ফ্যাশন ও ফটোগ্রাফি প্রদর্শনীর মাধ্যমে বেরাইদের নারীদের সৃষ্টির উদ্‌যাপন
শেয়ার করুন
ফলো করুন

জীবনে প্রথমবারের মতো বেরাইদের স্থানীয় ২২ নারী তাঁদের জীবনের গল্প বুনেছেন ১৫টি পোশাকের একটি ফ্যাশন সংগ্রহে। শুধু তা–ই নয়, তাঁরা এই সংগ্রহসহ পরে ফ্যাশন শোতেও অংশ নিয়েছেন।

এমনই উদ্দীপনা জাগানো উদ্যোগ, ‘নিডল, থ্রেড অ্যান্ড এ স্প্ল্যাশ অব ওয়াটার’ নামের এই  ফ্যাশন আর ফটোগ্রাফি প্রদর্শনী শুরু হয়েছে ১১ আগস্ট ফরাসি সংস্কৃতি কেন্দ্র আলিয়ঁস ফ্রঁসেসের লা গ্যালারিতে। বিকেল সাড়ে পাঁচটায় উদ্বোধন করা হয় আলোকচিত্রী রাফিদ আল জহুর আর ফ্যাশন হাউস পিরান বাংলাদেশের আয়োজনে এই ফ্যাশন ও ফটোগ্রাফির যুগলবন্দীতে সাজানো প্রদর্শনীর। প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত প্রদর্শনীটি খোলা থাকবে। এটি সবার জন্য উন্মুক্ত।

বিজ্ঞাপন

এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফ্যাশন হাউস স্টুডিও বিবিয়ানার প্রতিষ্ঠাতা লিপি খন্দকার, বাংলাদেশ জাতীয় কারুশিল্প পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও সাংবাদিক শেখ সাইফুর রহমান, সুপরিচিত মেকআপ শিল্পী বাপন রহমান ও সাজেদা ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান এবং ইউসেফ বাংলাদেশেরও নির্বাহী পরিচালক আবদুর করিম।

প্রদর্শনীতে মূলত দ্রুত নগরায়ণের কারণে একটি এলাকার জনসাধারণের জীবনমানের আকস্মিক ও অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন এবং এর কুফলকেই মূলত তুলে ধরা হয়েছে। আগে এই এলাকা ঢাকার অদূরে হলেও বর্তমানে সেটি রাজধানীর মধ্যেই। আর এই বেরাইদ এলাকার নারীদের জীবন, স্বপ্ন, আশা ও সংগ্রামকে পিরান বাংলাদেশ ধরার চেষ্টা করেছে পোশাক নকশার ভেতর দিয়ে। আর এই অভিযাত্রাকে ক্যামেরায় ধরেছেন ডকুমেন্টারি ফটোগ্রাফার রাফিদ আল জহুর। এখানকার নারীদের অদম্য জীবন ও এর সৃজনের মধ্য দিয়ে উদ্‌যাপনই প্রতীয়মান হয়েছে এই প্রদর্শনীতে।  

বিজ্ঞাপন

সুবিধাবঞ্চিত এই নারীদের পাশাপাশি এই সৃজন প্রকল্প আসলে স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান পিরান বাংলাদেশের অভিযাত্রাও বটে। তাঁরা সাজিদা ফাউন্ডেশনের সহায়তায় ২২ নারীকে নিয়ে এক মাসের কর্মশালা করেন। এরপর তাঁদের দিয়ে তৈরি করানো হয় এসব পোশাক। অবশ্য সার্বিক তত্ত্ববধানে ছিলেন পিরান বাংলাদেশের দুই প্রতিষ্ঠাতা জারিন তাসনিম জয়িতা ও তাঁর বোন নাজিফা তাবাসসুম পিউলি। উল্লেখ্য, সাজিদা ফাউন্ডেশনের ‘সুদিন’ প্রকল্পের আওতায় এই পুরো কর্মশালাটি আয়োজন করা হয়।

লিপি খন্দকার বলেন, ‘আমরা চাই, নতুন ডিজাইনাররা বেশি বেশি কাজ করুক। আমরা তাঁদের কাজের পাশে থাকতে চাই এবং সব রকম সহযোগিতা করতে চাই।’

শেখ সাইফুর রহমান ডিজাইনের প্রশংসা করে বলেন, পিরান বাংলাদেশের এই উদ্যোগকে আরও এগিয়ে নিতে ডিজাইনকে টেকসই করতে হবে। এ ছাড়া এসব নারীকে আরও কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন তিনি। বাপন রহমান বলেন, এই অনন্য আয়োজনে নবীন ডিজাইনারদের কাজ দেখে তাঁর ৩৮ বছর আগে প্রথম ফ্যাশন দুনিয়ায় পা রাখার স্মৃতি মনে পড়ে গেছে।

ইউসেফের নির্বাহী পরিচালক আবদুর করিম এই প্রদর্শনীর আলোকচিত্রী রাফিদ আল জহুরের কাজের প্রশংসা করেন; আর সেই সঙ্গে পিরানেরও। তিনি এই উদ্যোগকে টেকসই করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

অতিথিদের বক্তব্যের পর এই প্রকল্প নিয়ে নির্মিত একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। এরপর ছিল স্থানীয় মানুষের অংশগ্রহণে উপভোগ্য ফ্যাশন শো।

ছবি: হাল ফ্যাশন

প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২৩, ১৯: ০২
বিজ্ঞাপন