মারিওরি ফিনলে, টেলর সুইফটের নানি একজন প্রতিভাবান অপেরা শিল্পী ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের বিভিন্ন সিম্ফনি ও সংগীত দলের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। সুরেলা ও প্রশিক্ষিত কণ্ঠে দ্রুতই সংগীতপ্রেমীদের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন মারিওরি। অপেরার পাশাপাশি মেলোডিক গান ও টেলিভিশনে সংগীত পরিবেশন করে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন এই শিল্পী।
মারিওরি ফিনলে ১৯৫০ সালে একটি প্রতিভা অন্বেষণ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন। এই জয়ের সুবাদে এবিসি রেডিও নেটওয়ার্কের পৃষ্ঠপোষকতায় ২২ বছর বয়সে তিনি ১৫ মাসের একটি সংগীত সফরে অংশ নেন। সফরের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে সংগীত পরিবেশন করেন। ঐতিহাসিক ইরাস ট্যুরে তাঁর নাতনি টেলর যেমন গান করেছেন বিশ্বজুড়ে। এই রেডিও সফরের মাধ্যমে মারিওরি যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন।
এই মাইলফলক মারিওরিকে এপিএ টিভিতে প্রচারিত জনপ্রিয় অনুষ্ঠান এল শো প্যান আমেরিকানোর সঞ্চালিকা হিসেবে কাজের সুযোগ তৈরি করে দেয়। ১৭ মাস ধরে সপ্তাহে ৬দিন এই টিভি শো চলতে থাকে। এভাবেই টেলিভিশন ও সংগীতের এই মিলিত যাত্রা গ্ল্যামারাস করে তোলে মারিওরি ফিনলেকে।
১৯৫২ সালে মারিওরি রেমন্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানির প্রেসিডেন্ট রবার্ট ফিনলের সঙ্গে প্রণয়ে জড়ান, তারপর বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় এক ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ে আন্দ্রিয়াই হলো টেলর সুইফটের মা।
মারিওরি ফিনলেরই জগতদ্বিখ্যাত নাতনি টেলর সুইফট ২০ সপ্তাহ চলমান ইরাস ট্যুরের একটি কনসার্টে ‘মারিওরি’ শিরোনামের একটি গানের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ পরিবেশন করেন। গানটি মূলত টেলরের নবম অ্যালবাম ‘এভারমোর’–এর। গানটি তাঁর নানিকে উৎসর্গ করেই লেখা। নানির দেওয়া উপদেশ, স্মৃতি, আত্মচিন্তা, অনুশোচনা ও নানিকে আরও কাছে পাওয়ার আক্ষেপ থেকে লেখা হয়েছে এই গান।
টেলর সুইফট তাঁর ‘মারিওরি’ গানে শুধু শব্দের মাধ্যমে নয়, সুরের মাধ্যমেও নানিকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। মারিওরির অপেরা কণ্ঠস্বর ব্যবহার করা হয়েছে গানটির ব্যাকগ্রাউন্ডে। গানটির শেষাংশে টেলরের কণ্ঠ থেমে যাওয়ার পর সত্যিকারের মারিওরির কণ্ঠ ভেসে ওঠে। যেন সময়ের বাধা পেরিয়ে নানি-নাতনির সুরের অপূর্ব মিলন।
এক সাক্ষাৎকারে টেলর বলেন ‘গানটা শুনলে মনে হয় যেন নানি আমার সঙ্গে গাইছেন।’
ব্রিটিশ সাংবাদিক জেইন লো-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে টেলর বলেন ‘গানটা লেখার সময় আমি পরাবাস্তব একটা অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে গেছি। লেখার সময় মাঝেমধ্যে আমি একদম ভেঙে পড়েছি, এমনকি এটা গাইতেও ভীষণ কষ্ট হয়েছে।’