পাবলিক ওয়াই–ফাই ব্যবহার, যে ৭টি কাজ বিপদ ডেকে আনতে পারে
শেয়ার করুন
ফলো করুন

আজকাল এমন কোনো জায়গা বা হোটেল-রেস্তোরাঁ খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে ওয়াই–ফাই নেই। বড় বড় সরকারি-বেসরকারি অফিস, বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ বা শপিং মল, এমনকি বেড়াতে যাওয়ার উন্মুক্ত স্থানেও ওয়াই–ফাই সিস্টেম থাকে। হাতে স্মার্টফোন, ট্যাব বা ল্যাপটপ থাকলে শুধু একটি পাসওয়ার্ড সঙ্গে করেই আপনি ঝাঁপ দিতে পারবেন ইন্টারনেটের অতল মহাসমুদ্রে। অনেক জায়গায় পাসওয়ার্ড ছাড়াই সংযুক্ত হওয়া যাবে ইন্টারনেটে। বলাই বাহুল্য, এমন ওয়াই–ফাইকে আমরা পাবলিক ওয়াই–ফাই বলি।

কিন্তু এই সংযোগ অত্যন্ত সুবিধাজনক হলেও কিছু বিষয়ের দিকে খেয়াল না রাখলে বা না জেনে কিছু কাজ করলে পাবলিক ওয়াই–ফাই ব্যবহার করার ফলে ঘটতে পারে অনভিপ্রেত বিপদ। ইন্টারনেট–জালিয়াতি, তথ্য চুরি, সাইবার ক্রাইম—এগুলো এখন আর্থিক ক্ষতির সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তাকেও হুমকিতে ফেলছে, প্রাণঘাতীও হয়ে উঠছে। তাই ইন্টারনেট ও সাইবার অপরাধবিশেষজ্ঞরা পাবলিক ওয়াই–ফাই ব্যবহার করতে গেলে কিছু কাজ করতে নিষেধ করেন জোরালোভাবে।

বিজ্ঞাপন

স্বয়ংক্রিয় বা অটোমেটিকভাবে কানেক্ট করা

ফোন বা ল্যাপটপ ওয়াই–ফাই ধরতে পারলেই জিজ্ঞাসা করবে যে আপনি অটোমেটিকভাবে এতে কানেক্ট করতে চান কি না। এই চেক বক্সে কখনো হ্যাঁসূচক টিক দেওয়া উচিত নয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, অটোমেটিক কানেকশন পেলে আপনার অগোচরে হ্যাকার আর ইন্টারনেট–ঠগেরা খুব সহজেই খুঁজে পাবে আপনাকে।

ফ্রি ওয়াই–ফাই পেলেই কানেক্ট করা

ইন্টারনেটের জন্য মোবাইল ডেটা ব্যবহার করতে আমরা অনীহা বোধ করি খরচের ভয়ে। এদিকে ফ্রি ওয়াই–ফাই পেলেই আগে-পিছে না ভেবে এতে সংযুক্ত হয়ে গেলে ঝামেলায় পড়তে হতে পারে। স্ক্যামার আর হ্যাকাররা ফ্রি ওয়াই–ফাইয়ে জাল পেতে রাখতে পারে। তাই নিশ্চিত না হয়ে যেকোনো কানেকশন পেলেই ঝাঁপিয়ে পড়া বোকামি।

আর্থিক লেনদেন করা

ইন্টারনেট ব্যাংকিং বা ট্যাক্স ফাইল করা—এসব কাজ ফ্রি ওয়াই–ফাই দিয়ে করা মানে নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারা। এভাবে কার্ডের তথ্য, টিন নম্বর বা ব্যক্তিগত তথ্য অপরাধীর কাছে চলে গেলে সারা জীবন মাশুল গুনতে হতে পারে।

বিজ্ঞাপন

গুরুত্বপূর্ণ সাইটের পাসওয়ার্ড দেওয়া

ব্যবহারকারীর নাম ও পাসওয়ার্ড দিতে হয়, এ রকম গুরুত্বপূর্ণ সাইটে না ঢোকাই ভালো পাবলিক ওয়াই–ফাই দিয়ে। এখানে হ্যাকারদের পাতা ফাঁদে এনক্রিপশনের আগেই এসব তথ্য লিক হতে পারে।

অনলাইন কেনাকাটা করা

হঠাৎ দাঁও মারার মতো ‘মাথা নষ্ট’ অফার দেখে ভেসে গেলে চলবে না। বাড়িতে ফিরে তবেই নিজের ওয়াই–ফাই দিয়ে বা নিতান্ত দরকার হলে ডেটা ব্যবহার করে অনলাইন কেনাকাটা বা কোনো কিছু অর্ডার করতে হবে। এ রকম অনেক হয়েছে যে ‘কি লগিং’ সফটওয়্যার বসানো থাকে ওয়াই–ফাইয়ে আর পরে ক্রেডিট কার্ড থেকে কেউ চুরি করে টাকা খরচ করছে।

অফিসের ওয়েবসাইটে নিজের অ্যাকাউন্টে ঢোকা

ইন্টারনেটের এই যুগে যেকোনো জায়গা থেকেই এখন আমরা অফিসের কাজ করতে পারি। কিন্তু অফিসের ওয়েবসাইটে নিজের অ্যাকাউন্টে বা যেখানে সংবেদনশীল তথ্য থাকে সেখানে ঢোকা খুবই বিপজ্জনক। বিজনেস ই–মেইল, কাস্টমারদের সঙ্গে যোগাযোগ করার টুল বা অ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যার এভাবে ব্যবহার করলে নিজের তো বটেই, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিটির অপূরণীয় ক্ষতি হতে পারে।

অটোমেটিক ফাইল শেয়ারিং

পাবলিক ওয়াই–ফাই ব্যবহার করে এই কাজ কখনোই করা যাবে না। এভাবে অন্য ডিভাইসের সঙ্গে লিংক স্থাপন করে ফাইল শেয়ার করতে গেলে হতে পারে অনেক ঝামেলা। ম্যালওয়্যার প্রবেশ করতে পারে ডিভাইসে। ভাইরাসের আক্রমণের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। শেষে হারাতে হবে শখের দামি ফোন বা ল্যাপটপটি।

ছবি: হাল ফ্যাশন ও পেকজেলসডটকম

প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৩, ১২: ২৬
বিজ্ঞাপন