বিভিন্ন তথ্য ও উপাত্ত বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, যেসব খাবার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, সেগুলোই অগ্রাধিকার পেয়েছে ২০২৩ সালের ফুড ট্রেন্ডে। তবে স্বাস্থ্যকর খাবারের অর্থ এই নয় যে আপনি সব সময় বিস্বাদ খাবার খাবেন। খেয়াল করলে দেখবেন, এমন অনেক খাবার কিংবা রেসিপি রয়েছে যেগুলো একই সঙ্গে মুখরোচক, আবার স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো। এ ধরনের খাবারগুলোর প্রতিই মূলত এখন মানুষের আগ্রহ বেশি। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কোন কোন বিষয় ২০২৩-এর ফুড ট্রেন্ডে অগ্রাধিকার পেয়েছে—
১. শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা
বর্তমানে হাইড্রেটেড থাকা ট্রেন্ডের সবচেয়ে ওপরের সারিতে অবস্থান করে নিয়েছে। এখন আমাদের অনেকের মধ্যেই হাইড্রেশন নিয়ে সচেতনতা আগের চেয়ে বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। হাইড্রেশন বা নিজের শরীরে পানির পরিমাণ ঠিক রাখার সঙ্গে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে মানুষ যত বেশি অবগত হচ্ছেন, হাইড্রেশন ট্রেন্ড তত বেশি অগ্রাধিকার পাচ্ছে।
২. স্বাস্থ্যকর পানীয়
এ বছর চা-কফির পরিবর্তে বিভিন্ন শক্তিদায়ী ও ডিটক্স–জাতীয় পানীয় ছিল সবার আগ্রহের তালিকার শীর্ষে। কারণ, অনেকের মধ্যেই ক্যাফেইন এড়িয়ে চলার একটি প্রবণতা দেখা গিয়েছে এ বছর। এ জন্য হোয়াইট, ডিক্যাফ আর গ্রিন কফির প্রচলন বেড়েছে। প্রিবায়োটিক ও প্রোবায়োটিক ড্রিংক ফুড ট্রেন্ডে অগ্রাধিকার পেয়েছে। এ ছাড়া বর্তমানে ইলেট্রোলাইট-ইনফিউজড পানীয়র প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। কারণ, এগুলো স্বাস্থ্যের জন্যও বেশ ভালো। বিভিন্ন হার্বাল চা পান করেছেন বিশ্বজুড়ে সবাই।
৩. পরিপাকতন্ত্রবান্ধব খাবার ও পানীয়
বর্তমানে সবার মধ্যে পরিপাকতন্ত্র আর বিশেষ করে অন্ত্রের স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেকেই এমন পানীয় ও খাবারগুলো তাঁদের তালিকায় রাখতে চেষ্টা করছেন, যা তাঁদের অন্ত্রের পক্ষে ভালো। তাই মানুষ এখন ফার্মেন্টেড, প্রোবায়োটিক ও প্রিবায়োটিক খাবারের দিকেই ঝুঁকছে। বিভিন্ন গবেষণা থেকে দেখা যায়, মানুষের মধ্যে অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো সবজি কোনগুলো কিংবা কোনো খাবারগুলো অন্ত্রকে ভালো রাখবে—এই নিয়ে অনুসন্ধান করার প্রবণতা বেড়েছে। একই কারণে খাদ্যের ফাইবারের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে সবার।
৪.উচ্চ প্রোটিনসমৃদ্ধ স্ন্যাকস
প্রোটিন আমাদের শরীরের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ইটিংওয়েলের তথ্য অনুযায়ী ২০২৩ সালে, উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েছে ৪৫ শতাংশ এবং প্রোটিন পাউডারের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে ৫৪ শতাংশ। অর্থাৎ প্রোটিনের প্রতি আগ্রহ মানুষের দিন দিন বাড়ছে। তাই আমিষজাতীয় বিনস ও বীজ, বাদাম, দই, প্রোটিনবার ও প্রোটিনচিপস–জাতীয় স্ন্যাকসগুলো ফুড ট্রেন্ডে অগ্রাধিকার পেয়েছে বেশি।
৫. কৃত্রিম চিনিমুক্ত খাবার
বেশ কয়েক বছর ধরেই মানুষের মধ্যে কৃত্রিম চিনির প্রতি একধরনের অনীহা লক্ষ করা যাচ্ছে। কারণ, কয়েক বছর ধরে কৃত্রিম চিনির সঙ্গে ক্যানসারের একটি সম্পর্ক বিভিন্ন আর্টিকেলে প্রকাশ পেয়েছে। তাই মানুষ প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টিযুক্ত খাবারগুলোকেই বেশি অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। ইটিংওয়েলের তথ্য অনুযায়ী, ব্রাউন সুগার, স্টেভিয়া, আগাভে, ডেট সুগার আর মোলাসেস অর্থাৎ গুড়ের গুরুত্ব বেড়েছে এ বছর।
সূত্র: ইটিং ওয়েল
ছবি: পেকজেলস ডট কম