ট্রেন্ডি ওভারসাইজ পোশাকে স্টাইলিশ লাগবে যেভাবে
শেয়ার করুন
ফলো করুন

ঢিলেঢালা তো বটেই, বরং অনেক সময় বেঢপ সাইজের পোশাকে সবার সামনে আসছেন স্টাইল আইকন হিসেবে সমাদৃত তারকারা। ফ্যাশন হাউজগুলোও এই ট্রেন্ডের ট্রেন চালু করেছে আর চলছে জোরেশোরে। আমাদের দেশের গ্লোবাল নাগরিক ফ্যাশনিস্তারাও তাই এই ট্রেনে উঠে পড়তে সময় নেননি।

ওভারসাইজ ফ্যাশনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ব্যাপারগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে আরাম। করোনা–পরবর্তী সময়ে বড়সড় বা ঢিলেঢালা পোশাকের প্রতি আকর্ষণ বেড়েছে তরুণদের। ঘর থেকে শুরু করে কর্মক্ষেত্রে—সর্বত্রই লুজ ফিটিংয়ের আরামদায়ক পোশাক বেছে নিচ্ছেন সবাই।

বিজ্ঞাপন

ওভারসাইজ পোশাক হলো ঢিলেঢালা জামাকাপড়, যা সাধারণত আপনার শরীরের মাপের চাইতে অনেক বড় হয়ে থাকে। অর্থাৎ, নির্দিষ্টভাবে এর কোনো ফিটিং থাকে না। যেহেতু ওভারসাইজ পোশাক বেশির ভাগ সময় ইউনিসেক্স আর নিরপেক্ষ স্টাইলের হয়, তাই প্রায়ই দেখা যায় ছেলে-মেয়ে উভয়ের জন্যই এ ধরনের টপ বা বটম–জাতীয় পোশাক উপযুক্ত এবং ফ্যাশনেবল। আপনি যখন ওভারসাইজ জামাকাপড় কিনবেন, তখন আসলে আপনার এর সাইজ নিয়ে চিন্তা করার দরকার নেই। মানানসই রঙের পোশাকটি কিনে নিজের মতো করে স্টাইলিং করলেই হলো।

এখনকার দিনে তরুণদের মধ্যে ওভারসাইজ পোশাক পরার প্রবণতা বেশ লক্ষ করা যায়। অথচ এক দীর্ঘ সময়ের জন্য আঁটসাঁট পোশাকই ছিল ফ্যাশন। তবে নব্বইয়ের দশকে আবার ব্যাগি স্টাইল জামাকাপড় খুব জনপ্রিয় ছিল। তারপর গত ১৫ বছরে ফিটেড এমনকি বডি হাগিং ডিজাইনের পোশাকই বেশি ট্রেন্ডে থেকেছে। তবে এখন করোনা–পরবর্তী ফ্যাশনে পোশাকের শৈলীতে বিবর্তনের পরে আবার ব্যাগি আর ঢাউস আকারের আরামদায়ক পোশাকগুলো ধীরে ধীরে ট্রেন্ডে আসছে। ওভারসাইজ বা বড় আকারের পোশাকগুলো অত্যন্ত ট্রেন্ডি লাগবে, যদি আপনি তা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে জানেন। এতে চমৎকার শিলুয়েট মেলে, যদি সঠিকভাবে জোড় বেধে পরা যায় বেল্ট, জুতসই বটম বা জুতার সঙ্গে।

বিজ্ঞাপন

এ বছর সবগুলো আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ইভেন্টে দেখা গেছে বড় আকারের শার্ট, টিউনিক, স্কার্ট, প্যান্ট, জ্যাকেট। গুচি, ব্যালেন্সিয়াগা আর মোশিনোর মতো ডিজাইনার লেবেল এই ওভারসাইজ ফ্যাশন নিয়ে মেতে আছে। আসলে এই বেঢপ পোশাক ফ্যাশনের সমস্ত নিয়ম ভঙ্গ করছে আর পোশাককে একই সঙ্গে আরামদায়ক ও ট্রেন্ডি করে তুলছে।

ফ্যাশনের ট্রেন্ড ও কোনো বিশেষ ধরনের পোশাক পরার প্রবণতা প্রায়ই চক্রের মধ্য দিয়ে যায়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ওভারসাইজ পোশাক স্পষ্টভাবে প্রত্যাবর্তন করেছে, যা অতীতে জনপ্রিয় ছিল কিছুটা ভিন্ন আঙ্গিকে। নব্বই আর আশির দশকের ফ্যাশন থেকেই বড় আকারের ও ঢিলেঢালা জামাকাপড় ফিরে এসেছে আসলে। আমাদের দেশের অনেক ডিজাইনার এখন সচেতনভাবে তাঁদের সংগ্রহে ওভারসাইজ জামাকাপড় অন্তর্ভুক্ত করছেন, যা এটিকে আরও জনপ্রিয় করেছে এবং মূলধারার ফ্যাশনে পরিণত করেছে।

ওভারসাইজ জামাকাপড়ের এক বড় সুবিধা হলো, এটি যেকোনো ধরনের হতে পারে, যেকোনো জায়গায় পরা যেতে পারে এবং সবাই পরতে পারেন। এখন ফ্যাশনে মিনিমালিজমের কথা বলা হচ্ছে আর কম জামাকাপড় নিজের সংগ্রহে রাখতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে সবাইকে। সেদিক দিয়ে সর্বজনীন ওভারসাইজ পোশাক মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ করে বহুভাবে পরা যায় বলে এর কদর বাড়ছে।

আজকাল অনেকেই ফিটেড পোশাকের চেয়ে ওভারসাইজ পোশাককে বেশি আরামদায়ক বলে মনে করেন। এ কারণেই পরিধানের জন্য ওভারসাইজ পোশাক বেছে নেন সবাই। সবকিছু মিলিয়েই আসলে ওভারসাইজ জামাকাপড় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একটি জনপ্রিয় ফ্যাশন ট্রেন্ড হয়ে উঠেছে।

আমাদের দেশে ওভারসাইজ টপ, ব্লাউজ, শার্ট, টি–শার্ট পরা খুবই আরামদায়ক। আবার এদিকে লেগিংস হোক বা পালাজ্জো—এর সঙ্গে মানিয়ে যাবে সবই। দেশি কায়দায় ওভারসাইজ কুর্তি বা কামিজ পরা যায়। কোঅর্ডেও এখন বেঢপ কাটের জনপ্রিয়তা রয়েছে। ফিউশন ধরনের কাফতান বা টপেও ওভারসাইজ স্টাইল খুব মানায়। এ ধরনের পোশাকের সঙ্গে অনুষঙ্গ আর জুতা একটু পরিপাটি থাকলে পোশাকি ভাব চলে আসবে। তবে এই বাঁধনহারা ফ্যাশন আসলেই মুক্তি আর তারুণ্যের জয় এনে দিয়েছে বলতেই হয়।

ছবি : সিকোসো আর রান্যাফুল

প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৩, ১৩: ০০
বিজ্ঞাপন