কার্গো প্যান্ট হলো এমন ট্রাউজার বা প্যান্ট, যার পায়ের পাশে একাধিক বড় পকেট থাকে। এগুলো আসলে প্রাথমিকভাবে সামরিক বাহিনীর পরার উদ্দেশ্যে ডিজাইন করা হয়েছিল। ডিউটির সময় বিভিন্ন সরঞ্জাম সরবরাহ ও বহন করার জন্য সামরিক বাহিনীর সদস্যরা এমন পকেটওয়ালা প্যান্ট পরতেন। অন্যান্য পেশার ক্ষেত্রেও এভাবে এটা-সেটা বহন করা যায় বলে কার্গো প্যান্ট বেছে নেওয়া শুরু করেন অনেকেই। পরবর্তী সময় তরুণদের ফ্যাশনে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এটি।
কার্গো প্যান্টগুলো সাধারণত ঢিলেঢালা আর আরামদায়ক ফিটিংয়ের হয়। কার্গো প্যান্ট এখন মূলধারার ফ্যাশনে এক প্রতিষ্ঠিত ডিজাইন। তবে ফিরে তাকালে দেখা যাবে, নব্বইয়ের দশকে রোজকার পোশাক হিসেবে এটি প্রথম বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। বিশেষত ভিন্ন কিছুর সন্ধানে হন্যে হওয়া ফ্যাশনেবল তরুণ প্রজন্ম লুফে নিয়েছিল এই স্টাইল। আরবান ফ্যাশন ট্রেন্ডে ধীরে ধীরে পাকাপোক্ত জায়গা করে নিয়েছে এই কার্গো প্যান্ট।
ওভারসাইজড কার্গো প্যান্টগুলো ভ্রমণ বা প্রতিদিন পরার জন্য বেশ উপযুক্ত। এটিকে অনেকভাবে স্টাইলিং করা যায়। অনেক ধরনের টপ ও অনুষঙ্গের সঙ্গে সমন্বয় করা যায় অনায়াসে। তাই রোজকার পরিধেয় হিসেবে একই সঙ্গে স্টাইলিশ ও আরামদায়ক সংযোজন হতে পারে কার্গো প্যান্ট। আর এই প্যান্ট অনেকটাই লিঙ্গ নিরপেক্ষ। তবে আজকাল মেয়েদের কার্গো প্যান্টে এমবেলিশমেন্ট রাখা হচ্ছে। এবারে এই ট্রেন্ডি কার্গো প্যান্ট কীভাবে স্টাইলিং করা যায়, তা নিয়ে থাকল কিছু পরামর্শ।
যেহেতু এসব প্যান্ট সাধারণত আকারে বড় ও ঢিলেঢালা, তাই অনুপাতের ভারসাম্য বজায় রাখতে ফিটিং টপ যোগ করা ভালো। ক্রপ-টপ বা টাক-ইন করা ফিটেড শার্ট দারুণভাবে ভারসাম্য তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে। এর সঙ্গে অনায়াসে চলতে পারে টি-শার্টও।
কার্গো প্যান্টগুলো বিভিন্ন ধরনের জুতার সঙ্গে দুর্দান্ত দেখাতে পারে। তবে সঠিক বটম-জুতা জুটি বেছে নেওয়া প্রয়োজন এ ক্ষেত্রে। ক্যাজুয়াল কার্গো প্যান্ট পরে আপনার সাজপোশাকে নজরকাড়া উপাদান যোগ করতে আপনি সঙ্গে স্নিকার্স, কমব্যাট বুট, এমনকি স্টিলেটো হিলসও পরতে পারেন।
কার্গো প্যান্টগুলো সাধারণত ক্যাজুয়াল লুক এনে দেয়। তবে যদি আপনি সঠিক অনুষঙ্গসহযোগে নিজেকে সাজাতে পারেন, তবে কার্গো প্যান্টেই আপনি হবেন শো-স্টপার। কোমরে একটি জুতসই বেল্ট যুক্ত করুন অথবা আপনার লুকে বোহেমিয়ান ভাব আনতে এর সঙ্গে স্টেটমেন্ট নেকপিস জুড়ে দিতে পারেন।
বাকি সবকিছু আটপৌরে রেখেও শুধু সঠিক লেয়ারিং আপনার পোশাকে অনন্য মাত্রা যোগ করতে পারে এবং পুরো লুকে ফরমাল আমেজ বা নাটকীয়তা আনতে সহায়তা করতে পারে। ডেনিম জ্যাকেট বা ব্লেজারগুলো কার্গো প্যান্ট ও টি-শার্টের সঙ্গে লেয়ারিংয়ের একটি দুর্দান্ত উপায় হতে পারে। আবার পাতলা ফেব্রিকের একটি এথনিক ডিজাইনের শ্রাগ কার্গো প্যান্ট-ক্রপ টপের লুককে অনেকটা বদলে দেয়।
কালো, খাকি এবং আর্মি গ্রিনের মতো নিরপেক্ষ রং কার্গো প্যান্টের ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহৃত হয়। মনে হয়, এর সামরিক ইতিহাসই এর কারণ, কিন্তু এখন এই মুক্ত ফ্যাশনের যুগে উজ্জ্বল রং বা প্রিন্ট নিয়ে পরীক্ষা করা যেতেই পারে কার্গো প্যান্টে।
জিজি হাদিদ থেকে শুরু করে কার্ডাশিয়ান বোনেরা-কার্গো প্যান্টের সঙ্গে হুডিতে প্রায়ই দেখা মিলছে আজকাল নামকরা সব তারকাকে। তবে ফ্যাশন আইকনরা যে এই কম্বিনেশন আরামের জন্যই পরছেন, তা বুঝতে বাকি নেই ভক্তকুলের। আর তাই এই ট্রেন্ডে গা ভাসাচ্ছেন সবাই।
মনে রাখবেন, ফ্যাশন মানেই নিজের সাজপোশাক উপভোগ করা এবং আপনার ব্যক্তিগত স্টাইল নিজের মতো করে প্রকাশ করা। আপনি আপনার জন্য নিখুঁত লুক খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন সমন্বয় যাচাই করে দেখতে সংকোচ বোধ করবেন না। হোক না তা কার্গো প্যান্ট দিয়েই।
ছবি: পেকজেলসডটকম