তেঁতুলিয়ার বাঘা বাজার। আমার ঠিক বাড়ির পাশেই এক গ্রাম। খুব সকাল হলেই সেই বাজারে এখন দেখা যাবে ভ্রাম্যমাণ এক গুড়ের হাট। সেই হাটেই আমার গন্তব্য। সকাল সকাল গিয়ে দেখি সাইকেলের পেছনে ঝুড়িতে গুড়ের বাটি। দামের হেরফের হয় গুড়ের মানের উপরে। দাম শুরু হয় দেড়শো টাকা কেজিতে। এই গুড়ের বৈশিষ্ট্য হল এটি একেবারা টাকটা খেজুরের গুড় থেকে তৈরি হয়। আর জমাট বাধলেই সেই গুড় নিয়ে এই ভ্রাম্যমাণ হাটে হাজির হন বিক্রেতারা। তবে কোন খুচরা ক্রেতা এখানে আসেন না। পাইকারি বাজারে পাইকারেরা স্তূপে স্তূপে এই গুড় কিনে নেন। তবে কেনার আগে তারা গুড় চেখে দেখেন আর তাতেই বুঝে যান এই গুড়ের মান কেমন আর দাম কেমন হওয়া উচিত। সরাসরি ঢাকায় আসে বেশির ভাগ গুড়। সেই গুড়ে পায়েস হয়। অনেকে চাও খান এই গুড়ের। ম ম গন্ধের সেই চা বা পায়েস অমৃত যেন। তবে গুড়ে চিড়া মুড়ি খাওয়ার চলও আছে। এই তেঁতুলিয়া বাজারে যেতে হবে ভোরে। কুয়াশা মাখা সেই ভোর, পাখির কিচিরমিচির, খেজুর রস নামানোর দৃশ্য যেন মন কাড়বে। শান্ত এক গ্রামে কোন কোলাহল নেই, কুয়াশার চাদর ভেদ করে উঠবে শীতের নরম সূর্য। গায়ে পড়লেই লাগবে আরাম। শহুরে ব্যস্ততা নেই, যানবাহনের বিকট আওয়াজ নেই। এমন সকাল যেন বহুল প্রতীক্ষিত।