
ফলো করুন

ইট-কাঠের নগরীতে প্রকৃতির ছোঁয়া পেতে বারান্দা বা ছাদে সুযোগ পেলেই গাছ লাগাই প্রায় আমরা সবাই। এই গাছের যত্নে আর পুষ্টি যোগাতে পানির সঙ্গে প্রয়োজন হয় সার। যদি ঘরের নিত্যদিনের রসুই বর্জ্য দিয়েই এই কাজ সারা যায়, তবে তা হতে পারে এক ঢিলে দুই পাখি মারার স্বার্থক রূপ। আর প্রতিদিন সারা বিশ্বের মতো আমাদের দেশে রান্নাঘর থেকে ফেলে দেওয়া হয় টনের পর টন জৈব বর্জ্য।

ফল-সবজির খোসা আর ফেলনা অংশ, ব্যবহৃত চা-পাতা, ডিমের খোসা—এসব বর্জ্য গাছের পুষ্টি যোগাতে পারে অনায়াসে। অথচ পলিথিন ব্যাগে ভরে ফেলে দেওয়া এই পাহাড়ের মতো স্তূপাকৃতির জৈব বর্জ্য থেকে মিথেন গ্যাস উৎপন্ন হয়ে গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ে তা যথেষ্ট সক্রিয় ভূমিকা রাখে। এই বর্জ্য কাজে লাগিয়ে পরিবেশের ক্ষতি কিছুটা কমাতে পারলে তা আমাদের জন্যই কল্যাণকর। আর এই কাজটি কিন্তু কঠিন নয় একেবারেই।

বিজ্ঞাপন

গাছের জন্য ব্যবহারোপযোগী বর্জ্য নিতে গিয়ে খেয়াল রাখতে হবে, মাছ-মাংস, রান্না করা নষ্ট হয়ে যাওয়া খাবার, তেল-চর্বি ইত্যাদি যেন না মেশে এর সঙ্গে। ফল ও সবজির খোসা বা ফেলে দেওয়া অংশ আর খাওয়ার অনুপযোগী পচে যাওয়া ফল-সবজি—ইত্যাদি খুবই ভালো জৈব সার। আবার গাছের জন্য নাইট্রোজেন তথা প্রোটিন পেতে ডিমের খোসার চূর্ণও খুব উপকারী। ব্যবহৃত চা-পাতা খনিজ লবণ যোগায় গাছের গোড়ায়। এমনকি চাল-ডাল ধোয়া পানির পুষ্টিও কার্যকর হতে পারে গাছের জন্য।

একটি ড্রাম বা বড় টবে প্রতিদিনের রসুই বর্জ্য মাটিচাপা দিয়ে কিছুদিন পরপর মিলিয়ে দিয়ে অত্যন্ত পুষ্টিসমৃদ্ধ উর্বর মাটি তৈরি করা যায়। বীজতলার জন্য এটি অত্যন্ত কার্যকর। ভার্মিকম্পোস্টও করা যায় এ দিয়ে, যাতে কেঁচোসমৃদ্ধ জৈবসার মিলবে নামমাত্র খরচে, ফেলনা জিনিস দিয়ে। আবার গাছের গোড়ায় এসব জৈব বর্জ্য সরাসরি দিলেও তা মাটির আর্দ্রতা ধরে রাখে, সারের কাজ করে। কেউ কেউ এসব রসুই বর্জ্য পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেই পানি ব্যবহার করেন গাছের পুষ্টিতে৷

বিজ্ঞাপন

যেভাবেই হোক, রান্নাঘরের নিত্যদিনের বর্জ্য ব্যবহার করে গাছের যত্ন নিলে তাতে উপকারের শেষ নেই। সারের খরচ কমবে, গাছের বৃদ্ধি-বিকাশ আর ফুল-ফল বাড়বে।

আর সেই সঙ্গে পরিবেশ বাঁচাতে নিজের ভূমিকা রাখতে পারার গৌরব মিলবে বাড়তি পাওনা হিসেবে।

প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৩, ০৯: ৫৬
বিজ্ঞাপন