ফ্যাশন শব্দটিকে আসলে বিভিন্নভাবে বর্ণনা করা যেতে পারে। ট্রেন্ড বা চলতি ধারা অনুসারে পোশাক, সাজসজ্জা আর বডি ল্যাঙ্গুয়েজ; অর্থাৎ সামগ্রিকভাবে উপস্থাপন করাই ফ্যাশন। এটি আসলে একটি চলমান প্রক্রিয়া। তাই সাজপোশাকে সব সময় প্রচলিত ফ্যাশনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা একটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে। তবে বুদ্ধি করে কিছু সহজ কায়দা মেনে চললে সেগুলো আপনাকে ফ্যাশনেবল থাকতে সাহায্য করতে পারে সব সময়।
১। উপযুক্ত ফিটিংয়ের পোশাক
আপনার জন্য উপযুক্ত মাপের পোশাক কোনটি, তা খুঁজে বের করুন। যে পোশাক পরে আপনি সবচেয়ে বেশি আরামদায়ক ও আত্মবিশ্বাসী বোধ করছেন, সেটি খেয়াল রাখুন। সবাই লো রাইজ ফিটেড জিনস পরছে বলেই আপনাকে পরতে হবে, তা নয়। ফ্লেয়ার কাটের ডেনিম ট্রাউজার্সও এখন ফ্যাশনেবল। নয়তো ক্ল্যাসিক বুট কাট তো আছেই।
২। পোশাকের রং নির্বাচন
আপনি চাইলে আপনার কোনো বন্ধু বা প্রিয়জনকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন কোন রং আপনার গায়ে বেশি ফুটে ওঠে। অথবা নিজেও নানা রং পরখ করে যাচাই করে নিতে পারেন। তারপর অবশ্য কিছু ট্রেন্ডি রং না পরলেই নয়। এই যেমন বার্বিকোর জোয়ারে সবাই গোলাপি পরেছেন এ কদিন।
৩। সঠিক অনুষঙ্গ বা অ্যাকসেসরিজ
মানানসই বা নজরকাড়া অ্যাকসেসরিজ একটি সাধারণ পোশাককে অনন্য করে তুলতে পারে। কোনো স্টেটমেন্ট নেকপিস বা একজোড়া ভিন্ন রকমের কানের দুল, স্কার্ফ ইত্যাদি জুড়ে দিলে সাধারণ পোশাককে আকর্ষণীয় করতে পারে তা। তবে সবাই ঢাউস সানগ্লাস আর রংবেরঙের হিল জুতা ব্যবহার করছেন বলেই তা ঢালাওভাবে ব্যবহার করবেন না; বরং কোনটা আপনাকে বেশি মানাচ্ছে, সেটা খেয়াল করুন।
৪। পোশাকে মিক্স ও ম্যাচ করা
প্যাটার্ন, টেক্সচার এবং রং নিয়ে অনায়াসে নানা নিরীক্ষা করতে পারেন। কখনো দেখা যাবে আপনি অপ্রত্যাশিত মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ কম্বিনেশন একত্রে করে একটি অনন্য এবং ফ্যাশনেবল লুক তৈরি করে ফেলেছেন। আর বেসিক কিছু পোশাক, যেমন একরঙা কালো শার্ট, কুর্তি বা ডেনিম প্যান্টের সঙ্গে নজরকাড়া বৈপরীত্য রেখে টপ বা বটম নির্বাচন করলে দারুণ ফ্যাশনেবল লাগবে।
৫। সেকেন্ড হ্যান্ড ফ্যাশন পণ্য কেনাকাটা
সেকেন্ড হ্যান্ড কেনাকাটা করা সাশ্রয়ী মূল্যে পছন্দের জিনিস খুঁজে পাওয়ার একটি দুর্দান্ত উপায় হতে পারে। বিভিন্ন প্রিলাভড বা থ্রিফট শপের ভিনটেজ আইটেম ট্রাই করে দেখতে পারেন। এতে পরিবেশ রক্ষা পাবে, আর পকেটের ওপরও চাপ কমবে।
৬। জামাকাপড়ের যত্ন নেওয়া
সঠিকভাবে কাপড়ের যত্ন নিতে হবে। লেবেলে থাকা নির্দেশাবলি অনুসরণ করুন। নষ্ট বা ছিঁড়ে যাওয়া রোধ করতে কাপড় বেশি নিংড়ে বা অতিরিক্ত ক্ষারযুক্ত সাবান দিয়ে ধোয়া বা কড়া রোদে শুকানো এড়িয়ে চলুন। সংরক্ষণ করতে কোন কাপড় কীভাবে ভাঁজ করে, ঝুলিয়ে বা রোল করে রাখতে হবে, তা খেয়াল করুন।
৭। বুদ্ধিদীপ্ত লেয়ারিং
লেয়ারিং পোশাকে বৈচিত্র্য দেয়। একটা অনন্য লুক তৈরি করতে বিভিন্ন টেক্সচার এবং কাপড় লেয়ারিং ট্রাই করুন। বেসিক টি শার্ট বা কুর্তির ওপরে জুতসই শ্রাগ বা ডাস্টার চড়ালেই নজর কাড়বে তা।
৮। বিভিন্ন লুক নিয়ে নিরীক্ষা
নতুন স্টাইল আর ট্রেন্ড চেষ্টা করতে ভয় পাবেন না। ফ্যাশন মানে পছন্দসই সাজপোশাক দিয়ে নিজেকে মুক্তভাবে মেলে ধরা। তাই মজার ছলেই ফিউশন লুক তৈরি করে দেখতে পারেন। এটি আপনার উপস্থাপনায় অভিনবত্ব আনতে পারে।
৯। আত্মবিশ্বাসী হওয়া
পরিশেষে, দৈনন্দিন ফ্যাশনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ হলো, আপনি যা-ই পরেন, তা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হওয়া। আপনি যা পরে আরাম আর আত্মবিশ্বাসী বোধ করেন, সেটিই পরুন। তবে নতুন জিনিস চেষ্টা করতে ভয় পাবেন না। ফ্যাশন আপনার স্টাইল সেন্স আর ব্যক্তিত্ব প্রকাশ করে। এ ক্ষেত্রে সাহসী হোন, যেন তা আপনাকে অনন্য করে তোলে। নির্ভয়ে এগিয়ে যান এবং বিভিন্ন স্টাইল নিয়ে নিরীক্ষা করুন।
হিরো ইমেজ: পূর্ণ দাস
ছবি: পেকজেলস ডট কম