আজ ছুটির দিনে কী করবেন
শেয়ার করুন
ফলো করুন

ঝুম বৃষ্টির মধ্যেই শরৎ এসে গেল। শরৎকে বলা হয় মনভোলানো ঋতু। আকাশে কখনো রোদ তো কখনো বৃষ্টি। আর মেঘের খেলা চলছেই। এদিকে এবার বর্ষা দেরিতে আসায় আগস্টের শুরু থেকে সঙ্গী হয়েছে টানা বর্ষণ। অবাধ্য মনকে এমন দিনে আসলেই ঘরে রাখা যায় না। ‘কাছে যাব, কবে পাব ওগো তোমার নিমন্ত্রণ!’ ছুটির দিনে দাওয়াত লেগেই থাকে। তবে নিমন্ত্রণ না পেয়ে মন খারাপ করে বসে না থেকে নিজেকে নিজে আপ্যায়ন করতে পারেন। কোথাও ঘুরে আসতে পারেন, ভালো খাবার খেয়ে উদরপূর্তি  উদ্‌যাপন করতে পারেন কিংবা বন্ধুবান্ধব, পরিবারসহ আড্ডায় মেতে উঠতে পারেন। এসবের জন্য শহরে রয়েছে নানা বিনোদনের জায়গা। তবে সপ্তাহে একটা ছুটির দিনে কিছুতে খারাপ আর ঝক্কিময় অভিজ্ঞতা হলে দিনটা মাটি হয়ে যায়। তাই সকালে উঠে আগে থেকে কোথায় যাবেন, কী খাবেন বা কী করবেন—এসব পরিকল্পনা করে নিলে ভালো। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই সপ্তাহে উপভোগ করার মতো খাবার, জায়গা আর করণীয় নিয়ে।

বিজ্ঞাপন

কী খাবেন

এই মেঘ-বৃষ্টি আর রোদের দোলাচলের দিনে খিচুড়ির আবেদন অগ্রাহ্য করা বাঙালির পক্ষে কোনো যুগে সম্ভব নয়। আর সেটা যদি হয় ল্যাটকা বা ঢ্যালকা খিচুড়ি, তাহলে তো কথা নেই। পাতলা, ল্যাটকা, ঢালা, ঢ্যালা কিংবা জাউখিচুড়ি যে নামেই ডাকা হোক না কেন, ডালে-চালে এর স্বাদ অতুলনীয়। রাজধানীতে এখন বেশ কিছু রেস্তোরাঁয় পাওয়া যায় ল্যাটকা খিচুড়ি। কোথায় যেতে পারেন সেরা স্বাদের ল্যাটকা খিচুড়ি খেতে?

ভেজা ফ্রাই

চলে যেতে পারেন ধানমন্ডি। ভেজা ফ্রাই-এর আচারি ল্যাটকা খিচুড়ির সঙ্গে উদ্‌যাপন করতে পারেন আপনার দিন। আচারি গরুর মাংস, ডিমভাজা আর পেঁয়াজ–মরিচের সহযোগে খিচুড়ির এই পরিবেশনা পছন্দ করছেন খাদ্যরসিক মানুষ। সুন্দর পরিবেশে আপনার অলস দুপুর বা সন্ধ্যার আড্ডা জমে উঠতে পারে সেখানে।

ঢাকা মেট্রো

‘বাইরে বৃষ্টি ঝুম, পড়ুক ঢালা খিচুড়ি খাওয়ার ধুম’, ‘পড়ছে বৃষ্টি লাগছে বেস্ট এবার চাই ঢালা খিচুড়ির টেস্ট’—এমন মজার সব উক্তি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ জনপ্রিয় ঢাকা মেট্রোর ঢালা খিচুড়ি। শুধু মজার ট্যাগ লাইন নয়, স্বাদ দিয়েও মন জয় করে নিয়েছে সবার। চলে যেতে পারেন বনানীতে এই মজাদার ঢালা খিচুড়ি দিয়ে নিজেকে তৃপ্ত করতে।

বিজ্ঞাপন

কোথায় যাবেন

চলছে শোকের মাস। প্রকৃতির নানা রূপে যতই মুগ্ধ হই না কেন, বাঙালি জাতির জীবনের এই কালো  অধ্যায় দাগ কেটে আছে সবার মনে। সর্বকালের সেরা বাঙালি বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস আমাদের যেমন কাছ থেকে জানা উচিত, তেমনি পরবর্তী প্রজন্মকেও জানানো উচিত।

ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাড়ি

দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধুর অবদান জানাতে আপনার পরিবারের ছোট সদস্যদের নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে। বর্তমানে যা বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর নামে পরিচিত। ধানমন্ডি লেকের পাশে অবস্থান এই জাদুঘরের। ঢাকার যেকোনো স্থান থেকে ব্যক্তিগত গাড়ি বা বাসে চড়ে আসতে পারবেন এখানে। এ বাড়িতে ঢুকতে মাত্র পাঁচ টাকা খরচ করতে হবে প্রতিজনের। আর তিন বছরের নিচের শিশুদের কোনো প্রবেশ ফি নেই। যাদের বয়স ১২ বছরের কম, তাদের জন্য রয়েছে শুক্রবারে বিনা মূল্যে জাদুঘর ঘুরে দেখার সুযোগ। বুধবার ছাড়া যেকোনো দিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত যে কেউ ঘুরে দেখতে পারবেন বাড়িটি।

বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর

কমবেশি সবাই আমরা সোশ্যাল মিডিয়ার বদৌলতে বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরের সৌন্দর্যে মোহিত হয়েছি। মিরপুর সেনানিবাস থেকে ২০২০ সালে জাদুঘরটি বিজয় সরণিতে নিয়ে সংস্কার ও আধুনিকায়ন করার পর থেকে দর্শনার্থীদের কাছে এর আবেদন বেড়েছে অনেক। জনপ্রতি ১০০ টাকা গুনতে হবে এই চমৎকার জাদুঘর ঘুরে আসতে। এখানে প্রদর্শনী হয় সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা, আবার বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। বুধবার এখানে সাপ্তাহিক ছুটির দিন। তা ছাড়া শুক্রবার অর্ধদিবস খোলা থাকে, অর্থাৎ এদিন সকালের প্রদর্শনী বন্ধ থাকে।
মনকে প্রশান্তি দেওয়ার পাশাপাশি বেশ ঋদ্ধ হতে সাহায্য করবে এমন ইতিহাসভিত্তিক জায়গা।

কী করবেন

তথ্যপ্রযুক্তির জয়জয়কারের এই যুগে এসে কোনো আলোচনা থেকে বাদ পড়ে গেলে বেশ অসহায় লাগে। কী ‘মিস’ হয়ে গেল ভীতি তো আছেই। সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনার মুখ্য বিষয় কিন্তু দুটি বিদেশি সিনেমা। সময়কে আরও উপভোগ্য করতে সিনেমা হলে দেখে আসতে পারেন ‘বার্বি’ আর ‘ওপেনহাইমার’। এখন উপচে পড়া সেই ভিড় না থাকায় বেশ আরাম করে দেখে আসতে পারেন সিনেমা দুটি। তবে টিকিট আগে থেকে কেটে রাখলে নিজের পছন্দের সিটে বসে পপকর্ন আর কোমল পানীয় নিয়ে বেশ উপভোগ করতে পারবেন সময়টা।

এ ছাড়া কেনাকাটা আর মেলায় ঘোরা—দুই আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন ধানমন্ডির ৯/এ–এর খুঁতের বাড়িতে গেলে। ১৮ থেকে ২০ আগস্ট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘অপার বাংলা’ মেলা। তিন দিনের এই মেলায় অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ আর ভারতের পশ্চিম বাংলার সৃজনশীল উদ্যোক্তারা। এপার আর ওপার—দুই বাংলা মিলে মেলার নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপার বাংলা’। আবার গুলশানের ইউনিমার্টে ক্লে স্টেশনের উদ্যোগে ১৭-১৯ আগস্ট ক্লে ফেস্ট বা কাদামাটির উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এখানে পরিবারের ছোটদের নিয়ে গেলে তারা নিজের মনের মতো করে মৃৎশিল্পসামগ্রী বানিয়ে তা রং করতে পারবে। তাদের সৃজনশীল কাজের সাক্ষী হয়ে আপনার মন ভরে উঠবে নিঃসন্দেহে।

প্রকাশ: ১৮ আগস্ট ২০২৩, ০১: ০০
বিজ্ঞাপন