এমন গরমের দিনে হঠাৎ বৃষ্টি আমাদের জন্য উপভোগ্য হলেও দিনযাপনে তৈরি করে বেশ কিছু সমস্যা। হয়তো পছন্দের জুতাজোড়া পরে অফিস যাচ্ছেন কেউ বা স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে, তখন হঠাৎ বৃষ্টি নামলেই বিপদ। এদিকে গরম আবহাওয়ায় সারাক্ষণ পা ঘেমে থাকার বিষয়টি তো আছেই। পছন্দের জুতার দশা দফারফা হওয়া থেকে বাঁচাতে দ্রুত নিতে হবে কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।
বৃষ্টির পানি থেকে পছন্দের দামি চামড়ার জুতাকে বাঁচাতে সেগুলো ঝড়-জলের দিনে ব্যবহার না করাই শ্রেয়। তা–ও যদি পরতেই হয় আর রাস্তায় বৃষ্টিতে কাদা-পানি লেগে যায়, তাহলে ভেজা জুতা থেকে যত দ্রুত সম্ভব অতিরিক্ত পানি মুছে ফেলতে হবে। তারপর বাতাসে শুকিয়ে নিতে হবে। তাড়াহুড়া করে কখনোই সরাসরি চুলার তাপ বা ড্রায়ার দিয়ে শুকানো উচিত নয়। এতে চামড়াসহ জুতার বিভিন্ন উপাদানের ক্ষতি হয়। আকার নষ্ট হয়ে ব্যবহারের অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে। তাই তাপে শুকানোর চিন্তা একেবারেই বাদ দিতে হবে।
ভেজা জুতা থেকে অতিরিক্ত পানি পুরোনো খবরের কাগজ বা নরম কাপড় দিয়ে চেপে চেপে মুছে নিতে হবে। ভেতরের অংশের জন্য নিউজপ্রিন্ট বা চোষ কাগজের বল বানিয়ে জুতার ভেতর রেখে দেওয়া যেতে পারে। এতে করে তা দ্রুত শুকিয়ে যায়। জুতার ফিতা এবং ভেতরের সোলগুলো বের করে আলাদা শুকাতে দিতে হবে। জুতা সাদা হলে রঙিন কাপড় বা কাগজ এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ, সেগুলো থেকে রং উঠে জুতা নষ্ট করতে পারে।
অতিরিক্ত পানি মুছে ফেলার পর জুতাগুলোকে ফ্যানের নিচে বা বাতাস আসা-যাওয়া করে—এমন জায়গায় রেখে দিতে হবে। জুতার রং বাঁচাতে কখনোই সরাসরি সূর্যের আলো আসে—এমন জায়গায় রাখা যাবে না।
ভেজা জুতা থেকে তৈরি হতে পারে বাজে গন্ধ। দুর্গন্ধ দূর করতে কাজে লাগানো যায় ভিনেগার বা এসেনশিয়াল অয়েল। ছোট সুতি কাপড় অল্প ভিনেগারে ভিজিয়ে জুতার ভেতরটা ভালো করে মুছে নিতে হবে। কাগজের বল বানিয়ে জুতা শুকালেও সেই কাগজের বলে দু-তিন ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েল যোগ করলে বেঁচে যাবে প্রিয় জুতাজোড়া অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্গন্ধ থেকে।
সাধারণ ‘শু কন্ডিশনার’ দিয়ে পলিশ না করিয়ে বর্ষার শুরুতেই চামড়ার জুতা ‘শু ওয়াক্সিং’ করিয়ে নেওয়া ভালো। এতে জুতা অনেকটাই সুরক্ষিত থাকবে। ওয়াটারপ্রুফ স্প্রের নিয়মিত ব্যবহারও বাঁচাতে পারে পছন্দের জুতাকে। তবে স্প্রে প্রয়োগে জুতার রং নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই স্প্রে কেনার সময়ই ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করে নিতে হবে। উচ্চ গুণাগুণসম্পন্ন কন্ডিশনার ও ওয়াটারপ্রুফ স্প্রের ব্যবহার জুতায় আলাদা সুরক্ষা স্তর তৈরি করে ক্ষতির সম্ভাবনা কমায়।
দামি জুতাগুলো ঝড়বাদল আর ঝুম বৃষ্টির সময় পরার পরিকল্পনা না করাই উচিত। বৃষ্টি বা কাদা-পানিতে নষ্ট হতে পারে—এমন জুতার বদলে স্টাইলিশ অন্য কোনো ওয়াটারপ্রুফ জুতা ব্যবহারই বুদ্ধিমানের পরিচয় হবে। আর তুলে রাখার সময়ও অবশ্যই জুতাজোড়াকে কাপড়ের ব্যাগে রাখতে হবে অথবা খবরের কাগজ দিয়ে মুড়িয়ে বাক্সে এমনভাবে রাখতে হবে, যাতে দীর্ঘদিন এতে আর্দ্রতা জমে ছাতা বা মোল্ড না পড়ে।
ছবি: হাল ফ্যাশন ও পেকজেলসডটকম