এ সময়ে নোট রাখার সেরা অ্যাপ
শেয়ার করুন
ফলো করুন

দিনের নির্ধারিত কাজগুলো ঠিকমতো সম্পন্ন করতে পারলে সেই দিনকে কার্যকর বা ফলপ্রসূ বলে মনে হয়। কিন্তু দিনের কাজের লম্বা তালিকা মনে রাখাও একটি বড় কাজ যেন। তাই ছোটবেলা থেকেই আমাদের ডায়েরিতে প্রতিদিনের পড়ার তালিকা টুকে রাখার অভ্যাস করানো হয়। বড় হয়ে কাজের চাপ যখন বাড়ে, তখন এই অভ্যাস আমাদের বেশ সাহায্য করে। কাজের একটি ফর্দ থাকলে ভুলে যাওয়ার আশঙ্কা কমে। তাই শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে কর্মজীবী সবাই কোথায়, কী, কেন—এসব টুকে রাখেন, অর্থাৎ নোট রাখেন কাজের সুবিধার জন্য।

গবেষণা বলছে, বিশ্বের সবচেয়ে সফল ব্যক্তিদের মধ্যে নোট নেওয়া একটি সাধারণ অভ্যাস। এই অভ্যাস চিন্তাধারা সংগঠিত করে প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রেকর্ড করতে সহায়তা করে। এতে করে এদিক-সেদিক সময় নষ্ট না করে নিজেকে ট্র্যাকে রাখা সহজ হয়। আর প্রযুক্তির বদলৌতে নোট নেওয়ার নানা অ্যাপ এসে কাজটি আরও সহজ করেছে। সব কটি অ্যাপ দিয়েই বেশ কাজ চালিয়ে নেওয়া যায়। তবে সবচেয়ে সুবিধাজনক অ্যাপগুলো সম্পর্কে জানা থাকলে কাজ করা যায় আরও স্মার্টভাবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, ২০২৩ সালের আধুনিক ফিচারের কিছু নোট টেকিং অ্যাপ সম্পর্কে।

বিজ্ঞাপন

১. ওয়ান নোট

মাইক্রোসফটের ওয়ান নোট হলো একটি ফিচার–সমৃদ্ধ নোট টেকিং অ্যাপ, যা বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে বিনা মূল্যে পাওয়া যায়। আপনার তৈরি করা সবগুলো নোট সহজেই অন্যান্য মাধ্যমে শেয়ার করা ও পাসওয়ার্ড দিয়ে সেগুলো সুরক্ষিত রাখা যায় এতে। পাশাপাশি ওয়ার্ড, এক্সেল ইত্যাদির মতো মাইক্রোসফ্ট অ্যাপগুলোর সঙ্গে সহজেই সংযুক্ত করা যায় এটি। আর এই বিষয়টিই ‘ওয়ান নোট’কে বিশেষ করে তোলে। মৌলিক এই বৈশিষ্ট্যগুলো ছাড়া টেক্সট এডিট ও মিডিয়া যোগ করার অপশন তো আছেই। অর্থাৎ, আপনি প্রয়োজন অনুসারে ছবি তুলে ডকুমেন্ট হিসেবে রাখতে পারেন আর ভয়েসও রেকর্ড করে রাখতে পারেন। মাইক্রোসফট ওয়ান ড্রাইভ ক্লাউড স্টোরেজের সুবিধা নিয়ে ‘ওয়ান নোট’ আপনার ডেটা সংরক্ষণ এবং সিংক করে রাখে।

২. এভার নোট

‘এভার নোট’ নোট টেকিং অ্যাপগুলোর মধ্যে আরেকটি জনপ্রিয় নাম। উন্নত টেক্সট এডিটর থেকে শুরু করে আরও আধুনিক বৈশিষ্ট্য যেমন ট্যাগ সিস্টেমে কাজ করে সব নোট সমন্বিত করে রাখতে পারেন এই অ্যাপে। অবশ্য এভার নোটের প্রিমিয়াম পর্যায়ের বৈশিষ্ট্যগুলো উপভোগ করতে আপনাকে একটি মাসিক বা বার্ষিক ফি দিতে হবে। তবে প্রিমিয়াম সাবক্রিপশন ছাড়াও অ্যাপটি নিত্যদিনের প্রাথমিক কাজ করার জন্য যথেষ্ট ভালো।

বিজ্ঞাপন

৩. স্ট্যান্ডার্ড নোট

যাঁরা নিরাপত্তাকে বেশি অগ্রাধিকার দেন, তাঁদের জন্য ‘স্ট্যান্ডার্ড নোট’ অ্যাপটি হতে পারে প্রথম পছন্দ। এটি একটি ওপেন সোর্স নোট টেকিং অ্যাপ, যা অন্যতম সেরা এনক্রিপশনের মাধ্যমে আপনার সমস্ত নোট সুরক্ষিত করে রাখে। অ্যাপটির বিনা মূল্যের সংস্করণটিতে এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন এবং টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন (2FA) রয়েছে। পাশাপাশি পাসওয়ার্ড দিয়ে সুরক্ষিত করার অপশন তো আছেই। কিন্তু আরেকটু প্রফেশনাল কাজ যেমন টেক্সট এডিটর এবং চেকলিস্ট, ইতিহাস—এই ফিচারগুলো পেতে আপনাকে প্রিমিয়াম সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে।

৪. গুগল কিপ

সহজেই নোট নেওয়া, সেগুলোকে কাস্টমাইজ করা, ব্যাকগ্রাউন্ডকে বিভিন্ন রঙে সাজানো—এসব অপশন খুব সহজেই পেয়ে যাবেন ‘গুগল কিপ’ অ্যাপে। এতে প্রয়োজন অনুযায়ী থিম করেও ড্যাশবোর্ড সাজানো যায়। এর ফিডে সবগুলো কার্ড সাজানো থাকে। এতে করে কাঙ্ক্ষিত তথ্য খুঁজে পাওয়া বেশ সহজ হয়। মিডিয়া অর্থাৎ অডিও, ভিডিও রাখার ও শেয়ার করার অপশন থাকলেও এতে পাসওয়ার্ড দিয়ে রাখার সিস্টেম নেই। প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ করার জন্য এটি সেরা মানের সেবা দেয়। কিন্তু যাঁরা পাসওয়ার্ডসহ সুরক্ষিত কোনো অ্যাপ চান, তাঁদের জন্য এটি ভালো অপশন না–ও হতে পারে।

৫. নোশন

নোশনও নোট নেওয়ার জন্য বেশ কার্যকরী একটি অ্যাপ। এতে নোট করার বিভিন্ন টুলসের পাশাপাশি ওয়ান ড্রাইভ, গিটহাব, স্ল্যাকের সঙ্গে সমন্বয় করার অপশন থাকে। আর এ বৈশিষ্ট্যের জন্যই এটি বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। মৌলিক নোট টেকিং অপশনগুলোর পাশাপাশি এখানেও আছে প্রিমিয়াম সাবস্ক্রিপশনের ব্যবস্থা।

৬.অ্যাপল নোট

নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে, এটি সবার জন্য নয়। তবে অ্যাপল ব্যবহারকারীদের জন্য সুখবর এই যে নোট করতে তাঁদের আলাদা অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে না। সহজেই ওয়েব থেকে তাঁরা সমস্ত কাজ করতে পারবেন। এতে স্ক্যান করার ও পিডিএফ-এ কনভার্ট করার অপশন অন্তর্ভুক্ত আছে।

ওপরের সবগুলো অ্যাপেই অনলাইন ও অফলাইন সেবা পাওয়া যায়। আর সবাই যেন তাঁদের প্রয়োজন অনুযায়ী নোট টেকিং অ্যাপ বাছাই করতে পারেন, তাই এখানে কোনো ক্রম অনুসরণ করা হয়নি।

ছবি: ইনস্টাগ্রাম ও ওয়েবসাইট

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯: ৫৬
বিজ্ঞাপন