বলিউডের একসময়ের হার্টথ্রব ববি দেওল সাম্প্রতিক সময়ে নতুন করে সাড়া জাগাচ্ছিলেন ‘আশ্রম’–এর মতো ওয়েব সিরিজ দিয়ে। আর হালের সবচেয়ে আলোচিত মুভি ‘অ্যানিমেল’–এ তিনি ভাইরাল ‘জামাল কুদু’ গান আর অভিনয় দিয়ে যেন উঠে এলেন একেবারে শীর্ষে। সব জায়গায় এখন শুধুই লর্ড ববির জয়জয়কার।
একটা কথা পরিষ্কার হওয়া দরকার। এই যে সবাই ববি দেওলকে লর্ড ববি বলে সম্বোধন করছেন, এর শুরু কিন্তু ‘অ্যানিমেল’ সিনেমার টিজারের পর থেকে নয়, চলতি বছরের এপ্রিলে ‘অ্যানিমেল’ সিনেমার শুটিং সেট থেকে তাঁর শার্টবিহীন ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। নতুন এক ববির পেশিবহুল ফিগারের ছবি দেখে সবার তো চোখ কপালে ওঠার অবস্থা।
‘সোলজার’ আর ‘গুপ্ত’ ছবি দিয়ে মিলেনিয়ামের শুরুতে বলিউড মাতানো ববির নতুন অবতার দেখার পর ভক্তরা তাঁকে লর্ড ববি বলে ডাকা শুরু করেন। আর যখন ‘অ্যানিমেল’ সিনেমায় ‘জামাল কুদু’ গানের তালে তালে তাঁর এন্ট্রি হলো, তখন যেন তিনি রাতারাতি নেট দুনিয়ার নতুন সেনসেশনে পরিণত হয়ে গেলেন। শুধু কি তা–ই! মুগ্ধ করেছে তাঁর অভিনয়ও।
ববি দেওল থেকে লর্ড ববি হতে কিন্তু তাঁকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। প্রায় চার মাস কঠিন প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে এই অভিনেতাকে। এ সময় নিজেকে উজাড় করে দিয়েছিলেন ববি। আর তাঁর প্রশিক্ষক ছিলেন বলিউডের সেলিব্রিটি ফিটনেস ট্রেইনার প্রোজ্জ্বল শেঠী। বেশ কয়েকটি সাক্ষাৎকারে তিনি ববির প্রশিক্ষণের পেছনের গল্প তুলে ধরেন। তিনি বলেন, পরিচালক সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গা চেয়েছিলেন ববিকে রণবীরের চেয়ে বড় ও চওড়া দেখাতে, যেন নায়কের চেয়ে ভিলেনকে আরও ভয়াবহ দেখায়।
প্রোজ্জ্বল আরও জানান, তাঁদের প্রচেষ্টা এতই তীব্র ছিল যে ববির শরীরের চর্বি কমিয়ে ১২ শতাংশে নিয়ে এসেছিলেন। আর ওজন ৮৫ থেকে ৯০ কেজির মধ্যে ওঠানামা করত। এমন পেশিবহুল সুঠাম দেহ পেতে ববি প্রতিদিন সকাল–সন্ধ্যা ৪০ মিনিট করে হাই–ইনটেনসিটি কার্ডিও ব্যায়াম করতেন। পাশাপাশি তাঁর প্রশিক্ষণের অংশ ছিল এক ঘণ্টার ওয়েট ট্রেনিং। ববির ভয়ংকর সুন্দর সুঠাম দেহ পেতে শুধু ব্যায়াম নয়, মনোযোগ দিতে হয়েছিল ডায়েটের দিকেও।
প্রোজ্জ্বল এ সম্পর্কে বলেন, এখানে একটি মজার ব্যাপার হলো, ববি পাঞ্জাবি হওয়ার পরও খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারে খুব একটা উৎসাহী ছিলেন না। তবে তিনি মিষ্টি খেতে অনেক বেশি পছন্দ করতেন। অথচ টানা চার মাস তিনি কোনো মিষ্টি ছুঁয়েও দেখেননি। প্রোজ্জ্বলের এই কথা থেকেই বোঝা যায়, ববি তাঁর চরিত্র গড়ে তোলার ব্যাপারে কত বেশি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন।
ববির ডায়েট ছিল আমিষভিত্তিক। সকালে ঘুম থেকে উঠেই তিনি ডিম ও ওটমিল দিয়ে ব্রেকফাস্ট করতেন। দুপুরে খেতেন সামান্য ভাত ও মুরগির মাংস। সন্ধ্যার স্ন্যাকসের বদলে তাঁর ডায়েটে ছিল স্বাস্থ্যকর সালাদ। রাতের খাবার সাধারণত মাছ অথবা মাংসে সীমাবদ্ধ ছিল।
ছবি: ববি দেওলের ইন্সটাগ্রাম