অবিশ্বাস্য ফিটনেস নিয়ে ৫০-এ পা দিলেন বলিউডের 'গ্রিক গড' হৃত্বিক রোশান
শেয়ার করুন
ফলো করুন

২০০০ সালের কহো না পেয়ার হ্যায় মুভির ক্ল্যাসিক নাচের স্টেপ থেকে ২০২৪ সালের ফাইটার মুভির ইশক য্যায়সা কুছ গানের তালে তালে সম্মোহনী নাচ। ছোট থেকে বড় সবার কাছে সমান জনপ্রিয় বলিউডের গ্রিক গড নামে পরিচিত হৃত্বিক রোশান।২৪ বছরের ক্যারিয়ারে শুধু বলিউডের ড্যান্স আইকন নন, বরঞ্চ স্টাইল, ব্যক্তিত্ব,ফ্যাশন সেন্স,অভিনয় সবকিছু নিয়ে ভক্তদের কাছে হৃত্বিক সবসময়ই থাকেন ভিন্ন উচ্চতায়। তবে ফিটনেসের ক্ষেত্রে তার অবিশ্বাস্য অর্জন রীতিমতো ঈর্ষণীয়। ছোটবেলা থেকে বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা নিয়ে বড় হয়েছেন হৃত্বিক। কথা বলতে সমস্যা হওয়ার জন্য ছয় বছর বয়স থেকে তাঁকে স্পিচ থেরাপি দেওয়া শুরু হয়। অন্য সবার চেয়ে আলাদা তিনি। হাতে পাঁচটির পরিবর্তে তার ছয়টি আঙুল তাঁর। এদিকে,মাত্র ২১ বছর বয়সে ডাক্তাররা তাঁকে জানান, লিগামেন্টের সমস্যার কারণে তিনি আর কখনো নাচতে পারবেন না। কিন্ত তিনি হার মানেননি।

বলিউড সিনেমায় সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়াদের অন্যতম এই মানুষটি সব প্রতিকূলতা জয় করে সেরা নৃত্যশিল্পী হয়েছেন। দুর্দান্ত অভিনয়শৈলী দিয়ে কাহো না পেয়ার হ্যায়, কোই মিল গায়া, লক্ষ্য, কৃশ, যোধা-আকবর,গুজারিশ,বিক্রম ভেধা, অগ্নিপথ আর জিন্দেগী না মিলেগি দোবারার মতো মুভি দিয়ে সকলের হৃদয় জয় করেছেন। আবার, সবচেয়ে স্টাইলিশ অভিনেতার তালিকায় নিজ গুণেই চলে গেছেন শীর্ষে। তিনি প্রমাণ করেছেন, মানুষের অসাধ্য কিছুই নেই । আজ তার ৪৮ তম জন্মদিনে হাল ফ্যাশনের পাঠকদের জন্য রইলো তার ফিটনেস রহস্যের গল্প।

বিজ্ঞাপন

প্রথম থেকেই পাথরে খোদাই করা গ্রিক দেবতার মূর্তির মতো নিখুঁত শারীরিক সৌন্দর্যের কারণে সমাদৃত হন হৃত্বিক রোশান। তবে ধুম-টু মুভিতে সুঠাম দেহের লুকে মুগ্ধ করার পর তেমন অবতারে তাঁকে আর দেখা যায়নি বহুদিন। ২০১৯-এ ওয়ার মুভিতে অভিনয়ের জন্য হৃত্বিক আবার শুরু করেন তাঁর ফিটনেস জার্নি। পেয়ে যান কাঙ্ক্ষিত ফলাফল। সেসময় তার আরেক ভক্ত ও সহঅভিনেতা টাইগার শ্রফ ছিলেন তার সঙ্গে।

একটা লম্বা বিরতির পর বছরের প্রথম ব্লকবাস্টার হিট হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে অচিরেই মুক্তি পাচ্ছে ফাইটার মুভি। আর এই মুভিতে তাঁর লুক নিয়ে হচ্ছে তুমুল আলোচনা। ফাইটার ছবির ট্রেইলরে ৪৮ বছর বয়সের হৃত্বিকের এই অবাক করা বডি দেখে ভক্তরা রীতিমতো মুগ্ধ। কিন্তু এর জন্য আসলে কী রুটিন মেনে চলেন হৃত্বিক?

বিজ্ঞাপন

জানা যায়, হৃত্বিক দিনে ছয়বেলা রুটিন মাফিক খাবার খেয়ে থাকেন যা হিসেবে ৪০০০ ক্যালোরির সমান। তাঁর খাদ্যতালিকায় রয়েছে ঘরে রান্না করা অল্প তেলের সবজি ও রুটি। আমিষের উৎস হিসেবে তিনি বেছে নেন মুরগী,মাছ,প্রোটিন শেক আর ডিম।

শর্করা হিসেবে গ্রহণ করেন লাল চালের ভাত, ওটস ও মিষ্টি আলু। স্বাস্থ্যকর ফ্যাটও খান তিনি। এজন্য বাদাম ও অলিভ থাকে তাঁর খাদ্যতালিকায়। হৃত্বিকের মিষ্টি খুব পছন্দ। কিন্তু ফিটনেসের কারণে ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত জাংক ফুড, ডুবো তেলে ভাজা খাবার আর মিষ্টি তিনি একেবারেই খান না।

ঘুমানোর দেড় ঘণ্টা আগে তিনি তাঁর খাওয়া শেষ করেন। ইনসুলিন রেসপন্সের জন্য অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার ও আনারস খেয়ে থাকেন এই সুপারফিট অভিনেতা। তিনি সপ্তাহে পাঁচ দিন শরীর চর্চা করেন। দুইদিন টানা ব্যায়ামের পর একদিন বিরতি দিয়ে আবার তিনদিন ব্যায়াম। তারপর আবার এক দিনের বিরতি। তিনি বলেন, রেস্টিং ডে বা বিশ্রামের দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এছাড়া হৃত্বিক ৪০-৫০ মিনিট ওয়েট এক্সারসাইজ করে থাকেন। এ সময় তিনি শরীরের যেসব অংশে জোর দেন সেগুলো হলো,ব্যাক এন্ড বাইসেপস (পিঠের পেছনে), চেস্ট এন্ড ট্রাইসেপস (পাঁজরের সামনের দিক), শোল্ডারস অ্যান্ড অ্যাবস (কাঁধ ও পেট)।

ফাইটার মুভির ট্রেইলর আর গানে তাঁর আকর্ষণীয় শারীরিক গড়ন আর এইট প্যাকের রহস্য আসলে কঠোর পরিশ্রম ও শৃঙ্খলাবদ্ধ খাদ্যাভ্যাস। এছাড়া হৃত্বিক রোশান রোজ ৪৫ মিনিট জগিং কিংবা সাঁতার রাখেন রোজকার রুটিনে।

ফিটনেস কোচ ক্রিস গেথিনের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যায়ামের রুটিন পরিবর্তন করে থাকেন তিনি । ক্রিস জানান, অনেক বেশি প্রোটিন খেলে তা ফ্যাট বাড়াতে পারে তাই এই বিষয়টা হৃত্বিকের ডায়েটে খুব সাবধানতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ফাইটার মুভির জন্য নিজেকে তৈরি করতে রোজ রাত ৯টায় ঘুমিয়ে যেতেন তিনি। মাত্র পাঁচ সপ্তাহের ব্যবধানে হৃত্বিক বানিয়েছেন এই অত্যন্ত আকর্ষণীয় পুরুষালি লুক। হৃতিক বলেন, এবার শুধু মুভির জন্য নয়, নিজের শরীরের কথা ভেবেই বদলেছি। আর সারা জীবন এই ভাবেই থাকতে চাই। হৃত্বিক খুবই পরিশ্রমী আর নিজের শরীরের প্রতি যত্নশীল। সেকারণেই পেয়েছেন তিনি অবিশ্বাস্য ফিটনেস এবং সবার জন্য হয়েছেন অনুসরণীয় একজন তারকা। ৪৮তম জন্মদিনে বলিউডের এই গ্রীক গডের জন্য রইলো শুভ কামনা ।

ছবি: হৃত্বিক রোশানের ইন্সটাগ্রাম ফ্যানপেইজ

প্রকাশ: ১০ জানুয়ারি ২০২৪, ০৩: ৪৫
বিজ্ঞাপন