৫ উপায়ে বুঝে নিন, ভালোবাসা নাকি ক্রাশ
শেয়ার করুন
ফলো করুন

ক্রাশ কথাটি এখন সবার মুখে মুখে। এই ক্রাশ বা ভালো লাগা আর ভালোবাসা আপাতদৃষ্টে যদিও প্রথমে একই জিনিস মনে হয়, আদতে তা নয়। তবে যথেষ্ট পরিমাণ সাদৃশ্য থাকায় এই দুটি ভিন্ন অনুভূতিকে গুলিয়ে ফেলার দৃষ্টান্ত কিন্তু কম নয়। ভালো লাগা বা ক্রাশ বিষয়টি বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই একটি ক্ষণস্থায়ী মোহ বা আকর্ষণ হিসেবে কাজ করে। আর ভালোবাসা আরও গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী একটি অনুভূতি। গৌতম বুদ্ধের কথায়, যখন আমাদের কোনো একটি ফুল ভালো লাগে, তা আমরা গাছ থেকে ছিঁড়ে নিই। কিন্তু যখন আমরা ফুলটিকে ভালোবাসি, তখন আমরা গাছে প্রতিদিন পানি দিই, তার যত্ন করি। তাই ভালো লাগা আর ভালোবাসার মধ্যে পার্থক্য করার জন্য আজ কিছু উপায় জেনে নিন।

১. ভালোবাসা গড়ে উঠতে সময় প্রয়োজন, ভালো লাগা ক্ষণিকের মধ্যেই তৈরি হতে পারে
ক্রাশ বা ভালো লাগা আমাদের মধ্যে একটা ক্ষণিকের মোহ তৈরি করে। একজন মানুষ সম্পর্কে না জেনে, কোনো পরিচয় ছাড়াই শুধু তার অস্তিত্বকে ঘিরে আমরা একটি অন্য জগৎ তৈরি করে ফেলি।
অপর দিকে ভালোবাসা গড়ে উঠতে সময় প্রয়োজন। একজন মানুষকে জেনে, তার ছোট–বড় খুঁত, ভয়-ভীতিগুলোকে মেনে নিয়ে সম্পর্কের ভিত্তি মজবুত করতে বেশ অনেকটা ধৈর্য আর চেষ্টা দরকার হয়।

বিজ্ঞাপন

২. ভালো লাগা রোমাঞ্চকর, ভালোবাসা প্রশান্তিদায়ক
সাধারণত বলা হয়ে থাকে, সম্পর্কে জড়ানোর চেয়ে প্রেমে পড়ার আগের মুহূর্ত বেশি রোমাঞ্চকর। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই যেহেতু ক্রাশ বা ভালো লাগার অনুভূতিটি একপক্ষীয় হয়ে থাকে, তাই একজনকে ঘিরে তার অজান্তে নানা জল্পনাকল্পনা করে বেশ অনেকটা সময় আমরা কাটিয়ে দিই। একই সঙ্গে অজানা মানুষটিকে জানার আগ্রহ, লুকিয়ে তাকে দেখা, নিজের অনুভূতির ব্যাপারে জানাব নাকি জানাব না—এই নিয়ে টানাপোড়েন ইত্যাদি সব মিলিয়ে পুরো সময়টা একটা ডোপামিন রাশের মধ্য দিয়ে যায়। ফলে ভালো লাগা মনে প্রতিনিয়ত রোমাঞ্চের জন্ম দেয়। কিন্তু ভালোবাসা সারা দিনের কাজ শেষে ক্লান্ত দেহে বাড়ি ফিরে আসার মতো প্রশান্তিদায়ক। এতে কোনো তাড়াহুড়ো নেই, চাঞ্চল্য নেই। বরং ভালো লাগার সম্পূর্ণ বিপরীত প্রান্তে গিয়ে মনকে শান্তি এনে দেয় ভালোবাসা।

৩. ভালো লাগা মুগ্ধতা থেকে আসে, ভালোবাসা তৈরি হয় মায়া থেকে
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কারও শারীরিক সৌন্দর্য কিংবা অন্য কোনো নির্দিষ্ট গুণে মুগ্ধ হওয়া থেকে ভালো লাগা শুরু হয়। একজন হয়তো বেশ ভালো গান গায় কিংবা বেশ ভালো দেখতে—তার ব্যাপারে আর কিছু ভালোভাবে না জেনেই আমরা মুগ্ধ হয়ে যাই। ভেবে নিই যে আমরা তাকে ভালোবেসে ফেলেছি।
অপর দিকে, কারও সব ভালো–মন্দ জেনে, তার সঙ্গে সময় কাটানোর পর যে নির্ভরতা ও বিশ্বাস তৈরি হয়, তা থেকে ভালোবাসার জন্ম। শুধু একটি নির্দিষ্ট গুণের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হওয়া ভালো লাগা কাউকে পুরোপুরি জানার পর না–ও থাকতে পারে।

বিজ্ঞাপন

৪. আপনার ব্যক্তিত্বের দিকে লক্ষ করুন
ভালোবাসার মানুষ আপনাকে আপনার সব ভালো–মন্দসহ মেনে নেয়। ফলে তার আশপাশে আপনি নিজের মতো করে চলতে পারেন। নিজেকে নিখুঁত হিসেবে জাহির করার প্রয়োজন পড়ে না।
কিন্তু আপনি যদি অপর মানুষটির সামনে নিজেকে নিখুঁত প্রমাণ করতে ব্যস্ত থাকেন, সব সময় ভয়ে থাকেন যে এই বুঝি আপনার কোনো কাজে সে আপনাকে দূরে ঠেলে দিল, তবে আপনাদের মধ্যকার সম্পর্কটি খুব সম্ভবত ক্ষণিকের মোহের ওপর তৈরি।

৫. ভালো লাগা অস্থায়ী, ভালোবাসা দীর্ঘস্থায়ী
আজকে একজনের কোকিল কণ্ঠ শুনে ভালো লাগল, আবার কাল কারও কবিতা শুনে প্রেমে পড়ে গেলাম—এমন যদি আপনার সঙ্গে হয়ে থাকে, তবে বুঝতে হবে এটি ক্রাশ, অর্থাৎ ভালো লাগা। কারণ, ভালোবাসা দীর্ঘস্থায়ী। আপনার পার্টনার সবচেয়ে সুদর্শন কিংবা সবচেয়ে জ্ঞানী না-ই হতে পারেন। কিন্তু কোটি কোটি জ্ঞানী, সুন্দরী, সুদর্শন মানুষের ভিড়ে আপনি বারবার তাঁকেই বেছে নেবেন। আনুগত্য ও অভ্যস্ততা ভালোবাসার বেশ বড় দুটি অংশ।

সূত্র: ভেরি ওয়েল মাইন্ড

ছবি: হাল ফ্যাশন ও পেকজেলস ডট কম

প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০১: ০০
বিজ্ঞাপন