দেশের জনপ্রিয় অভিনেতা সিয়াম আহমেদের ফ্যাশন-ভাবনা সব সময়েই তরুণ প্রজন্মকে প্রভাবিত করে আসছে। আরামদায়ক আর মধ্যবিত্তের হাতের নাগালের মধ্যে ফ্যাশনেবল ছেলেদের পোশাকের সংগ্রহ নিয়ে তাঁর নিজস্ব ব্র্যান্ড হোলাগো প্রায়ই আলোচনায় থাকে। এবার শরতের মেঘ-বৃষ্টি আর ভ্যাপসা গরমে হোলাগোর কিউবান কলার শার্ট আর টি-শার্টগুলো হতে পারে খুবই উপযোগী।
বর্তমান সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় ট্রেন্ডি আউটফিট হলো কিউবান কলার শার্ট। এটি এ সময়ে পরার সবচেয়ে উপযোগী একটি পোশাক। ফ্যাশন ও আরাম দুই-ই পেতে কিউবান কলার শার্টের জুড়ি মেলা ভার। ক্লাস হোক বা বন্ধুদের আড্ডা—সবখানেই পরা যাবে এই শার্ট। এর সঙ্গে বুঝেশুনে বটম ও অনুষঙ্গ বাছাই করলে পাওয়া যাবে অত্যন্ত স্টাইলিশ লুক।
কিউবান কলার শার্ট সাধারণত সুতি বা লিনেন—দুই ধরনের কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়। এ ছাড়া এখন অনেক ফ্যাশন ব্র্যান্ড নরম আরামদায়ক ভিসকস, টেনসেল ফেব্রিক দিয়েও এই শার্ট বানাচ্ছে। কিউবান কলার শার্টের সবচেয়ে প্রচলিত দুটি প্যাটার্ন হলো ফ্লোরাল ও ট্রপিক্যাল প্রিন্ট। অবশ্য এখন জ্যামিতিক, পোলকা ডট, চেক, স্ট্রাইপ প্যাটার্নেরও বেশ কদর বেড়েছে। আবার এক রঙের কিউবান কলার শার্টও বেশ চলছে।
কিউবান কলার শার্টের বটম হিসেবে সবচেয়ে ভালো মানায় ঢোলা প্যান্ট। এ জন্য ওয়াইড লেগড জিন্স বা গ্যাবার্ডিন বেছে নিতে পারেন। প্লিটেড ট্রাউজার প্যান্টের সঙ্গেও বেশ মানিয়ে যাবে।
ক্ল্যাসিক স্টাইলিশ লুক তৈরিতে কিউবান কলার শার্ট-টি-শার্টের ওপর লেয়ার হিসেবেও পরা যায়। আমাদের দেশে এখন ট্রেন্ডটা বেশ দেখা যাচ্ছে। এমনকি মেয়েরাও একটা স্টাইল রীতি মেনে কিউবান কলার শার্ট বেছে নিচ্ছেন।
অনেকে ভাবতে পারেন কিউবান কলার শার্ট শুধু ক্যাজুয়াল লুকের জন্যই ঠিক আছে। ধারণাটা একদম ভুল। পশ্চিমে অনেক স্টাইলিশ সেলিব্রিটিদের রেড কার্পেট ইভেন্টেও এই শার্ট পরে হাজির হতে দেখা যায়। আপনিও চাইলে বিয়েবাড়ি বা যেকোনো পার্টিতেও কিউবান কলার শার্ট পরতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ভেবেচিন্তে সঠিক বটম বেছে নিতে হবে।
কিউবান কলার শার্ট স্যুটের সঙ্গে পরা যাবে অনায়াসে। এ ক্ষেত্রে স্টাইলিংয়ের সময় রঙে বৈপরীত্য আনতে পারেন। যেমন সাদা কিউবান কলার শার্টের সঙ্গে আকাশি, গাঢ় নীল, লাল, কালো রঙের স্যুট পরা যাবে। স্যুটের সঙ্গে শার্ট যে সব সময় টাক-ইন করে পরতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। পায়ে ড্রেস শুর বদলে লোফার বা স্নিকার্স সবচেয়ে ভালো মানাবে। চাইলে রানিং শু-ও পরতে পারেন। বেশি গরম পরলে স্যুট না পরে কেবল এমনি টাক-ইন করে পরতে পারেন এই শার্টগুলো। তাহলে লুকে রেট্রো আমেজ আসবে।
গরমে টি-শার্টের চেয়ে আরামদায়ক পোশাক আর হতেই পারে না। বিশ্বের সব দেশের বেশির ভাগ ছেলেমেয়ের পছন্দের পোশাক এটি। এর প্রধান তিনটি কারণ হলো এটি সাশ্রয়ী, আরামদায়ক ও বৈচিত্র্যময়। বলা হয়, একটা টি-শার্ট নাকি চাইলেই ২০ রকমভাবে স্টাইলিং করা সম্ভব।টি-শার্ট তৈরিতে তিন ধরনের ফেব্রিক বেশি ব্যবহার করা হয়। এগুলো হলো সুতি, পলিয়েস্টার ও কটন-পলিয়েস্টার ব্লেন্ড। সুতির টি-শার্ট নরম ও আরামদায়ক হয়। এর ওপরে সহজে প্রিন্ট করা যায়। পলিয়েস্টার টি-শার্ট ধোয়ার পর দ্রুত শুকিয়ে যায়, সহজে ভাঁজ পড়ে না ও টেকসই। আর কটন ও পলিয়েস্টারের মিশ্রণে বানানো টি-শার্ট যেমন আরামদায়ক তেমনি টেকসই।
আমাদের দেশে তরুণদের মধ্যে বিভিন্ন স্লোগান বা পছন্দের মুভি বা টিভি সিরিজের বিশেষ ডায়ালগ বা অ্যানিমে চরিত্রের ছবি আঁকা গ্রাফিক টি-শার্টের জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। বর্তমানে আবার বেশ কিছু ফ্যাশন ব্র্যান্ড ড্রপ শোল্ডার অ্যাসিডওয়াশ টি-শার্ট নিয়ে এসেছে। একটু ভিন্ন প্যাটার্ন হওয়ায় ফ্যাশনেবল তরুণদের মধ্যে এগুলো নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। এ ধরনের টি-শার্ট ক্যাজুয়াল ওয়্যার হিসেবে ভালো। অন্যদিকে একরঙা সলিড টি-শার্ট ক্যাজুয়ালের পাশাপাশি সেমি-ফরমাল ওয়্যার হিসেবেও পরা যাবে। এর পুরোটাই নির্ভর করবে স্টাইলের ওপর। টি-শার্টের বটম হিসেবে কার্গো প্যান্ট, স্ট্রেটকাট বা ওয়াইড লেগ জিন্স বেশ ভালো মানিয়ে যায়।
স্টাইল স্টেটমেন্টের জন্য ওভারসাইজড টি-শার্টের সঙ্গে বিডস বা রুপালি চেইনের ব্রেসলেট, গলায় মেটাল বা রুপালি চেইন পরতে পারেন। হাতে বড় স্পোর্টস ওয়াচ পরা যায়। সলিড টি-শার্টও এভাবে স্টাইল করা যাবে। সেমি-ফরমাল লুকের জন্য সলিড টি-শার্টের সঙ্গে চিনোজ বা গ্যাবার্ডিনের প্যান্ট বেশি ভালো মানায়।