‘বার্বি’ সিনেমার যে শক্তিশালী ৬টি বার্তার কারণে বার্বি সাজছে মেয়েরা
শেয়ার করুন
ফলো করুন

‘বার্বি’ ২০২৩ সালের সবচেয়ে বেশি আলোড়ন তোলা চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে একটি। বিশ্বজুড়েই চলচ্চিত্রটি ব্যাপক সমালোচনা আর আলোচনার ঝড় তুলেছে। ‘বার্বি’র পরিচালনায় রয়েছেন গ্রেটা গারউইগ। সেই সঙ্গে ‘বার্বি’ চরিত্রে মার্গো রবি এবং ‘কেন’ চরিত্রে রায়ান গসলিংকে দেখা গেছে। চলচ্চিত্রটি ব্যাপক সাড়া ফেলার পাশাপাশি এটি নিয়ে বিতর্কেরও কোনো শেষ নেই। কেউ এর ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরছেন, কেউ নেতিবাচক দিকগুলো।

বলা যায়, দুনিয়াজুড়ে দর্শকেরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছেন। তবে চলচ্চিত্রটি থেকে বেশ কিছু শক্তিশালী বার্তা পাওয়া যায়। আর এ জন্যই মনে হয়, মেয়েরা যে যেভাবে পারছেন, ‘বার্বি’ সেজেই মুভিটি উদ্‌যাপন করছেন, একাত্মতা প্রকাশ করছেন এই ছবিতে দেওয়া বার্তাগুলোর সঙ্গে।

১. বার্বিরা যেকোনো কিছু করতে পারে

বার্বি পুতুল মূলত ১৯৫০-এর দশকে রুথ হ্যান্ডলারের সৃষ্টি। এটি সৃষ্টির পেছনের কারণ ছিল, শিশুরা সে সময় ছোট পুতুল নিয়ে খেলত এবং তার পরিচর্যা করত। এটি তাদের মধ্যে এমন এক ধারণার জন্ম দিতে থাকে যে নারীরা শুধু মা হবেন এবং সন্তানদের দেখাশোনা করবেন। তাদের এই ধারণা থেকে বের করে আনতেই মূলত ‘বার্বি’ বানান রুথ। তাঁর বানানো বার্বি ছিল লম্বা, সুদর্শনা আর স্বর্ণকেশী। বার্বি কেনের প্রেমে পড়লেও তাকে বিয়ে করেনি, এমনকি সন্তানও জন্ম দেয়নি। সবচেয়ে বড় কথা, চলচ্চিত্রটিতে দেখানো হয়, বার্বিরা যে শুধু রূপবতী, তা নয়; বার্বিরা চাইলে নভোচারী, চিকিৎসক আর রাষ্ট্রপতিও হয়ে দেখাতে পারে। এককথায়, নারীরা চাইলেই যেকোনো কিছুই করতে পারেন।

বিজ্ঞাপন

২. বার্বিরা নিজের ভাগ্য নিজে তৈরি করে

চলচ্চিত্রটিতে দেখানো হয়, বার্বি মানুষ হওয়ার জন্য অন্য বার্বিদের সঙ্গে নিজের বাড়ি এবং নিজের সুরক্ষাবলয় থেকে বের হয়ে আসে। নিজের ভাগ্যকে নিজের হাতে তুলে নেয়। বার্বি শুধু বিয়ে করে আর সন্তান পালন করে জীবন কাটিয়ে দেয় না। বার্বিরা হতাশ হয়ে যায় না; বরং পৃথিবীর পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেকে পরিবর্তন করতে থাকে, যা নারীদের একধরনের আশা ও অনুপ্রেরণা জোগায়।

বিজ্ঞাপন

৩. কেনকে ছাড়াই বার্বি বেঁচে থাকতে পারে

কেন তার জীবনের বেশির ভাগ সময় বার্বিকে মুগ্ধ করতে এবং তার মনোযোগ আকর্ষণ করতেই কাটিয়ে দেয়। তবে বার্বির জীবনে শুধু কেন বলতে কিছুই নেই। বার্বি কেনকে ছাড়াই সুন্দর জীবন কাটাতে পারে। এই বার্তা নারীদের পুরুষের প্রতি নির্ভরশীল হওয়া থেকে বেরিয়ে আসতে সাহস জোগায়। নারীরা পুরুষ ছাড়াই একা বেঁচে থাকতে পারেন।

৪. নিখুঁত সুন্দর হওয়াই শেষ কথা নয়

বার্বি নিখুঁত রূপবতী। কিন্তু এটাই শেষ কথা নয়। বার্বি যখন পুতুল থেকে মানবজীবনে প্রবেশ করে, তখন তাকে বিভিন্ন দুর্যোগের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এসব অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে সে আগে কখনোই যায়নি। এমনকি সে রূপবতী হওয়ার পরও নারীদের প্রতি মানুষের যে প্রত্যাশা, তা রক্ষা করতে পারে না। এখানে দেখানো হয়, নারীর জীবন কতটা কঠিন। এই মুভির অন্যতম বার্তা হচ্ছে, নিখুঁত হওয়াই শেষ কথা নয়।

৫. সাধারণ হয়েও কেউ অনেক কিছু করতে পারেন

চলচ্চিত্রটিতে বিশেষ ভূমিকায় বিভিন্ন বার্বিকে দেখানো হয়। কেউ চিকিৎসক, কেউ নভোচারী, কেউ রাষ্ট্রপতি। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, মূল চরিত্রে বার্বির উল্লেখযোগ্য কোনো প্রতিভা দেখানো হয়নি। তবে সে অন্যান্য বার্বিকে পিতৃতান্ত্রিক সমাজ থেকে রক্ষা করে। এ ছাড়া অনেক সীমাবদ্ধতা আছে, এমন বার্বিকেও দেখানো হয়, যারা বার্বিল্যান্ডকে বাঁচাতে অনেক বড় ভূমিকা রাখে। এ থেকে বোঝা যায় যে সাধারণ মেয়েরাও অনেক কিছু করতে পারেন। এর জন্য চাই নিজের ইচ্ছাশক্তি।

৬. নিরাপত্তাহীনতা মানুষকে ধ্বংস করতে পারে

‘বার্বি’ মুভিতে ‘বার্বি’ আর ‘গ্লোরিয়া’কে দেখা যায়, যখনই তারা পারস্পরিক সন্দেহের মুখোমুখি হয়, তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। ফলে গ্লোরিয়ার নিজের জীবনের প্রতি ঘৃণা তৈরি হয়। কোনো সমাধান না দেখে বার্বি হাল ছেড়ে দেয় এবং কেন বার্বিল্যান্ডে পিতৃতন্ত্রের চর্চা চালাতে থাকে, যা দ্রুতই সবকিছু ধ্বংস করে দেয়। নিরাপত্তাহীনতা মানুষকে অসহায় করে তুলতে পারে। এমনকি আশাবাদী মানুষও হতাশায় পড়লে ভুল পথে পরিচালিত হতে পারেন। তাই জীবনে যা–ই হোক, নিজের প্রতি আস্থা রাখতে হবে।

ছবি: পূর্ণ দাস

প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৩, ১৬: ০০
বিজ্ঞাপন