বেশ কয়েক বছর ধরেই মিরপুর ১০-এর হোপ মার্কেটের কথা লোকমুখে শোনা যায় এখানকার সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী পোশাক-আশাকের জন্য। ঢাকার সব জায়গা থেকে প্রচুর মানুষ আসতে দেখা যায় এখানে। আবার মিরপুর ১০-এই আছে বিখ্যাত বেনারসি পল্লী, যেখানে দেশের নানা প্রান্ত তো বটেই, বিদেশ থেকেও আসেন অনেকে নির্ভরযোগ্য, মানসম্পন্ন দেশীয় শাড়ি পেতে । তবে এসবের বাইরে এখানকার স্ট্রিট ফুডও কিন্তু মন কাড়ে সবার। আর বলা বাহুল্য, পেটও ভরায়। আর তা–ও পকেটের ওপরে বেশি চাপ না ফেলেই। চলুন জেনে নেওয়া যাক মিরপুর ১০-এর বিখ্যাত কিছু স্ট্রিট ফুড সম্পর্কে।
মিরপুর ১০–এর স্ট্রিট ফুডের কথা বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হয় এখানকার ফুচকার কথা। বোম্বাই মরিচ দেওয়া এমন ঝাল-ঝাল ফুচকা দেখে আপনার জিবে জল আসতে বাধ্য। মিরপুর গার্লস আইডিয়াল স্কুলের সামনেই দেখা মিলবে এই ফুচকার। একসঙ্গে ৯-১০টি ফুচকার দোকান বসে এখানে। ঝাল-টকের অসাধারণ এক সমন্বয় এই ফুচকা। নানা বয়সী মানুষকে ভিড় জমাতে দেখা যায় ফুচকার দোকানগুলোয়। তবে চাইলে মিষ্টি-টক দিয়েও ফুচকা খেতে পারবেন আপনি। প্রতি বাটি ফুচকার দাম পড়বে ২০ টাকা।
বোম্বাই মরিচ দেওয়া ফুচকার ঝাল কমাতেই যেন দাঁড়িয়ে থাকে লাচ্ছির ভ্যানগাড়িগুলো। দেখা মিলবে ফুচকার দোকানগুলোর ঠিক পাশেই। পাশাপাশি ৭-৮টি ভ্যানগাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে সেখানে। লাচ্ছি ছাড়াও এখানে পাবেন বাহারি রঙের গোলা ও কোল্ড কফি। প্রতি গ্লাসের দাম শুরু ৩০ টাকা থেকে।
মিরপুর ১০-এর গোল চত্বরের শাহ আলী প্লাজার পাশেই ছোট্ট একটি ভ্যানগাড়িতে বিক্রি হয় মজাদার এই চিকেন রোল। প্লেটে পরিবেশন করা হয় তাদের নিজস্ব সসের সঙ্গে। গরম-গরম এই চিকেন রোল কিন্তু খেতে দারুণ। চিকেন রোলের দাম প্রতি পিস ৪০ টাকা।
তন্দুরি চা এখন বেশ ট্রেন্ডি৷ মিরপুর ১০-এর গোলচত্বর থেকে পশ্চিম দিকে ২ নম্বর সুইমিংপুলের বিপরীত গলিতে সাজানো আছে সারি সারি স্ট্রিট ফুডের দোকান। গলিটিতে ঢুকে প্রথমেই দেখা মিলবে তন্দুরি চায়ের। এক বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি হয় এই চা। প্রথমে একটি চুলায় জ্বাল দেওয়া মসলামিশ্রিত দুধ। এতে চা-পাতা ও চিনি দিয়ে তৈরি হয় চা। আবার আরেকটি চুলায় পোড়ানো হয় মাটির তৈরি ছোট কাপ। পিতলের পাত্রে চা নিয়ে তা প্রবেশ করানো হয় পোড়া আর গনগনে লাল মাটির কাপে। কাপটি চায়ের সংস্পর্শে আসতেই চা টগবগ করে ফুটতে শুরু করে। ধোঁয়া ওঠা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত মাটির পাত্রটি ধরে রাখা হয়। এরপর নানা ধরনের বাদাম দিয়ে সেই চা পরিবেশ করা হয় মাটির কাপে। প্রতি কাপ চায়ের দাম পড়বে ৫০ টাকা।
তন্দুরি চায়ের দোকানের দুই দোকান পরেই আছে ‘তাকওয়া খানাপিনা’ নামের এক দোকান, যেখানে পাওয়া যায় তাওয়া চিকেন ও রুমালি রুটি। এই খাবারটি তৈরিতে মাংসে কোনো ঝোল রাখা হয় না। মসলা দিয়ে মাংস ভেজে ভেজে তৈরি হয় তাওয়া চিকেন। সঙ্গে পরিবেশন করা হয় নরম তুলতুলে রুমালি রুটি, শসা আর সস।
এই মজাদার খাবারের দাম ৬০ টাকা।
মিরপুর ১০-এর হোপ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের বিপরীত গলিতেও দেখা মেলে বেশ কিছু খাবারের দোকানের। দোকানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পুরোনো হলো ‘চা চলবে’ নামের একটি দোকান। গলির প্রথমেই দেখা মিলবে দোকানটির। সেখানকার শর্মা বেশ জনপ্রিয় এর ভিন্নধর্মী আর একই রকম মজাদার স্বাদের জন্য। শর্মাটির দাম ১০০ টাকা।