ত্বকের যত্নের ব্যাপারে তাসনিয়া ফারিণ বেশ সচেতন। অবশ্য এ জন্য তিনি যে খুব কাঠখড় পোড়ান, ব্যাপারটা এমন নয়। তাঁর ত্বকের যত্নের রুটিন খুব সাদাসিধে। তাসনিয়া ফারিণের ত্বকের ধরন স্বাভাবিক। অর্থাৎ তাঁর ত্বক খুব তৈলাক্ত বা শুষ্ক নয়। এ ধরনের ত্বক বেশ ভারসাম্যপূর্ণ। স্বাভাবিক ত্বকের পোর ও রোমকূপ খুব ছোট হয়। এমন ত্বকে ব্রণ, সংবেদনশীলতা বা দাগ কম হয়। তাঁর ত্বকের যত্নের শুরুটা হয় ত্বক পরিষ্কার করার মাধ্যমে।
কাজের সুবাদে প্রতিদিনই তাঁকে প্রচুর মেকআপ করতে হয়। তাই ঘরে ফিরেই সবার আগে ত্বক পরিষ্কার করায় মনোনিবেশ করেন। স্বাভাবিক ত্বকে সংবেদনশীলতা বা ব্রণ হওয়ার আশঙ্কা কম থাকা সত্ত্বেও কাজটি খুব গুরুত্বসহকারে করেন তিনি, যার একমাত্র কারণ ত্বকের সুস্থতা ও স্বাভাবিকত্ব বজায় রাখা। ডার্মাটোলজিস্টদের করা অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে দীর্ঘ সময় ধরে ঠিকমতো ত্বক পরিষ্কার না করলে মারাত্মক ক্ষতি হয়। স্বাভাবিক ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক, এমনকি সংবেদনশীল হয়ে যাওয়ারও ঝুঁকি বাড়ে।
ত্বক পরিষ্কার করার পর মাত্র তিনটি ধাপে তাসনিয়া ফারিণ তাঁর ত্বকের যত্ন নেন। প্রথমে তিনি টোনার ব্যবহার করেন। মিনিমালিজমের এই যুগে অনেকে এই পণ্য ব্যবহার বন্ধ করলেও এর কিন্তু বেশ ভালো উপকারিতা রয়েছে। টোনার ত্বকের পিএইচ–এর মাত্রার ভারসাম্য ঠিক রাখে। এ ছাড়া ত্বকের উজ্জ্বলতা ও আর্দ্রতা বাড়ায়, রোমকূপ ছোট করে। অনেক সময় দেখা যায়, ত্বক পরিষ্কার করার পরও মেকআপ বা ধুলাবালুর কিছু অংশ রয়ে যায়। টোনার রোমকূপের মধ্য থেকে মেকআপের অবশিষ্টাংশ ও অন্যান্য ময়লা বের করতে সাহায্য করে।
টোনারের পর তাসনিয়া ফারিণ সিরাম ব্যবহার করেন। যাঁরা ত্বকের যত্নের ব্যাপারে বেশ সচেতন, তাঁরা জানেন যে ত্বকের সুস্থতার জন্য এর গুরুত্ব কতটা। সিরামকে বলা হয় ত্বকের ওষুধ। শরীরে রোগ হলে যেমন ওষুধ নিতে হয়, তেমনই ত্বকে কোনো সমস্যা দেখা দিলে এর সমাধান হিসেবে সিরাম ব্যবহার করার পরামর্শ দেন ডার্মাটোলজিস্টরা।
আবার সমস্যা না থাকলেও কেবল প্রতিরোধ করার জন্যও সিরাম ব্যবহার করা যায়। ত্বকের প্রতিটি সমস্যার জন্য আলাদা আলাদা সিরাম আছে। তাসনিয়া ফারিণ ব্যবহার করেন ড্রাঙ্ক এলিফ্যান্ট ভিটামিন সি সিরাম। এটি নাকি তাঁর সবচেয়ে পছন্দের ত্বকের যত্নের পণ্য। ড্রাঙ্ক এলিফ্যান্ট ভিটামিন সি সিরামের খ্যাতি বিশ্বজোড়া।
ডার্মাটোলজিস্টদের পছন্দের এই পণ্য এ জন্য পেয়েছে ‘কাল্ট ফেবারিট’ তকমা। এতে ভিটামিন সি ছাড়াও রয়েছে সেরা কিছু উপাদান যেমন ফার্মেন্ট কুমড়ার নির্যাস, আঙুরের নির্যাস, ধানের তুষের নির্যাস, চায়ের পাতার নির্যাস, ফেরুলিক অ্যাসিড ইত্যাদি। এই সিরাম ত্বকের মৃত কোষ দূর করার পাশাপাশি হাইড্রেট ও উজ্জ্বল করে। ত্বকের বয়সের লাগাম টেনে ধরার বেশ সুনাম রয়েছে এর।
তাসনিয়া ফারিণের রূপ-রুটিনের শেষ ধাপ হলো ময়েশ্চারাইজার। ময়েশ্চারাইজার ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে। ত্বকের সুস্থতায় এর জুড়ি মেলা ভার।
এবার তাসনিয়া ফারিণের মেকআপের কথায় আসা যাক। আগেই বলা হয়েছে কাজের সুবাদে তাঁকে ঘন ঘন মেকআপ করতে হয়। তবে ‘অফ ডিউটি’তে তিনি খুব একটা মেকআপ ব্যবহার করেন না। যতটা সম্ভব হালকা মেকআপ করেন। তাসনিয়া ফারিণের সবচেয়ে পছন্দের দুটি মেকআপ পণ্য হলো ব্লাশঅন ও লিপস্টিক।
মেকআপের ক্ষেত্রে তাঁর কোনো পছন্দের ব্র্যান্ড আছে কি না, জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমি নির্দিষ্ট কোনো ব্র্যান্ডের ভক্ত নই। মেকআপের ক্ষেত্রে আমি ড্রাগ স্টোর ও হাই-এন্ড—দুই ধরনের প্রোডাক্টই ব্যবহার করি। এর মধ্যে আছে এস্টে লডার, নারস, টার্টে, ফেন্ডি, এসেন্স, মেবেলিন ইত্যাদি।’
তাসনিয়া ফারিণ মেকআপ ব্যবহারের ক্ষেত্রেও বেশ সচেতন। তিনি সব সময় তাঁর ত্বকের ধরন ও আন্ডারটোন বা ত্বকের রং বুঝে মেকআপ পণ্য কিনে থাকেন। ভক্তদেরও তিনি এই কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, যেকোনো মেকআপ কেনার আগে অবশ্যই নিজের ত্বকের ধরন ও আন্ডারটোন জানার চেষ্টা করুন।
ছবি: তাসনিয়া ফারিণ–এর ইনস্টাগ্রাম