ব্যাগের নকশায় রোমানের রোমান্টিসিজম
শেয়ার করুন
ফলো করুন

রোমান সাম্রাজ্যের কোনো মানুষ নন রোমান। তিনি আমাদেরই একজন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের মূল ফটকের কাছে গেলে স্ট্রিট আর্টিস্ট রোমান সুজনের শিল্পোদ্যোগ রোমান্টিসিজমের দৃষ্টিনন্দন ব্যাগের পসরা আপনার নজর কাড়বেই।

আট দশকের বেশি সময় ধরে বিশ্বজুড়ে রাজত্ব করে যাচ্ছে টোট ব্যাগ। গুচি, চ্যানেল বা সাঁ লরাঁর মতো বিখ্যাত ব্র্যান্ড থেকে শুরু করে ফুটপাতের পসরা—সব জায়গায় জয়জয়কার এই ঝোলা ব্যাগের। এই টোট ব্যাগ, ঝোলা ব্যাগ বা ক্যানভাস ব্যাগকে বলা যেতে পারে এ সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্যাশন অনুষঙ্গ। এর উৎপত্তি হয়েছিল ১৯৪৪ সালে। আর এর প্রবক্তার নাম এল এল বিন। গল্পটা বেশ মজার। চল্লিশের দশকে আমেরিকার বেশির ভাগ নাগরিকদের ঘরে রেফ্রিজারেটর ছিল না।

তখন বিশাল আকৃতির পানি নিরোধক ক্যানভাস ব্যাগ নিয়ে আসেন বিন। এই ব্যাগে করে বরফ গাড়িতে পরিবহন করা হতো ঘরোয়া ফ্রিজারে সরবরাহ করতে। এভাবেই প্রয়োজনে আবিষ্কার হয় টোট ব্যাগ। টোট মানে আসলে চলতি ভাষায় বহন করা বোঝায় মার্কিন মুলুকে। ষাটের দশকে এসে এই টোট ব্যাগ পরিণত হয় ফ্যাশন স্টেটমেন্টে।

বিজ্ঞাপন

এবার চলে আসি আমাদের চিরচেনা শাহবাগের পথের ধারে। ভবঘুরে শিল্পী রোমান সুজন নিজের নামের ছোঁয়া রেখে তাঁর ভ্রাম্যমাণ ব্যাগের দোকানের নাম রেখেছেন রোমান্টিসিজিম। জানা গেল, বিভিন্ন বায়িং হাউস থেকে পাওয়া গার্মেন্টসের ফ্যাশন বর্জ্য, কাটপিস, ঝুট তো আছেই, বিভিন্ন ধরনের বিক্রেতাদের কাছ থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করে রোমান বানান এই টোট ব্যাগ বা ঝোলা ব্যাগ।

কখনো কখনো সরাসরি কারও কাছ থেকে সংগ্রহ করেন এই ব্যাগ তিনি। পুরোনো, ফেলে দেওয়া ব্যাগকে আপসাইকেল করে নতুন ব্যাগ তৈরি করা হয়। বলতেই হয়, আপসাইকেল করা ব্যাগের নান্দনিক সংগ্রহ দেখা গেল পথের ধারের এই দোকানে। কুশিকাঁটা, ব্লক, হ্যান্ড পেইন্ট, স্প্রে, বাটিক, পুঁতি আর ফেব্রিক দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ব্যাগগুলো। প্রতিটি ব্যাগের ডিজাইন অন্যটার চেয়ে আলাদা। দাম মাত্র ১০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে।

রোমানের দোকানে সারাক্ষণ ভিড় লেগেই থাকে। জানা যায়, টোট ব্যাগ আর কুশিকাঁটা ব্যাগের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এখানে সবচেয়ে বেশি ভিড় জমে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রোজই রোমান বসেন এই ব্যাগের পসরা নিয়ে। চাইলে নিজের জন্য কিংবা প্রিয় মানুষকে উপহার দিতে ঢুঁ মারতে পারেন নান্দনিক এই ব্যাগের সমারোহে।

বিজ্ঞাপন
প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২: ০৩
বিজ্ঞাপন