বাইকার ফ্যাশন
শেয়ার করুন
ফলো করুন

বর্তমান সময়ে তরুণদের মধ্যে যে বাইকার স্টাইল দেখা যায়, তার শুরু পঞ্চাশের দশকে। ১৯৫৩ সালে মুক্তি পায় ‘দ্য ওয়াইল্ড ওয়ান’, যেখানে বিখ্যাত অভিনেতা মারলন ব্রান্ডোকে দেখা যায় জনি স্টাবলারের ভূমিকায় অভিনয় করতে। স্টাবলার ছিলেন একটি মোটরসাইকেল ক্লাবের লিডার। তাঁর আউটফিট ছিল, কালো লেদার জ্যাকেট ‘পারফেক্টো’, নীল ডেনিম, ইঞ্জিনিয়ার বুট আর ক্যানভাস ক্যাপ। ক্যাপটি ছাড়া ব্রান্ডোর পুরো লুকটাই তখন থেকে হয়ে ওঠে বাইকার স্টেটমেন্ট।

সে সময় এই লুক শুধু বাইকার নয়, মিউজিশিয়ান থেকে শুরু করে তরুণ-কিশোর সবাইকে খুব প্রভাবিত করে। এখন পর্যন্ত ব্রান্ডোর লুকটাকেই ক্ল্যাসিক বাইকার স্টাইল বলে মানা হয়।  

এই স্টাইল বাইকার ছাড়াও সবার কাছে বেশ জনপ্রিয়। ফ্যাশনেবল বা নন-ফ্যাশনেবল যেকোনো মানুষ লেদার জ্যাকেট বা জিনস পরতে ভালোবাসে। সত্যি বলতে, সবাইকে এগুলোতে বেশ মানিয়েও যায়। সঠিকভাবে মেইনটেইন করলে ভালো মানের লেদার বা ডেনিম আউটফিট অনেক দিন টেকে। এ জন্যই বাইকারপ্রাণিত স্টাইল কখনো ট্রেন্ড থেকে হারিয়ে যায়নি।        

বিজ্ঞাপন

বাইকার অনুষঙ্গ

১৯২৮ সালে নিউইয়র্কে আরভিং শট নামের একজন জ্যাকেট মেকার প্রথম ব্ল্যাক লেদার জ্যাকেট বানান। এই জ্যাকেট বানানোই হয় শুধু বাইকারদের জন্য। নিজের প্রিয় সিগার, অর্থাৎ চুরুটের  ব্র্যান্ডের নাম দেন পারফেক্টো। এই জ্যাকেটকেই বিখ্যাত করেন ব্রান্ডো। এখনো বাইকারদের প্রথম পছন্দ লেদার জ্যাকেট। যাঁরা বাইকার-ইন্সপায়ার্ড আউটফিট পরেন, তাঁরাও ব্ল্যাক লেদার জ্যাকেটকে আদর্শ মানে। যেকোনো রঙের টি-শার্ট বা শার্টের ওপরে এটি পরা যায়।  

ব্ল্যাক লেদার জ্যাকেটের পরে আসে ডেনিম জ্যাকেট। এটিও সবকিছুর সঙ্গে মানিয়ে যায়। তবে কালার ফুল লেদার জ্যাকেটের কথা না বললেই নয়। গ্রাঁ প্রি মোটরসাইকেল রেসিং রোড থেকে এসেছে এই জ্যাকেট। অনেকেই এখন এটি বেছে নিচ্ছে।  

বিজ্ঞাপন

জ্যাকেট ছাড়াও আপারওয়্যার হিসেবে বাইকারদের কটি পরতে দেখা যায়। এটি মূলত র‍্যাড বাইকারদের ড্রেস। লেদার ও ডেনিম—দুই ধরনেরই বাইকার কটি আছে।  
অনেক বাইকার লেদার প্যান্ট পরেন। এটি লেদার জ্যাকেটের সঙ্গে খুব ভালো মানায়। তবে খুব একটা আরামদায়ক নয় বলে বেশির ভাগ বাইকার জিনসে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। নারীদের মধ্যে বাইক চালানোর সময় আগে স্কিনি জিনস পরার চল থাকলেও, এখন সবাই স্ট্রেট লেগ বা বুটকাট জিনস বেছে নিচ্ছেন।

জুতা হিসেবে বাইকারদের পছন্দ লেদার বুট। এ ছাড়া আছে মোটো শু, যা রাইডার বুট ও স্নিকারের স্টাইলিশ সংকর।      

অ্যাকসেসরিজ হিসেবে বাইকার গ্লভস, গথিক স্টাইলের চেইন, ব্রেসলেট, রিং, অ্যাভিয়েটর সানগ্লাস ব্যান্ডানা নারী-পুরুষ সব বাইকারের জন্যই পারফেক্ট। তবে পারসোনালিটির সঙ্গে মিলিয়ে ডিজাইন করা হেলমেট হতে পারে সেরা বাইকার অ্যাকসেসরিজ।      

বাইকারপ্রাণিত লুক

নারী–পুরুষ উভয়ের জন্য ক্ল্যাসিক ও বাইকার স্টাইল হলো, হেড টু টো ‘অল ব্ল্যাক লুক’। এ ছাড়া ডেনিম প্যান্টের সঙ্গে ব্ল্যাক লেদার জ্যাকেট দিয়ে বাইকার লুক আনা যায়। এর সঙ্গে গথিক ডিজাইনের বড় বাকল বেল্ট, হাতে স্কাল হেড বা ড্রাগন হেড রিং আর ইচ্ছা হলে ব্যান্ডানাও পরা যায়। নারীরা পার্টিতেও হাজির হতে পারেন গাউন বা শাড়ির ওপর ব্ল্যাক লেদার জ্যাকেট চাপিয়ে আর পায়ে ব্ল্যাক বুট গলিয়ে। ব্যস! এভাবেই হয়ে যেতে পারে শিক ও র‍্যাড বাইকারপ্রাণিত পার্টি লুক!

মডেল: প্রিন্স ও ফয়সাল, ছবি: সাইফুল ইসলাম

প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২২, ০৬: ৪৯
বিজ্ঞাপন